বুধবার, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৯ ভাদ্র ১৪৩২
সাইফুল ইসলাম রয়েল, কলাপাড়া (পটুয়াখালী)
প্রকাশ : ১৯ জুলাই ২০২৫, ০৯:৫৪ এএম
অনলাইন সংস্করণ

‘ইলিশের দাম শুনেই গলা শুকিয়ে আসে’

ভরা মৌসুমেও ইলিশে হাত লাগাতে পারছেন না ক্রেতারা। ছবি : কালবেলা
ভরা মৌসুমেও ইলিশে হাত লাগাতে পারছেন না ক্রেতারা। ছবি : কালবেলা

খাবারের তালিকায় ইলিশের স্বাদ নিতে চায় না এমন মানুষের জুড়ি মেলানো ভার। প্রায় সব বয়সী মানুষই কম করে হলেও ইলিশ পছন্দ করেন। এমনকি বাংলার ঐতিহ্যের সঙ্গে পান্তা ইলিশের রয়েছে আদিম সম্পর্ক। কদিন আগেও যেন ইলিশ ভাজা তেলে কব্জি ডুবিয়ে খেতে পেরেছে ধনী, থেকে মধ্যবিত্তসহ নিম্ন আয়ের মানুষ। কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় এখন সেই হরহামেশাই পছন্দের ইলিশ যেন সোনার হরিণ।

সম্প্রতি সময়ে ভরা মৌসুমেও সুস্বাদু খাদ্য তালিকার শীর্ষে থাকা ইলিশে হাত লাগাতে পারছেন না ক্রেতারা। শুধু নিম্ন আয়ের মানুষই নয়, এখন এই মাছে দাম হাঁকাতে ভয় পাচ্ছেন সব শ্রেণির ভোক্তারা। মাছ ব্যবসায়ীরাও বলছেন, দিনভর ইলিশের গন্ধ শুকলেও পরিবার নিয়ে খেতে পারছেন না তারা।

সাধারণ মানুষ বলছে, ক্রয় ক্ষমতার এতটাই বাহিরে ইলিশ, যা কিনতে হলে গুনতে হবে প্রায় এক মাসের কাঁচাবাজার খরচের টাকা। তাই সাধ থাকলেও ইলিশ কেনার সাধ্য নেই অধিকাংশ ক্রেতাদের। তারা বলছেন, পটুয়াখালীর মহিপুর, আলীপুর মৎস্য বন্দরে ইলিশ রপ্তানির বৃহৎ হাট থাকলেও নাগালের বাইরে কেন ইলিশের দাম।

কলাপাড়া পৌর শহরের মাছ বাজারে সরেজমিন ঘুরে কথা হয় নিত্যবাজার করতে আসা ভ্যানচালক সুমনের সঙ্গে। জানালেন গত কয়েকদিন পরিবার, পরিজন ইলিশ কিনে নিতে তাগিদ দিয়ে আসছে। কিন্তু বাজারে ঢুকে দাম শুনেই গলা শুকিয়ে আসে। ছোট জাটকা ইলিশের দামও ৭০০-৮০০ টাকা। আর কেজি ইলিশ ২৮০০ টাকার উপরে। তাই ফাইশ্যা মাছ কিনে বাড়ি ফিরছি।

তিনি বলেন, ‘এখন তো সিজন, ইলিশ কম দামে পাওয়ার কথা। কিন্তু আমাগো মতো গরিবের এখন ইলিশ খাওয়ার চেষ্টা পাগলামি।’

একই হাঁটে মাছ কিনতে আসা ইমারত নির্মাণ কারিগর রাছেল বলেন, ‘প্রায় আধাঘণ্টা ধরে ঘুরছি কিন্তু ইলিশ কিনতে পারিনি। দাম চায় অনেক।’ বাবা-মায়ের পছন্দের ইলিশ কেনা সাধ্যে কুলায় না তার। অপর ক্রেতা তুষার বলেন, ‘গত বছরের তুলনায় এ বছর ইলিশের দাম আকাশছোঁয়া। এক কেজির মাছের দাম তিন হাজার টাকা। আমি কেন, কোনো সাধারণ মানুষের পক্ষেই কিনে খাওয়া সম্ভব নয়।’

