নাটোরে ডা. এএইচএম আমিরুল ইসলামের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে শহরের আমিরুলের নিজ মালিকানাধীন জনসেবা হাসপাতালের বিশ্রাম কক্ষ থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
ডা. আমিরুল সিংড়া উপজেলার বাঁশবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি জনসেবা হাসপাতালটির মালিক ও পরিচালক ছিলেন। এ ছাড়া বাংলাদেশ ডক্টর অ্যাসোসিয়েশন (ড্যাব) নাটোর জেলার সাবেক আহ্বায়কও ছিলেন তিনি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ডা. আমিরুল ইসলাম রোববার রাতে নিজের মালিকানাধীন বেসরকারি হাসপাতাল জনসেবা হাসপাতালেই ছিলেন। সোমবার সকাল ১০টার পর থেকে কক্ষে তার কোনো সাড়া না পেয়ে হাসপাতালের কর্মচারীরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। পরে তারা দরজা ভেঙে গলাকাটা অবস্থায় ডা. আমিরুলকে পড়ে থাকতে দেখেন। খবর দিলে পুলিশ এসে গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে।
হাসপাতালের স্টাফ আল আমিন বলেন, রোববার রাত সাড়ে ৩টা পর্যন্ত ডা. আমিরুল হাসপাতালের স্টাফদের সঙ্গে অবস্থান করছিলেন। এরপর তিনি ঘুমাতে যান। আজ সকালে জেলা বিএনপির অনুষ্ঠানে অংশ নিতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্ত তিনি ঘুম থেকে ওঠেননি। আমরা ভেবেছিলাম উনি অনেক রাত জাগার কারণে ঘুমাচ্ছেন। এভাবে সকাল পেরিয়ে দুপুর হলে সন্দেহ হয়। পরে দরজা ধাক্কা দিয়ে ডাকাডাকি করেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। তখন স্টাফরা মিলে দরজা ভেঙ্গে মরদেহ দেখতে পায়। পুলিশে খবর দেওয়া হলে পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে।
আমিরুলের গাড়িচালক জুয়েল বলেন, তিনি সবার সঙ্গে মিলেমিশে চলতেন। তার এরকম মর্মান্তিক মৃত্যু মেনে নেওয়া যায় না।
প্রাইভেট ক্লিনিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন রাজশাহী বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আওয়াল রাজা বলেন, একজন চিকিৎসক ও হাসপাতাল মালিককে হত্যার সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত ও দ্রুত গ্রেপ্তার করার জন্য প্রশাসনকে অনুরোধ করছি। কর্মক্ষেত্রে চিকিৎসকের নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে সেবা ব্যাহত হবে।
নাটোরের সিভিল সার্জন ডা. মুক্তাদির আরেফিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের বলেন, খবর পেয়েই জনসেবা হাসপাতালে এসেছি। তিনি আমাদের আস্থাভাজন একজন মানুষ ছিলেন। ড্যাব ও বিএমএর সাবেক আহ্বায়কও ছিলেন। তাকে নিজ বিছানায় রক্তাক্ত অবস্থায় পাওয়া গেছে।
নাটোরের পুলিশ সুপার আমজাদ হোসেন বলেন, এটি অত্যন্ত মর্মান্তিক ঘটনা। খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশের সব ইউনিট ঘটনাস্থলে যায়। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, তিনি নিজ কক্ষে খুন হয়েছেন। আমরা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করছি।
তিনি আরও বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে প্রমাণ সংগ্রহ করেছে এবং ঘটনার রহস্য উদঘাটনে তদন্ত শুরু করেছে। প্রযুক্তিগত সহায়তা ব্যবহার করে দ্রুত খুনিদের আইনের আওতায় আনা হবে।
মন্তব্য করুন