নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় বঙ্গোপসাগরে জলদস্যুদের গুলিতে আহত হন জেলে সৌরভ হোসেন। ১০ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে অবশেষে মারা গেলেন। এতে পরিবারে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। এর আগে সোমবার রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।
নিহত সৌরভ হোসেন (৪০) হাতিয়া উপজেলার সোনাদিয়া ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড পশ্চিম সোনাদিয়া গ্রামের সায়েদুল হকের ছেলে।
এদিকে তার মরদেহ বাড়িতে পৌঁছলে স্বজনদের কান্নায় ভারী হয়ে ওঠে গ্রামের আকাশ-বাতাস। তার ৫ ছেলেমেয়ের মধ্যে দুজনই প্রতিবন্ধী। পরিবারের একমাত্র উপার্জনশীল ব্যক্তিকে হারিয়ে দিশেহারা স্ত্রী-সন্তানরা।
জানা যায়, গত ২২ আগস্ট সৌরভসহ ১৪ জন জেলে মাছ ধরতে যান সূর্যমুখীর মাসুম বিল্লাহর মালিকানাধীন একটি ট্রলারে। মাছ ধরার একপর্যায়ে গত শুক্রবার ভোরে তাদের ট্রলারে হামলা চালায় একদল সশস্ত্র জলদস্যু।
প্রথমে দস্যুরা জেলেদের ট্রলারে উঠে পড়ে। পরে জেলেরা ট্রলার নিয়ে পালানোর চেষ্টা করলে দস্যুরা এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়ে এবং ট্রলারের সারেং ইমরান মাঝিকে কুপিয়ে জখম করে। এ সময় সৌরভ, মালেক ও ইরাক গুলিবিদ্ধসহ প্রায় সবাই আহত হন। ট্রলারে থাকা মাছ, জাল ও বরফ লুট করে নিয়ে যায় দস্যুরা।
স্থানীয় বাসিন্দা জামসেদ বলেন, আহত জেলেদের প্রথমে হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সৌরভের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে এবং পরে ঢাকা মেডিকেলে স্থানান্তর করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার রাতে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
নিহতের আত্মীয় তামজিদ উদ্দিন বলেন, হাতিয়ার জীবিকা এখনো নদীনির্ভর। সেদিন আমাদের পাশের সোহরাব মাছ ধরতে গিয়ে জলদস্যুদের গুলিতে আহত হয়ে সর্বস্ব হারান এবং চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তার পাঁচ সন্তান আজ এতিম। এভাবে প্রতিনিয়ত জেলেরা সর্বস্বান্ত হচ্ছে, কেউ বা জীবন হারাচ্ছে। জেলে সম্প্রদায়ের নিরাপত্তায় জলদস্যু দমনে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ এখন জরুরি।
হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম আজমল হুদা বিষয়টি নিশ্চিত করে কালবেলাকে বলেন, এ ঘটনায় ট্রলারের মালিক মাসুম বিল্লাহ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা একাধিক ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা করেছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে।
মন্তব্য করুন