ময়মনসিংহ নগরীর মাসকান্দা আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালের ইউনাইটেড বাস কাউন্টারে অতর্কিত হামলা ও ভাঙচুর করেছে একদল দুর্বৃত্ত। ঘটনার পর থেকে মাসকান্দা বাস টার্মিনাল থেকে ঢাকাগামী ইউনাইটেড ও সৌখিন পরিবহনসহ সব ধরনের বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।
মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) দুপুরে নগরীর ঢাকা বাসস্ট্যান্ডের কাউন্টার ভাঙচুর ও লুটপাট করে দুর্বৃত্তরা। এতে দেড় শতাধিক দুর্বৃত্ত অংশ নেয় বলে জানা গেছে।
পরে বিকেল ৪টা থেকে বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের সব রুটে (শেরপুর, জামালপুর, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ, টাঙ্গাইলসহ উত্তরবঙ্গ ও সিলেট অঞ্চল) বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে করে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন দূরদূরান্তের যাত্রীরা। তবে কারা বন্ধ করেছে, কেন করেছে, এ ব্যাপারে মালিক-শ্রমিক কেউ কথা বলছে না।
মাসকান্দা বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে জানা যায়, দুপুর ১২টার দিকে বেশ কয়েকট মোটরসাইকেলযোগে অর্ধশতাধিক যুবক হঠাৎ ঢাকাগামী ইউনাইটেড পরিবহনের কাউন্টারে হামলা ও ভাঙচুর চালিয়ে কাউন্টার বন্ধ করে দেয়। পরে তারা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। এ সময় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে বাসস্ট্যান্ড পুরো এলাকায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, দুপুরে হঠাৎ করে ৫০ থেকে ১০০ লোক মোটরসাইকেল দিয়ে এসে ইউনাইটেডের কাউন্টারটি ভাঙতে শুরু করে এবং তারা স্লোগান দিতে থাকে আওয়ামী লীগের দোসর শামীমের গাড়ি চলবে না চলতে দেব না।
মজিবুর রহমান নামে ঢাকাগামী এক যাত্রী বলেন, আমি অগ্রিম টিকিট করে রেখেছিলাম। বাসস্ট্যান্ডে এসে দেখি কে বা কারা ভাঙচুর করেছে। এতে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। আমি ঢাকা গিয়ে সেখান থেকে রবিশাল যাব। লঞ্চের টিকিট কেনা। এখন কোনোভাবেই ঢাকা যেতে পারছি না।
বাসটার্মিনালে দাঁড়িয়ে থাকা রফিকুল ইসলাম নামের একজন বলেন, সব ধরনের গণপরিবহন বন্ধ করে সড়কপথে ময়মনসিংহকে সারা দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এতে যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন।
দিলরুবা আক্তার নামের আরেক যাত্রী বলেন, বাবা অসুস্থ থাকায় তাকে দেখতে ময়মনসিংহ থেকে ঢাকার উদ্দেশে বাস টার্মিনালে এসে দেখি গাড়ি বন্ধ। বাস বন্ধ থাকায় আমি এখন কীভাবে যাব।
জেলা মোটর মালিক সমিতির সভাপতি আলমগীর মাহমুদ আলম বলেন, আমি ঢাকা থেকে ময়মনসিংহে ফিরছি। গফরগাঁও আসতেই একজন ফোন করে মাসকান্দার ঢাকা বাস কাউন্টার ভাঙচুর ও লুটপাটের কথা জানায়। কি কারণে, কে বা কারা ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে এখনো জানা যায়নি। আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে আরও বিস্তারিত বলতে পারব।
এ বিষয়ে কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ শিবিরুল ইসলাম বলেন, গত ৫ আগস্টের আগে যারা বাসস্ট্যান্ড নিয়ন্ত্রণ করত এখনো তারা করছে এমন অভিযোগে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা ভাঙচুর করেছে। যার কারণে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে মালিক সমিতির নেতা এবং আমরা ঢাকায় কথা বলে সমাধানের চেষ্টা করছি।
পুলিশ সুপার কাজী আখতার উল আলম জানান, জিলা মোটর মালিক সমিতির নেতাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা বাস বন্ধের বিষয়টি ঢাকা মহাখালী মালিক সমিতির সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছে।
তিনি জানান, রাত ৮টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জরুরি সভা ডাকা হয়েছে। সেখানে জিলা মালিক সমিতি, শ্রমিক ইউনিয়ন, জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের নেতারা থাকবেন। আমরা দ্রুত বাস চলাচলের ব্যবস্থা করব। যে কোনো দ্বন্দ্বের কারণে সাধারণ জনগণ বা যাত্রীরা কেন ভোগান্তিতে পড়বে।
মন্তব্য করুন