কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১০ জুলাই ২০২৫, ০২:১৩ পিএম
আপডেট : ১০ জুলাই ২০২৫, ০৩:১০ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
পুশ ইন-পুশ ব্যাক

নিয়মতান্ত্রিকভাবে হস্তান্তরের আহ্বান শুনছে না বিএসএফ : বিজিবি মহাপরিচালক

সাতকানিয়ায় বিজিবির ১০৩তম রিক্রুট ব্যাচের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজে কথা বলেন মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী। ছবি : কালবেলা
সাতকানিয়ায় বিজিবির ১০৩তম রিক্রুট ব্যাচের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজে কথা বলেন মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী। ছবি : কালবেলা

মাঝে মধ্যে দুই এক দিন বন্ধ থাকলেও থেমে নেই পুশ ইন ও পুশ ব্যাক। এসব মানুষদের নিয়মতান্ত্রীকভাবে হস্তান্তরের আহবান করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি), তবে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীবাহিনী (বিএসএফ) এই আহবানে সারা দিচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী।

তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমরা আমাদের পক্ষ থেকে বিএসএফের কাছে প্রতিনিয়ত কড়া প্রতিবাদ জানিয়ে আসছি। আমরা বলেছিলাম নিয়মমাফিকভাবে হ্যান্ডওভার করতে। যদি আমাদের কেউ বাংলাদেশি অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশ করে থাকে তাহলে আমরা বিএসএফকে বুঝিয়ে মিটিংয়ের মাধ্যমে সমঝোতা করে তাদেরকে ফিরিয়ে আনা নিশ্চিত করেছি। কিন্তু কিছু কিছু জায়গায় তারা আমাদের কাছে অফিসিয়ালি হ্যান্ডওভার করছে। কিন্তু সর্বক্ষেত্রে বিএসএফ শুনছে না। কিছু কিছু জায়গায় পুশব্যাক বা পুশ ইন এখনো চলছে।

বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) দুপুরে চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার বায়তুল ইজ্জতে অবস্থিত বিজিবির ঐতিহ্যবাহী প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান বর্ডার গার্ড ট্রেনিং সেন্টার এন্ড কলেজ (বিজিটিসিএন্ডসি)-এর বীর উত্তম মজিবুর রহমান প্যারেড গ্রাউন্ডে বিজিবির ১০৩তম রিক্রুট ব্যাচের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন বিজিবি মহাপরিচালক। সেখানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।

এ সময় বিজিটিসিএন্ডসি’র কমান্ড্যান্ট ব্রিগেডিয়ার জেনারেল গাজী নাহিদুজ্জামানসহ অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, আমরা বিএসএফকে বলার পাশাপাশি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে একাধিকবার ভারতীয় হাই কমিশনে একাধিকবার লেখা হয়েছে। বাংলাদেশ দূতাবাসেও লেখা হয়েছে। বাংলাদেশে ভারতীয় দূতাবাসের হাইকমিশনারের সঙ্গে আমি যোগাযোগ রাখছি। আমরা এটা প্রতিহত করার চেষ্টা করছি। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই যারা আসছেন, তারা বাংলাদেশি। তবে তারা আগে ভারতে গিয়েছিল।

ভারতে আশ্রিত রোহিঙ্গাদেরও বাংলাদেশি নাগরিক বলে পুশ ব্যাক করা হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, শুধু বাংলাদেশিকেই পুশব্যাক করানো হচ্ছে না, কিছু কিছু ক্ষেত্রে ভারতীয় নাগরিককে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে, কিছু কিছু রোহিঙ্গা নাগরিককেও পাঠিয়ে দিচ্ছে, যা মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল হয়ে যাচ্ছে বলে কঠোর প্রতিবাদ করেছি। জাতীয় আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের সংক্রান্ত খবর প্রকাশিত হয়েছে।

এক প্রশ্নের জবাবে বিজিবি ডিজি বলেন, জনবলের সংকট রয়েছে। এটা আপেক্ষিক একটা বিষয়। আমাদের জনবল সব মিলে প্রায় ৫৭ হাজার। আমাদের ৪৪২৭ কিলোমিটারের অত্যন্ত দীর্ঘ বর্ডার। বিভিন্ন ধরনের প্রতিকূল ভূমিও আছে। সে তুলনায় জনবল আমাদের আরও বাড়ানো প্রয়োজন। জনবল বাড়ানোর প্রক্রিয়া কিন্তু চলছে।

