এক নিঃশ্বাসে বলা যায়— এ যেন রক্ত আর আর্তনাদে ঢেকে যাওয়া এক প্রহর। ভালোবাসা প্রত্যাখ্যাত হওয়ার জেরে এমন বর্বরতা— বগুড়ার ইসলামপুর হরিগাড়ী এলাকায় ঘটে যাওয়া হত্যাকাণ্ড দেশজুড়ে চরম উদ্বেগ ও আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে।
প্রেম ও বিয়ের প্রস্তাব ফিরিয়ে দেওয়ায় বুধবার রাতে ঘরে ঢুকে দাদি শাশুড়ি লাইলী বেওয়া (৮৩) এবং নাতবউ হাবিবা ইয়াসমিনকে (২১) গলা কেটে হত্যা করে সৈকত হাসান। একই ঘটনায় ছুরিকাহত হয়ে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে স্কুলছাত্রী বন্যা আক্তার (১৬)।
স্থানীয়রা জানান, অভিযুক্ত সৈকত দীর্ঘদিন ধরে বন্যাকে উত্ত্যক্ত করত। সে বিয়ের প্রস্তাব দিলে পরিবার তা প্রত্যাখ্যান করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বুধবার রাতে সাত-আটজন দুর্বৃত্ত নিয়ে সৈকত ঘরে ঢুকে প্রথমে হাবিবাকে, পরে বৃদ্ধা লাইলীকে গলা কেটে হত্যা করে। বন্যা বাধা দিতে গেলে তার পেটে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায় তারা।
আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে পুরো মহল্লায়। চিৎকার শুনে স্থানীয়রা ছুটে এসে রক্তাক্ত অবস্থায় তিনজনকে উদ্ধার করে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে লাইলী ও হাবিবাকে মৃত ঘোষণা করা হয়। বন্যা এখনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) ভোরে খান্দার এলাকা থেকে সৈকতকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ।
সে প্রাথমিক জবানবন্দিতে হত্যার দায় স্বীকার করেছে। পুলিশ জানায়, হত্যায় ব্যবহৃত ধারালো অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান চলছে।
এ ঘটনা সমাজে প্রেমের নামে বিকৃত মানসিকতার প্রতিফলন। ঘরে ঢুকে নারীদের ওপর এমন নির্মম হামলা শুধু ব্যক্তিগত প্রতিশোধ নয়, বরং নারীর নিরাপত্তা ও সামাজিক শৃঙ্খলার ওপর ভয়াবহ আঘাত। এলাকাজুড়ে এখন শোক আর ভীতির ছায়া।
বগুড়া সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তফা মঞ্জুর কালবেলাকে জানান, ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। এরই মধ্যে প্রধান অভিযুক্ত সৈকতকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আহত বন্যা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পুলিশ ঘটনা তদন্ত করে দেখছে।
মন্তব্য করুন