আতাউর রহমান, ব্রাহ্মণপাড়া (কুমিল্লা)
প্রকাশ : ২৩ আগস্ট ২০২৫, ১১:০৯ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

২৫ বছর ধরে বাঁশির মায়ায় আটকে আছে শফিকুলের জীবন

বাঁশের বাঁশি বিক্রেতা শফিকুল ইসলাম সরকার। ছবি : কালবেলা
বাঁশের বাঁশি বিক্রেতা শফিকুল ইসলাম সরকার। ছবি : কালবেলা

মোহনীয় সুর তুলে গ্রামগঞ্জের পথে-ঘাটে ঘুরে ঘুরে বাঁশের বাঁশি বিক্রি করেন শফিকুল ইসলাম সরকার (৬১)। জীবনের একপর্যায়ে এসে বাঁশির সুরের প্রতি প্রবল প্রেম জন্মালে এর মায়া ছাড়তে পারেননি। পরে জীবন-জীবিকার মাধ্যম হিসেবেও বেছে নেন বাঁশি বিক্রি। সেই থেকে ২৫ বছর ধরে পথে-ঘাটে হেঁটে হেঁটে সুর তুলে যাচ্ছেন তিনি।

শফিকুল ইসলাম সরকার কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার ধামঘর ইউনিয়নের বাসিন্দা। তিনি ওই ইউনিয়নের মৃত জব্বার সরকারের ছেলে।

একসময় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে চাকরি করতেন। অবসর নেওয়ার পর থেকেই তার বাঁশির সঙ্গে জীবন-যাপনের শুরু। তার সংগ্রহে রয়েছে বাঁশের তৈরি মোহন বাঁশি, মুরালি বাঁশি, বাঁশরি বাঁশি, বড় মুখ বাঁশি, বেজ বাঁশি ও ছোটদের বাঁশি।

শুক্রবার (২২ আগস্ট) সদর উপজেলার বাজারে বসে কথা হয় শফিকুল ইসলাম সরকারের সঙ্গে। বাঁশিতে গ্রামবাংলার চিরচেনা গানের সুর তুলে বাঁশি বিক্রি করছিলেন।

কথার একপর্যায়ে জানালেন, একসময় রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন অলিগলিতে ঘুরে ঘুরে বাঁশি বিক্রি করেছেন। ঢাকা থেকে তিনি কুমিল্লায় চলে আসেন। তার পর থেকে কুমিল্লা জেলার বিভিন্ন উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে ঘুরে ঘুরে বাঁশি বাজানো ও বিক্রির কাজ করছেন। বাঁশিও তিনি সংগ্রহ করেন দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে।

শফিকুল ইসলাম জানালেন, বাঁশি বাজানো শেখায় তার কোনো শিক্ষক ছিল না। বাঁশির সুরের প্রতি ভালোবাসা, একান্ত চেষ্টা আর আগ্রহই তাকে পারদর্শী করে তুলেছে। পুরোনো দিনের বাংলা গান, পল্লিগীতি, ভাটিয়ালি, লালন, রবীন্দ্রসংগীত, আধুনিক বাংলা গানসহ বিভিন্ন সুর তুলতে পারেন। আর এই দক্ষতা অর্জন করেছেন ২৫ বছর ধরে।

সময়ের সঙ্গে বাঁশির কদর কমে গেছে বলে জানালেন শফিকুল। দুঃখ ভারাক্রান্ত হয়ে বলেন, ‘মানুষ এখন আগের মতো শখ করেও বাঁশি কেনে না। তবে তেমন বিক্রি না হলেও বাঁশিতে সুর তুললে অনেকেই এসে ভিড় করে চুপটি করে শোনে।’

বিলাসবহুল জীবন চালানোর ইচ্ছা তার কখনোই ছিল না বলে জানান শফিকুল। বলেন, ‘প্রতিদিন সাত থেকে আটশ টাকার বাঁশি বিক্রি করি। এক সময় দ্বিগুণ বাঁশি বিক্রি হতো।’

প্রতিদিন দীর্ঘসময় পথ হাঁটতে হয়। বয়সের ভারে শরীরেও আর তেমন কুলাতে পারেন না। পরিবারও চায় তিনি পেশা বদল করুন। তবে শফিকুল হাস্যোজ্বল ভঙ্গিতে বললেন, ‘বাঁশির সুর আমার রক্তে, আত্মার সঙ্গে মিশে গেছে। ইচ্ছা করলেও ছাড়তে পারি না। বাঁশির সুরের সঙ্গে থাকলেই ভালো থাকি। এ জীবনে আর বাঁশি ছাড়া বাঁচা যাবে না।’

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

কাশিমপুর কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন বিডিআর বিদ্রোহ মামলার ৯ জন

জামায়াত আমিরের সঙ্গে নরওয়ের রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ

অভিনেতা পঙ্কজ ধীর আর নেই

শিক্ষকদের বাড়ি ভাড়া বাড়ানোর প্রস্তাব অর্থ মন্ত্রণালয়ে

দুই শতাধিক ভুয়া ভোটারকে আটকে দিল প্রশাসন   

দক্ষিণ আফ্রিকাকে উড়িয়ে প্রথম টেস্টে সহজ জয় পাকিস্তানের

ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন করতে সরকার বদ্ধপরিকর : আইন উপদেষ্টা

শিক্ষকদের ৩ দাবিতে উত্তাল শাহবাগ

কলাবাগানে স্বামীর হাতে স্ত্রী খুনের লোমহর্ষক বর্ণনা দিল পুলিশ

সন্ধ্যায় দলগুলোর সঙ্গে জরুরি বৈঠকে বসছে ঐকমত্য কমিশন 

১০

বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা

১১

সেই দুই পুলিশ কর্মকর্তার দুদকে বদলির আদেশ বাতিল

১২

সরকারি কাজে বাধা, যুবদল নেতা বহিষ্কার

১৩

সাড়ে ৪ ঘণ্টায় ভোট পড়েছে ৪০ শতাংশ

১৪

দুঃসাহসী সেই চিকিৎসকের ভাগ্যে কী ঘটেছে?

১৫

আসলেই কি নোয়াখালীতে গান্ধীর ছাগল চুরি হয়েছিল?

১৬

বিপিএলে বাড়ছে প্রাইজমানি, চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ দল কত পাবে জানা গেল

১৭

রাজধানীতে আ.লীগের ৮ নেতাকর্মী গ্রেপ্তার

১৮

আগুন নেভাতে কত সময় লাগবে, জানে না ফায়ার সার্ভিস ‎

১৯

যে কারণে বাড়ির বাইরে যেতে পারছেন না ভিকি

২০
X