তিনি আরও বলেন, কিছুদিন আগে কিন্তু উখিয়াতে একটা ব্যাটালিয়ন প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। আরও বিভিন্ন জায়গায় কিছু ব্যাটালিয়ন চালু করার প্রক্রিয়া চলছে। নতুন নতুন বিওপি বাড়ানো হচ্ছে। অচিরেই আরও ৫ হাজারের মতো জনবল বৃদ্ধির আশ্বাস আমাদেরকে দিয়েছে বর্তমান সরকার। অচিরেই আমরা হয়তো এই রিক্রুটমেন্ট এবং ট্রেনিং শেষ করে, বর্ডারে অন্যান্য কার্যক্রমসহ আসন্ন যে জাতীয় নির্বাচন সেখানেও কাজে লাগাতে পারব। গতকালই প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আমাদের এ সংক্রান্ত বিষয়ে বৈঠক হয়েছে। এ ব্যাপারে পর্যাপ্ত আলোচনা হয়েছে। শুধু বিজিবি না অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ও জনবলসহ অন্যান্য সংকট দূরকরণে সিদ্ধান্ত হয়েছে।

জাতীয় নির্বাচন সম্পন্নে প্রস্তুতি চলছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আপনাদের কোনো প্রস্তুতি বা নির্দেশনা রয়েছে কি না? নির্বাচনকালীন বর্ডার সিকিউরিটির বিষয়ও থাকে। এসব বিষয়ে জানতে চাইলে বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, সীমান্ত রক্ষা বা নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পরই বাকি জনবলগুলো আমরা সুষ্ঠু-সুন্দর ফেয়ার জাতীয় নির্বাচনের জন্য যে সাপোর্টটুকু দেওয়া দরকার তা যেন দিতে পারি।

তিনি বলেন, সীমান্তের ৮ কিলোমিটার এলাকায় ভোট কেন্দ্রগুলোর নিরাপত্তা ও সুষ্ঠু ভোটগ্রহণে বিজিবি স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে নিয়োজিত হবার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে ভবিষ্যতে এটা নির্বাচন কমিশন বা সরকার যেভাবে দায়িত্ব দেয় আমরা সেভাবে কাজ করব। এ ব্যাপারে নির্বাচন কেন্দ্রে, বা ভোট কেন্দ্রে যদি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি ভয় বা জন জীবনের নিরাপত্তা হানি ঘটে সেজন্য শুধু বিজিবি নয়, পুলিশ-আনসার, কোস্ট গার্ডসহ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সকল বাহিনীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সকলকে বাহিনীকে নিয়েই স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার উপস্থিতিতে প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

মাংসপেশিতে চোট জাকেরের

জবিতে ছাত্রদলের হামলার প্রতিবাদে ৩ দাবিতে বিক্ষোভ

সংবাদ সম্মেলনে ঐক্য পরিষদ / দেশে ৩৩০ দিনে সংখ্যালঘুদের ওপর সহিংসতার ঘটনা আড়াই হাজার

বগুড়ায় আ.লীগ নেতার কারাদণ্ড

ফিরেই ঝলক, সাকিবের ব্যাটে দুর্দান্ত ফিফটি

রংপুর ইপিজেড বাস্তবায়ন নিয়ে পাল্টাপাল্টি সমাবেশ

গায়েবি মামলার আতঙ্কে ২০ গ্রামের মানুষ

পিআর পদ্ধতি নিয়ে মুখোমুখি অবস্থান উদ্বেগজনক : মামুনুল হক

সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে মিলল ফায়ার সার্ভিসের গাভি

চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরেছেন আ স ম রব

১০

মহড়া চলাকালে মালয়েশিয়ায় পুলিশের হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত

১১

কেন্দ্রের ভুলে এসএসসিতে কাটা গেল ২৫ নম্বর!

১২

আগামী দিনেও যেকোনো সমস্যায় কাজ করবে বৈছাআ : এসএম সুইট

১৩

প্রস্তাবিত বগুড়া সিটির সঙ্গে ৬ ইউনিয়ন অন্তর্ভুক্তির চিন্তা

১৪

নিশাঙ্কা-মেন্ডিসের তাণ্ডবে শ্রীলঙ্কার দাপুটে জয়

১৫

বোরকা পরে স্ত্রীকে তুলে নিয়ে নির্যাতন

১৬

টাস্কফোর্সের অভিযানে ৩ হাজার কেজি পলিথিন জব্দ

১৭

সাভারে একদিনে ১ লাখ গাছের চারা রোপণের উদ্যোগ

১৮

ভাঙা পা নিয়ে বিজয় মিছিলে যান জুলাই যোদ্ধা ফখরুল

১৯

এনবিআরের প্রথম সচিব তানজিনা বরখাস্ত

২০
X