সাভারের আলোচিত কিডনিকাণ্ডে এবার মুখ খুলেছেন উম্মে সাহেদীনা টুনির স্বামী মো. তারেক। তারেকের অভিযোগ, স্ত্রী টুনি পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ার পর থেকেই তার সংসারে অশান্তি শুরু হয়। এমনকি কিডনি দেওয়ার বিনিময়ে তারেককে বাড়ির দ্বিতীয় তলা ও এক শতাংশ জমি লিখে দিতে বাধ্য করেন টুনি।
তারেক কালবেলাকে জানান, মালয়েশিয়া প্রবাসী জীবন শেষে দেশে ফিরে সাভারের কলমা এলাকায় স্থায়ী হন তিনি। ঘটকের মাধ্যমে টুনির সঙ্গে পরিচয় হয়। ২০০৬ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের বিয়ে হয়। সুখেই চলছিল সংসার। কিন্তু দুই বছর না যেতেই তারেকের কিডনি রোগ ধরা পড়ে।
ভারতে চিকিৎসা নিতে গেলে কিডনি প্রতিস্থাপনের পরামর্শ দেন চিকিৎসক। অর্থাভাবের সময়ে স্ত্রী টুনি কিডনি দিতে রাজি হলেও শর্ত দেন— বাড়ির দ্বিতীয় তলার মালিকানা ও এক শতাংশ জমি লিখে দিতে হবে। তারেক তাতে রাজি হন। কিডনি প্রতিস্থাপনের পরেও পুরোপুরি সুস্থ হননি তিনি। উচ্চক্ষমতার ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় শারীরিক সক্ষমতা কমে যায়।
এরই মধ্যে টুনির টিকটকে আসক্তি বাড়ে। তারেকের দাবি, টিকটক জগতের সঙ্গেই টুনির চরিত্রের পরিবর্তন আসে। একদিন বাড়ির এক ভাড়াটিয়ার সঙ্গে স্ত্রীর আপত্তিকর অবস্থায় হাতেনাতে ধরে ফেলেন তিনি। উত্তেজিত হয়ে টুনিকে দুটি চড় দিলে সেই ঘটনা থেকে শুরু হয় তার দুর্দশা।
তারেক বলেন, সেদিনের পর থেকে আমার বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন ও যৌতুকের মামলা হয়। জেলেও যেতে হয়। অসুস্থ শরীরে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে দেখি, টুনি আমার বিরুদ্ধে অনলাইন জুয়া আর পরকীয়ার গল্প সাজিয়েছে। অথচ আমি শারীরিকভাবেই অক্ষম। পরকীয়া করব কীভাবে?
বাড়ির সাবেক ভাড়াটিয়া মো. হৃদয় খান বলেন, তারেক যা বলেছেন, সব সত্যি। টুনির চরিত্রের ব্যাপার আগে থেকেই জানতাম।
বর্তমানে নিজের বাড়ি ছেড়ে ভাইয়ের বাসায় রয়েছেন তারেক। তার অভিযোগ, বাড়ির ভাড়া টুনি নিচ্ছে, আর আমি চিকিৎসার খরচের জন্য হাহাকার করছি। বিচ্ছেদও হয়নি। অথচ এই অবস্থায় টুনির এমন আচরণ অমানবিক। আমি বাড়ির ভাড়ার অংশ চাই, যেন চিকিৎসা চালিয়ে যেতে পারি।
প্রসঙ্গত, এর আগে টুনি অভিযোগ করেছিলেন, কিডনি দেওয়ার পর স্বামী তারেক পরকীয়া ও অনলাইন জুয়ার সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। তাকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেন। তবে এবার সম্পূর্ণ বিপরীত অভিযোগ সামনে আনলেন তারেক।
তারেক বলেন, পরকীয়া প্রেমিকদের মধ্যে রয়েছে, থাইল্যান্ড প্রবাসী এক যুবক, আমার খুব কাছের এক বন্ধু, আমার বাড়ির ভাড়াটিয়া এবং একজন গার্মেন্টস মালিক। এই নিয়ে সাভারে আলোচিত এই কিডনি কাণ্ডে নতুন করে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে টুনি কালবেলাকে বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সত্যি নয়।
মন্তব্য করুন