রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলায় ব্যাপক চুরি, ডাকাতিসহ হত্যার ঘটনায় উপজেলাবাসী চরম আতঙ্কিত। সম্প্রতি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এসব অপরাধের মাত্রা ব্যাপক বেড়েছে। প্রায়ই বিভিন্ন এলাকায় চুরি-ডাকাতির ঘটনা ঘটছে।
জানা গেছে, মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) রাতে ছফিল উদ্দিন (নিন্দালু)’র বাড়ি থেকে ১টি গাভি ও ১টি বাছুর, মিঠুর বাড়ি থেকে ১টি গাভি এবং আব্দুস সামাদের বাড়ি ১টি গাভিসহ মোট চারটি গরু চুরি হয়েছে। এ ছাড়া গত দুই মাসে ইকারচালী ইউনিয়নের প্রামাণিকপাড়া গ্রামে রাসায়নিক সার ব্যবসায়ী সাকলাইন প্রামাণিক ও তার পরিবারের সদস্যদের বেঁধে রেখে আলমারির তালা ভেঙে নগদ ২৫ লাখ টাকা এবং প্রায় ৩০ ভরি স্বর্ণালংকার ডাকাতি হয়েছে। থানা পার্শ্ববর্তী হেভেন ফ্লাওয়ার স্কুল ও সিনিয়র সিটিজেন মোসলেম উদ্দিনের বাড়িতেও চুরিসহ ব্যাপকভাবে বেড়েছে অপরাধ।
এ ছাড়া গত ৫ জুলাই ইকরচালী ইউনিয়নের দোহাজারী কওলাপাড়া গ্রামের আব্দুল মজিদের ছেলে সবুজ মিয়ার দুটি গরু চুরি হয়। ৮ জুলাই উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের ঘনিরামপুর ঝাকুয়া পাড়ায় সংঘবদ্ধ চোরচক্র কৃষক মেনারুল ইসলামের গোয়ালঘর থেকে ২টি গাভি, ৪টি ষাঁড় ও দুটি ছাগল চুরি হয়। ২৫ জুলাই রাতে উপজেলার সয়ার ইউনিয়নের বড় দোলাপাড়ার গোলাম মোস্তফার বাড়িতে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটে। গত ২৭ জুলাই উপজেলার ২নং কুর্শা ইউনিয়নের পলাশবাড়ী সেনপাড়ার সাবেক ইউপি সদস্যের বাড়ি থেকে নগদ অর্থ ও স্বর্ণালঙ্কার ডাকাতি হয়। ২৮ জুলাই রাতে উপজেলার বুড়ির হাট এলাকার পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীকে গলা কেটে হত্যা করা হয়। এভাবে একের পর এক চুরি, ডাকাতি ও খুনের ঘটনায় উপজেলাজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
স্থানীয় ব্রাদার্স কোল্ড স্টোরেজেরর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইকরামুল হক জানান, কিছুদিন আগে কোল্ড স্টোরেজে দুর্ধর্ষ ডাকাতি হয়েছে। এতে প্রায় ৪১ লাখ টাকা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে ব্যবসা করা অসম্ভব হয়ে পড়বে। জানমাল নিয়ে আমরা ভয়ে আছি কখন কী ঘটে।
স্থানীয়দের দাবি, গত দেড় মাসে চুরি ও ডাকাতি ব্যাপকহারে বেড়েছে। এভাবে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হতে থাকলে চোর ডাকাতের দ্বারা সর্বস্ব হারিয়ে তারা নিঃস্ব হয়ে যাবে। চোর, ডাকাত ও দুষ্কৃতকারীদের হাত থেকে জানমাল রক্ষায় পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষদের কাছে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা দাবি করেন স্থানীয়রা।
তারাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ ফারুক কালবেলাকে বলেন, আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। থানাধীন সব সড়কে ১৫টি চেকপোস্ট বসানো হয়েছে।
তিনি বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ প্রবেশদ্বারগুলোতে আগামীকাল থেকে সিসি ক্যামেরা লাগানো হবে। গত সাতদিন থেকে থানা পুলিশ ও সেনা ক্যাম্পের টহল জোরদার করা হয়েছে। গতকাল রাতে এসপি নিজেও আমাদের সঙ্গে টহলে ছিলেন। আগামী রোববার জরুরি সভায় আলোচনার মাধ্যমে আরও কঠোর অবস্থানে যাবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
মন্তব্য করুন