ফেনীর পরশুরামে সিলোনিয়া নদীর বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ নির্মাণের কাজ ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) বাধায় আটকে আছে। বাঁধ মেরামত করতে না পারায় বাঁধের ভাঙা অংশ দিয়ে লোকালয় পানি ঢুকে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা করেছে স্থানীয়রা। এ বেড়িবাঁধটি স্থানীয়রা চলাচলের রাস্তা হিসেবেও ব্যবহার করে থাকেন।
জানা গেছে, গত ৮ জুলাই টানা বৃষ্টি ও ভারতের পাহাড়ি ঢলের পানিতে উপজেলায় মুহুরি, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর বেড়িবাঁধের ১৫টি স্থানে ভাঙন দেখা দেয়। মানুষের ঘরবাড়ি, কৃষি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
উপজেলার মির্জানগর ইউনিয়নের ভারত সীমান্তবর্তী ডিএম সাহেবনগর গ্রামের বড় কবরস্থানের পাশে ভারত থেকে প্রবাহিত সিলোনিয়া নদীর বেড়িবাঁধের প্রায় ৩০ মিটার অংশ বন্যায় ভেঙে যায়। এর আগে ২০২৪ সালের আগস্ট মাসের বন্যায় একই জায়গায় বাঁধ ভেঙে যায়। তখন গ্রামবাসীর স্বেচ্ছাশ্রমে এটি মেরামত করা হয়।
বেড়িবাঁধ ভাঙনে ডিএম সাহেবনগর, মেলাঘর, রাঙ্গামাটিয়া ও মির্জানগর গ্রাম পানিতে তলিয়ে যায়। কয়েকদিন আগে দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার বাঁধের মেরামত কাজ শুরু করতে চাইলে বিএসএফের বাধায় সেটি স্থগিত হয়ে যায়।
জানা যায়, ডিএম সাহেবনগরে ভারত সীমান্তের ২৫৫ নম্বর পিলারের কাছে বাঁধটি ভেঙেছে। বেড়িবাঁধের রাস্তাটি দিয়ে কবরস্থানে যাতায়াত করে চার গ্রামের মানুষ। বাঁধটি ভেঙে যাওয়ায় চলাচলে দুর্ভোগে পড়েছে মানুষ। এ ছাড়া নদীর পানি বেড়ে গেলে ভাঙনের অংশ দিয়ে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করে কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডে (পাউবো) সূত্র জানায়, ডিএম সাহেবনগরে সিলোনিয়া নদীর বেড়িবাঁধের প্রায় ৩০ মিটার অংশ ভেঙে গেছে। জঙ্গল ঘোনায় সিলোনিয়া নদীর ৩০ মিটারসহ ৬০ মিটার বাঁধ মেরামতে ৮ লাখ ৬৪ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স সাহাবুদ্দিন এন্টারপ্রাইজ বাঁধটি মেরামতের কাজ পেয়েছে।
উপজেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি এনামুল কাউসার জানান, এটি চার গ্রামের কবরস্থানে যাতায়াতের রাস্তা। বিএসএফের বাধায় কাজ বন্ধ হয়ে আছে। তারা যাতায়াতে বাধা দেয়। বিএসএফ দিনে তিনবার এসে দেখে যায়। দ্রুত বাঁধটি মেরামত না করলে সিলোনিয়া নদীর পানি লোকালয়ে ঢুকবে।
ফেনী পানি উন্নয়ন বোডের্র (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী আক্তার হোসেন মজুমদার কালবেলাকে জানান, বেড়িবাঁধটির কিছু জায়গায় বিএসএফ বাধা দিয়েছে। যেহেতু দুদেশের বিষয়, সেজন্য বিজিবির ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। দ্রুত বিষয়টির সমাধান হবে।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ফেনী ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. মোশারফ হোসেন কালবেলাকে জানান, বাঁধটি ভারতের সীমান্ত পিলারের কাছে। নোম্যান্সল্যান্ডে হওয়ায় তারা আপত্তি জানিয়েছে। দ্রুত বেড়িবাঁধটি মেরামতের কাজ যাতে শুরু করা যায়, সেজন্য চেষ্টা চলছে।
মন্তব্য করুন