ভোলার তজুমদ্দিন-মনপুরা নৌরুটে যান্ত্রিক ত্রুটির অজুহাতে এক সপ্তাহ ধরে বন্ধ রয়েছে যাত্রীবাহী সি-ট্রাক এসটি ইলিশা। জেলা শহরের সঙ্গে এই বিচ্ছিন্ন উপজেলার যোগাযোগের একমাত্র নৌরুটে নিরাপদ সি-ট্রাকটি বন্ধ থাকায় বাধ্য হয়ে অনুমোদনহীন অবৈধ ট্রলারে যাতায়াত করছেন যাত্রীরা।
কিন্তু উত্তাল মেঘনার ডেঞ্জার জোনে ছোট ছোট ফিটনেসহীন নৌ-চলাচলে যে কোন মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন ভোলার সচেতন মহল।
জানা গেছে, ভোলা জেলার একমাত্র বিচ্ছিন্ন দ্বীপ মনপুরা উপজেলা। এখানকার মানুষের যোগাযোগের একমাত্র ভরসা হচ্ছে নৌ-পথ। সী-ট্রাকই তাদের এই নৌ-রুটের একমাত্র নিরাপদ যান। সি-ট্রাক না থাকলে পাড়ি দিতে হয় ছোট ছোট এক তলা লঞ্চ ও অবৈধ ট্রলারের মাধ্যমে।
ইয়ানুর এন্টারপ্রাইজ এর নামে ইজারা নিয়ে চলছে মনপুরা-তজুমুদ্দিন নৌরুটে এ সি-ট্রাকটি। কিন্তু যান্ত্রিক ত্রুটির অজুহাতে এক সপ্তাহ ধরে বন্ধ রয়েছে এ রুটে চলাচলকারী একমাত্র সি-ট্রাক এসটি ইলিশা।
ভুক্তভোগী যাত্রী মো. জামাল অভিযোগ করে বলেন, বিআইডব্লিউটিসি থেকে টেন্ডারে পাওয়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইয়ানুর এন্টারপ্রাইজের কর্ণধার মো. নুরুউদ্দিন সি-ট্রাকটি মেরামতের নামে বন্ধ রেখে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় অনুমোদনহীন ও ফিটনেস বিহীন অবৈধ ট্রলারে যাত্রী পারাপার করছেন। এতে যে কোনো সময় মেঘনার ডেঞ্জার জোনে ঘটতে পাড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। এসব ছোট ছোট নৌ-যানগুলো দুর্ঘটনার শিকার হয়ে প্রাণহানির আশঙ্কা করছেন যাত্রীরা। তারপরও বাধ্য হয়ে দুর্ভোগ সহ্য করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছেন তারা।
যাত্রী সজিব, রাজু, আল-আমিন, বৈশাখীসহ অনেকে জানান, সি-ট্রাক বন্ধ থাকায় বাধ্য হয়ে ট্রলারে মাল আর যাত্রী গাদাগাদি করে যাতায়াত করতে হচ্ছে। উপায় নেই, তাই দুর্ভোগ সহ্য করে যাতায়াত করছি। এই নৌরুটে নিরাপদ সি-ট্রাক সবসময় চালু রাখার দাবি জানিয়েছেন তারা। এছাড়াও সি-ট্রাক চালু না হওয়া অনেক গর্ভবর্তী মা ও রোগীরা জেলা সদরে গিয়ে চিকিৎসা সেবা নিতে পারছেনা বলে অভিযোগ করছেন স্থানীয়রা।
সি-ট্রাক টেন্ডারে পাওয়া ঠিকাদার নুরুউদ্দিনের পক্ষে মো. নিরব উদ্দিন জানান, যান্ত্রিক ত্রুটির করানে সি-ট্রাকটির মেরামতের কাজ চলছে। দু-একদিনের মধ্যে সি-ট্রাকটি চালু হবে।
তবে এই ত্রুটিকে পুঁজি করে ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অনুমোদনহীন ছোট ছোট ট্রলারে যাত্রী পারাপারের ব্যাপারে কিছু বলতে নারাজ।
ভোলা জেলা বিআইডব্লিটিসির ব্যবস্থাপক কাওছার হোসেন কালবেলাকে জানান, সি-ট্রাকটি যান্ত্রিক ত্রুটির কাজ শেষ করে ফের চলাচল করবে। যাত্রীদের অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন তিনি।
বিআইডব্লিউটিসির উপ-মহাব্যবস্থাপক (বরিশাল অঞ্চল) খন্দকার তানভীর কালবেলাকে জানান, যান্ত্রিক ত্রুটির কাজ শেষে সি-ট্রাক চলার কথা। ২ দিন আগে টেন্ডারে পাওয়া নুরুউদ্দিনকে অফিসে ডেকে সি-ট্রাক চালুর বিষয়ে বলেছিলাম। ফের তাকে ডেকে দ্রুত সি-ট্রাক চালুর জন্য বলা হবে। দ্রুত সি-ট্রাক চালু না করলে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
মন্তব্য করুন