মাছ ব্যবসায়ী রজ্জব জানান, তিনি নিজে ইলিশ বিক্রি করলেও এ বছর নিজ পরিবারের জন্য ঘরে নিতে পারেননি। একটা বড় ইলিশ কিনে পরিবারকে খাওয়াতে হলে চালান টাকায় ঘাটতি পড়বে।

স্থানীয় মাছ ব্যবসায়ীরা জানান, গোটা উপকূলীয় এলাকায় প্রকার ভেদে জাটকা আকৃতির ইলিশের দামও প্রায় হাজার খানেক টাকা। আর মাঝারি ১৪০০ থেকে ১৭০০। আর বড় আকৃতির ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২৮০০ টাকা পর্যন্ত। এতে ইলিশ ছোঁয়ার স্বপ্ন অধরাই থাকছে সিংহভাগ মানুষের।

সাধারণ মানুষের অভিযোগ, সরকারিভাবে ইলিশের দাম বেঁধে না দেওয়ায় এমন লাগামহীন দাম হাঁকাচ্ছে ব্যবসায়ীরা।

মৎস্য বিভাগ বলছে, গত দুই সপ্তাহে দক্ষিণের আড়তগুলোতে প্রায় ১৩০ টন রুপালি ইলিশ সমুদ্র থেকে আহরণ করেছেন জেলেরা।

তবে বৈরী আবহাওয়ায় ভরা মৌসুমে মাছ ধরতে না পাড়া এবং চাহিদানুযায়ী সরবরাহ কম থাকায় দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে জানান কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা। এ ছাড়া সরকারিভাবে ইলিশের দাম বেঁধে দেওয়ার বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে বলে জানান তিনি।

এদিকে বাজার মনিটরিং ব্যবস্থার বিষয়ে জানতে কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মোবাইল নম্বরে কল করলেও তিনি সাড়া দেয়নি।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চেয়েছেন সাবেক আইজিপি মামুন

ভারতের স্পন্সর হতে যেসব শর্ত পূরণ করতে হবে আগ্রহী প্রতিষ্ঠানকে

বিগ ব্যাশে খেলবেন অশ্বিন!

মার্করামের ঝড়ে হেডিংলিতে উড়ে গেল ইংল্যান্ড

শারজায় পাকিস্তানের বিপক্ষে আফগানদের জয়

সাবেক আইজিপি ক্ষমা পাবেন কি, যা বললেন চিফ প্রসিকিউটর

সাভারে খাল উদ্ধারে নেমেছে প্রশাসন

উমামার প্যানেলের ইশতেহার ঘোষণা

নির্বাচন শান্তিপূর্ণ করতে দরকারি সব পদক্ষেপ নিচ্ছে সরকার: প্রেস সচিব

রাজশাহীতে বিএনপির দুগ্রুপের সংঘর্ষ, ১৪৪ ধারা জারি

১০

৩২ বছর শিক্ষকতা শেষে রাজকীয় বিদায় শিক্ষকের

১১

সাতক্ষীরায় মেয়াদোত্তীর্ণ মোটরযানের বিরুদ্ধে অভিযান

১২

জাগপা সভাপতি খন্দকার লুৎফরের শারীরিক অবস্থার উন্নতি

১৩

আগামী পাঁচদিন যেসব এলাকায় হতে পারে ভারী বৃষ্টি 

১৪

জীবন সংগ্রামী শতবর্ষী বৃদ্ধার পাশে দাঁড়ালেন নারায়ণগঞ্জের ডিসি

১৫

নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতেই, অন্য দেশের থাবার সুযোগ যেন না থাকে : প্রধান উপদেষ্টা

১৬

নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করতে ষড়যন্ত্র চলছে : নার্গিস বেগম

১৭

হঠাৎ তেঁতুলিয়ার আকাশে ভেসে উঠল কাঞ্চনজঙ্ঘা!

১৮

শিবিরের বিরুদ্ধে ‘সিন্ডিকেটেড প্রোপাগান্ডা’ চালানো হচ্ছে : সাদিক কায়েম

১৯

২৩২টি বিচারিক পদ সৃজনের সিদ্ধান্ত

২০
X