প্রায় ১৮৫ বছরের সংরক্ষিত একটি বনমহিষের শিংসহ মাথার করোটি নওগাঁর বদলগাছী উপজেলায় অবস্থিত ঐতিহাসিক পাহাড়পুর (সোমপুর) বৌদ্ধবিহার জাদুঘরে হস্তান্তর করা হয়েছে। যেটি বিহারের দর্শনার্থীদের জন্য সংরক্ষিত করা হবে।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) দুপুরে নওগাঁ শহরের কালিতলা মহল্লার অধ্যাপক (অব.) মো. ফজলুল হক পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারের কাস্টোডিয়ান ফজলুল করিমের কাছে হস্তান্তর করেন।
অধ্যাপক ফজলুল হক জানান, নওগাঁর দুবলহাটীর রাজা রায় বাহাদুর হরনাথ রায় চৌধুরী সিলেটে জমিদারি ক্রয় করার পর তিনি তার বিস্তৃত জমিদারি পরিদর্শন করার জন্য সিলেট যান। সেখানে তিনি অন্যান্য প্রাণীর সঙ্গে একটি বনমহিষ শিকার করেন। সিলেটে কিছুদিন থাকার পর তিনি দুবলহাটী রাজপ্রাসাদে ফিরে আসার সময় শিকার করা বিভিন্ন প্রাণীর মাথার করোটি সঙ্গে নিয়ে আসেন। সে সময় নিয়ে আসেন এই বনমহিষটির মাথার করোটিও। পরে ১৮৯১ সালে তিনি প্রয়াত হলে তার স্থলে তার ছেলে রাজা কৃঙ্করীনাথ রায় চৌধুরী জমিদারি প্রাপ্ত হন।
তিনি আরও জানান, দুবলহাটীর শিকারপুরের শৈলকোপা গ্রামের জোতদার সাকিম উদ্দীন শেখের সঙ্গে রাজা কৃঙ্করীনাথ রায় চৌধুরীর ঘনিষ্ঠতা ছিল। সেই ঘনিষ্ঠতার সুবাদে রাজা কৃঙ্করীনাথ রায় চৌধুরী ১৯৩৫ সালের দিকে এই বনমহিষটির মাথার করোটি তার ঘনিষ্ঠতম বাল্যবন্ধু সাকিম উদ্দীন শেখকে উপহারস্বরূপ দিয়েছিলেন। সাকিম উদ্দীন শেখের মৃত্যুর পর তার ছেলে আব্দুল গনি শেখ মহিষের মাথাটি সংরক্ষণ করছিলেন। আব্দুল গনি শেখের মৃত্যুর পর তার ছেলে অধ্যাপক মো. ফজলুল হক মাথাটি তার সংগ্রহে রেখেছিলেন।
এদিকে বৃহস্পতিবার তিনি নওগাঁ ঐতিহাসিক পাহাড়পুর জাদুঘরে সংরক্ষণের জন্য কাস্টোডিয়ান মোহাম্মদ ফজলুল করিম আরজুর কাছে করোটিটি হস্তান্তর করেন।
এ বিষয়ে পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার জাদুঘরের কাস্টোডিয়ান ফজলুল করিম আরজু বলেন, এ মহিষের করোটি আমাদের জন্য একটি প্রাপ্তি। এটি জাদুঘরে সংরক্ষণ করা হবে। দর্শনার্থীরা এটি দেখে অতীত ইতিহাস জানবেন।
নওগাঁর মানুষকে তিনি আহ্বান জানান, যদি এ ধরনের কোনো বস্তু, পুরাকীর্তি নিদর্শন কারও কাছে থেকে থাকে তাহলে পাহাড়পুর জাদুঘরে তা হস্তান্তর করার।
মন্তব্য করুন