কক্সবাজার প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৭ জুলাই ২০২৫, ১০:২৩ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

লঘুচাপে উত্তাল সাগর, কক্সবাজারে পর্যটকদের হোটেল বুকিং বাতিল

কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত। ছবি : কালবেলা
কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত। ছবি : কালবেলা

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে কক্সবাজারে টানা চার দিন ধরে বৃষ্টি ও সাগরে উত্তাল অবস্থা বিরাজ করছে। দিনভর মেঘলা আকাশ, কখনো মাঝারি কখনো মুষলধারে বৃষ্টি আর সমুদ্রের বিশাল ঢেউয়ে স্থবির হয়ে পড়েছে কক্সবাজারের স্বাভাবিক প্রাণচাঞ্চল্য। ফলে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত দেখতে আসা হাজার হাজার পর্যটক চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন।

সৈকতে নামা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠায় এবং টানা বৃষ্টিতে অনেকেই ঘরবন্দি থাকায় পর্যটকরা আগেই হোটেল বুকিং বাতিল করে ফিরে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। স্থানীয় ব্যবসায়ীরাও পড়েছেন ক্ষতির মুখে।

সোমবার পর্যটক ও হোটেল ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তিন দিনের ছুটি উপলক্ষে কক্সবাজারের হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট ও গেস্টহাউসগুলোর প্রায় ৯০ শতাংশ কক্ষ আগাম বুকিং করা ছিল। তবে বৈরী আবহাওয়ায় অনেক পর্যটকই বুকিং বাতিল করে ফিরে গেছেন।

কক্সবাজার হোটেল-রিসোর্ট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুকিম খান জানান, শহরের পাঁচ শতাধিক হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট ও গেস্টহাউসের অধিকাংশ কক্ষ এখন ফাঁকা। দুপুরের মধ্যেই বড় একটি অংশের পর্যটক শহর ছেড়ে চলে গেছেন।

আবহাওয়া অধিদপ্তর কক্সবাজারসহ দেশের ৪টি সমুদ্রবন্দরে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত জারি রেখেছে। পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ৯ জুলাই পর্যন্ত এ অঞ্চলে ভারি থেকে অতি ভারি বৃষ্টি হতে পারে, যা পার্বত্য এলাকায় পাহাড়ধসের আশঙ্কা তৈরি করেছে।

টানা বৃষ্টিতে কক্সবাজার শহরের বিভিন্ন এলাকা ও জেলার ৯ উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। সড়কে পানি ওঠায় যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। উখিয়ার রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতেও দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা।

কক্সবাজার আবহাওয়া কার্যালয়ের সহকারী আবহাওয়াবিদ আবদুল হান্নান জানান, সোমবার দুপুর ৩টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ১৫৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

উখিয়ার ইউএনও মোহাম্মদ কামরুল হোসেন চৌধুরী বলেন, টানা বৃষ্টিতে উপজেলার নিম্নাঞ্চল ও পাহাড়ের পাদদেশে থাকা রোহিঙ্গা শিবিরগুলো প্লাবিত হয়েছে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা এ টি এম কাউছার আহমদ জানিয়েছেন, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার তালিকা প্রস্তুত করতে জনপ্রতিনিধিদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান জানান, রোহিঙ্গা শিবিরের নিচু এলাকায় বসবাসকারী অনেকের শেড পানির নিচে তলিয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় সংশ্লিষ্ট সংস্থা ও শিবির ইনচার্জদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সি-সেফ লাইফগার্ডের সুপারভাইজার সাইফুল্লাহ সিফাত বলেন, কয়েক দিন ধরে সাগর উত্তাল থাকায় সৈকতের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলো লাল নিশানা দিয়ে চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে অনেক পর্যটক সতর্কবার্তা অমান্য করে সাগরে নেমে যাচ্ছেন।

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন জানান, পর্যটকদের সতর্ক করতে সৈকতের ঝুঁকিপূর্ণ অংশগুলোতে লাল নিশানা টাঙানো হয়েছে। অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা এড়াতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

খালেদা জিয়ার কন্ঠ নকল করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়েছে একটি চক্র

৮ জুলাই / সারাদেশে ৬৫ সদস্যের সমন্বয়ক কমিটি গঠন, দাবি আদায়ে সরকারকে ৩ দিনের আলটিমেটাম

ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি গ্রেপ্তার

চাঁদার টাকাসহ ছাত্রদল নেতা গ্রেপ্তার, অতঃপর...

না ফেরার দেশে ঢাবি শিক্ষার্থী আহসান

জবি ছাত্রশিবিরের নতুন সভাপতি রিয়াজুল, সেক্রেটারি আরিফ 

মিরপুরে আ.লীগের ফ্যাসিস্ট বলে ২০ লাখ টাকা দাবি, গ্রেপ্তার ৪

যুক্তরাষ্ট্রসহ ৮ দেশে ভোটার নিবন্ধন কার্যক্রম হাতে নিচ্ছে ইসি

৪০০’র দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে কেন থেমে গেলেন মুল্ডার?

নড়াইলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একজন বহিষ্কার

১০

এ. কে. আজাদকে হুমকির মামলায় বিএনপি নেতা গ্রেপ্তার

১১

৫ বছর পর খুবির সেই দুই শিক্ষার্থীর মুক্তি

১২

ঢাবি ছাত্রদলের ১২ নেতাকে অব্যাহতি

১৩

বাংলাদেশে প্রচলিত আইনেই নির্বাচন হবে : মির্জা আব্বাস

১৪

নওগাঁয় বিএনপি নেতার ১০ হাজার বৃক্ষরোপণ

১৫

চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের সাবেক সচিব নারায়ণ সাময়িক বরখাস্ত

১৬

গাজীপুরে কবর থেকে কঙ্কাল চুরি

১৭

পুতিন বরখাস্ত করার পরই মন্ত্রীর ‘আত্মহত্যা’

১৮

শ্রীমঙ্গলে চা বাগান থেকে কলেজছাত্রের মরদেহ উদ্ধার

১৯

সাবেক মেয়র লিটনের ‘কথিত পুত্র’ ডনের ব্যবসা বাঁচাতে ছাত্রদল নেতাকে নিয়োগ!

২০
X