বড় হয়ে চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন দেখত শিশু সায়মা। এজন্য চাকরিজীবী বাবা তার মেয়েকে ভর্তি করেন উত্তরার মাইলস্টোন স্কুলে। কিন্তু বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় আগুনে পুড়ে থেমে গেছে সেই স্বপ্ন। একমাত্র মেয়েকে হারিয়ে ভেঙে পড়ছেন নিহতের বাবা, মা ও স্বজনরা।
নিহতের স্বজন ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের বিপ্রবর্থা এলাকার বাসিন্দা শাহ আলম। একটি বেসরকারি কোম্পানিতে মার্কেটিং ম্যানেজার হিসেবে চাকরির সুবাদে থাকতেন রাজধানীর উত্তরায়। মেয়ের চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন পূরণে ভর্তি করেন মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে।
গত তিন বছর সব কিছুই চলছিল স্বাভাবিক। কিন্তু সোমবার বিমান বিধ্বস্ত হলে অন্ধকার নেমে আসে শাহ আলমের পরিবারে। বিমানের লেলিহান আগুনে মুহূর্তে পুড়ে ছাই হয়ে যায় তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী সায়মার চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন।
নিহতের বাবা শাহ আলম জানান, রোববার রাতে মেয়ে তার বুকে এসে তাকে চুমু খায়। সোমবার সকালে ঘুমের মধ্যে মেয়েকে রেখে অফিসের কাজে বরিশাল যান তিনি। এরপর মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার খবর পান। পরে ঘটনাস্থলে গিয়ে দিনভর মেয়েকে খুঁজেছেন। রাতে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের মর্গে পাওয়া যায় সায়মা ছোট্ট মরদেহ। এ সময় ছেলে সাব্বির তার বোনের মরদেহ শনাক্ত করেন।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, আমার মেয়ের স্বপ্ন ছিল সে ডাক্তার হবে। এখন তো সব শেষ। এজন্য আমি কাউকে দায়ী করি না, আমার কপালে নেই।
মঙ্গলবার (২২ জুলাই) সকালে লাশবাহী গাড়িতে সায়মার নিথর মৃতদেহ পৌঁছে গাজীপুরের বিপ্রবর্থা এলাকায়। এ সময় পুরো এলাকায় সৃষ্টি হয় শোকাবহ পরিবেশ। পরিবারকে সান্ত্বনা দিতে ভিড় করছেন স্বজন ও প্রতিবেশীরা। কান্নায় ভেঙে পড়েন নিহতের স্বজনরা। পরে বেলা ১১টায় জানাজা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন