আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের দাবি জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হওয়া উচিত বলে আমরা মনে করি। তবে এর আগে অবশ্যই বেসিক সংস্কার ও গণহত্যার বিচার দৃশ্যমান করতে হবে। দু-চারজন বড় অপরাধীর বিচার হলে জাতি বুঝতে পারবে বিচার শুরু হয়েছে। বাকি কাজগুলো পরে যারা নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় আসবেন, তারা অব্যাহত রাখবেন।
বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) সন্ধ্যায় সিলেট জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে মহানগর জামায়াতে ইসলামীর আয়োজনে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের স্মরণে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জামায়াত আমির এ কথা বলেন।
এসময় শফিকুর রহমান বলেন, মানবতা মরে যায়নি, এখনো বেঁচে আছে। যারা শহীদ হয়েছেন তাদের ৭০ শতাংশই খেটে-খাওয়া মানুষ। দল হিসেবে আমরা তাদের কাছে কৃতজ্ঞ। আমরা শহীদ পরিবারকে বলেছি, আপনারা সুখের সময় স্মরণ না করলেও চলবে; যে কোনো প্রয়োজনে আমাদের বলবেন, জামায়াত আপনাদের পাশে থাকবে। তিনি বলেন, শহীদ পরিবারের স্বপ্ন পূরণে কাজ করছে জামায়াত। আমরা বড় একটি কাজ হাতে নিয়েছি। শহীদদের তালিকা নির্ভুলভাবে তৈরি করা। দুটি ভলিউম এরই মধ্যে বের হয়েছে। আমরা আহতদেরও ডাটাবেজ তৈরি করছি।
শহীদ ও আহতদের যথাযথ সম্মান প্রদান করার দাবি জানিয়ে জামায়াত আমির বলেন, তারা জীবনের চাহিদা ছাড়া জাতিকে মুক্তি দিয়েছে, রাষ্ট্রের ট্রেজারির কেন তাদের দিকে নজর নেই। আমরা ক্ষমতায় গেলে শহীদ ও আহতদের যথাযথ সম্মান ও আর্থিক সহযোগিতা করব।
আগামী নির্বাচন নিয়ে মানুষের অনেক প্রত্যাশা জানিয়ে শফিকুর রহমান বলেন, গত তিনটি নির্বাচনে মানুষ তাদের অধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি। আমরা আশা করি, আগামী বছরের প্রথম দিকে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
চাঁদাবাজি ও সিন্ডিকেট যারা করে তারা ভিক্ষুকের চেয়েও খারাপ বলে মন্তব্য করেন জামায়াত আমির। তিনি বলেন, ভিক্ষা করা হালাল। যদি পেটের অবস্থা এমন হয় তাহলে আপনি ভিক্ষা করেন। কেন সিন্ডিকেট করবেন। কেন চাঁদাবাজি করবেন। আমি কোনো দলকে বলছি না। এ রকম চরিত্র যাদের আমি তাদের বলছি। তবে তিনি যদি কোনো দলের নেতা বা কর্মী হন তাহলে আমার কিছু করার নেই।
শফিকুর রহমান বলেন, একটা যুদ্ধ করেছি ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে। এবার একটা যুদ্ধ করব দুর্নীতির বিরুদ্ধে। এই যুদ্ধে বাংলাদেশের মানুষের বিজয় হবে। রাষ্ট্রের প্রতিটি সেক্টর তছনছ করে দেওয়া হয়েছে। সব জায়গায় সিন্ডিকেট। সিন্ডিকেটের কবলে পড়ে সাধারণ মানুষের জীবন অসহায় হয়ে পড়েছে। দ্রব্যমূল্যের সিন্ডিকেট বন্ধ হয়ে গেলে জিনিসপত্রের দাম ৪০ শতাংশ কমে যাবে।
তিনি বলেন, আমরা জুলাই আন্দোলনের কাউকে মাস্টারমাইন্ড বলি না। কাউকে মাস্টারমাইন্ড বললে অন্যদের আন্ডারমাইন করা হয়। আমি সবসময় এই কৃতিত্ব শহীদ ও আহতদের দিই।
সিলেট মহানগর জামায়াতের আমির মুহাম্মদ ফখরুল ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের ও সেক্রেটারি শাহজাহান আলী। আরও বক্তব্য দেন সিলেট জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা হাবিবুর রহমান, সিলেট মহানগর জামায়াতের নায়েবে আমির ড. নূরুল ইসলাম বাবুল, সিলেট জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি জয়নাল আবেদীন, হবিগঞ্জ জেলা জামায়াতের আমির কাজী মখলিছুর রহমানসহ জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারের সদস্যরা।
মন্তব্য করুন