রাঙামাটির কাপ্তাইয়ে দেখা দিয়েছে তীব্র লোডশেডিং। এতে করে জনজীবনে তীব্র ভোগান্তি নেমে এসেছে। কয়েক মাস ধরে এমন লোডশেডিং হলেও এর কোনো সমাধান না পাওয়ায় স্থানীয় জনসাধারণের মধ্যে দেখা দিয়েছে তীব্র ক্ষোভ ও হতাশা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কেবল জনসাধারণের বাসাবাড়িতে নয়, এমন বিদ্যুৎ বিভ্রাট দেখা দিয়েছে কাপ্তাইয়ের স্কুল-কলেজ, সরকারি-বেসরকারি গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরগুলোতেও। এতে করে শ্রেণিকক্ষে লেখাপড়া চালিয়ে যেতে ব্যাপক কষ্ট ভোগ করতে হচ্ছে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের। পাশাপাশি সরকারি দপ্তরগুলোয় লোডশেডিং-এ অফিসিয়াল কার্যক্রম চলমান রাখতে ব্যাঘাত সৃষ্টি হচ্ছে। এ ছাড়া হাসপাতালে থাকা রোগীরাও এমন লোডশেডিংয়ের যন্ত্রণায় অস্বস্তি বোধ করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. আরমান আলী, সেকান্দার ভূঁইয়াসহ অনেকেই আক্ষেপ করে বলেন, কাপ্তাইয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র থাকা সত্ত্বেও স্থানীয় বাসিন্দারা এই সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। অর্থাৎ কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদিত সব বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হচ্ছে। অথচ এখানকার বাসিন্দারা এর সুফল পাচ্ছেন না। তারা অনেকেই দাবি জানিয়েছেন, বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদিত বিদ্যুতের কিছুটা হলেও যেন কাপ্তাই এলাকায় বণ্টন করা হয়। এতে করে জনজীবনে স্বস্তি নেমে আসবে।
কাপ্তাইয়ের বাসিন্দা মো. আশিক, সুমন মিয়াসহ একাধিক ব্যক্তি জানান, বাসাবাড়িতে যেভাবে লোডশেডিং হচ্ছে, তা মেনে নেওয়া যায় না। দিনে অন্তত ৮ থেকে ১০ বারের বেশি বিদ্যুৎ চলে যায়। বাসায় কোনো কাজ ঠিকভাবে করা যাচ্ছে না। বয়স্ক ও শিশুরা তীব্র লোডশেডিং ও গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ছে। ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। এ নিয়ে অনেক লেখালেখি হলেও কোনো সমাধান হচ্ছে না। এভাবে বিদ্যুৎ বিপর্যয়ে মানুষের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হচ্ছে।
কাপ্তাইয়ের স্থানীয় ব্যবসায়ী সুজন দাশ, মো. সাহাবুদ্দীনসহ কয়েকজন বলেন, অনেক সময় বিদ্যুৎ বিভ্রাট দুই থেকে তিন ঘণ্টা পর্যন্ত হয়ে থাকে। এ ছাড়া অনেকবার বিদ্যুৎ যায় আর আসে। বিদ্যুৎ সময়মতো না থাকায় ব্যবসায়ীরা বড় ধরনের লোকসানে পড়ছেন। অনেকবার বলার পরও এর সমাধান তারা পাচ্ছেন না।
এদিকে কাপ্তাইয়ে বিদ্যুৎ বণ্টন করে থাকে চন্দ্রঘোনা আবাসিক প্রকৌশলী বিতরণ বিভাগ। তারা নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে না পারায় এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। অনেকেই আক্ষেপ করে বলেন, ঝড়-বৃষ্টি, বাতাস না হলেও বিদ্যুৎ চলে যায়। আবার ঝড়-বৃষ্টি শুরু হলে একবার বিদ্যুৎ গেলে আর আসার কোনো খবর থাকে না।
এ বিষয়ে জানতে কাপ্তাইয়ের চন্দ্রঘোনা আবাসিক প্রকৌশলী এ কে এম শামসুল আরেফিনকে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে চন্দ্রঘোনা আবাসিক বিদ্যুৎ সরবরাহ বিভাগের কয়েকজন কর্মকর্তা বলেন, কাপ্তাই ছাড়াও তাদের পাশের আরও দুটি উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে হয়। জনবল সংকট তো আছেই। তাই তাদের নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সেবা দিতে সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। তবে তারা এসব সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করে যাচ্ছেন বলে জানান।
মন্তব্য করুন