বরিশালে র্যাব সদস্য পরিচয়ে পান ব্যবসায়ীর টাকা ছিনতাইকালে পুলিশের হাতে আটক শ্রমিক দল নেতা রাসেল মোল্লাকে (৪০) বিএনপির সব পদ থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে আগৈলঝাড়া উপজেলা শ্রমিক দলের সভাপতি আল সজল আলাল ও সাধারণ সম্পাদক সিকদার মো. লিটন স্বাক্ষরিত এক নোটিশে তাদের স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হয়।
বহিষ্কৃত শ্রমিক দল নেতা রাসেল মোল্লা আগৈলঝাড়া উপজেলার বাগধা ইউনিয়নের নাঘিরপাড় গ্রামের মৃত আব্দুল মাজেদ মোল্লার ছেলে এবং বাগধা ইউনিয়ন শ্রমিক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক। তিনি বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির বরিশাল বিভাগের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আকন কুদ্দুসুর রহমানের অনুসারী হিসেবে বিএনপির রাজনীতি করতেন বলে জানা গেছে।
এর আগে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাতে উপজেলার বাকাল ইউনিয়নের আমবাড়ি গ্রাম থেকে র্যাব পরিচয়ে পান ব্যবসায়ীর কাছে চাঁদা দাবি ও নগদ টাকা ছিনতাইকালে র্যাবের কটিপরা অবস্থায় তিন সহযোগীসহ পুলিশের হাতে আটক হন শ্রমিক দল নেতা রাসেল মোল্লা। এ সময় হ্যান্ডকাপ, অস্ত্র এবং মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যায় সুমনসহ তাদের অপর সহযোগীরা।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী পান ব্যবসায়ী বিপুল ঢালি বাদী হয়ে শ্রমিক দল নেতাসহ আটক তিনজনের নাম উল্লেখ করে আগৈলঝাড়া থানায় মামলা করেছেন। ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে বুধবার দুপুরে তিনজনকে আদালতের মাধ্যমে বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
কারাগারে যাওয়া শ্রমিক দল নেতা রাসেল মোল্লার অপর দুই সহযোগী হলো- আগৈলঝাড়া উপজেলার উত্তর চাঁদত্রিশিরা গ্রামের দুলাল মোল্লার ছেলে রমজান মোল্লা (২৮) এবং বাকাল ইউনিয়নের পূর্ব পয়সা গ্রামের নগেন হালদারের ছেলে নরত্তোম হালদার (৩৪)। তাদের রাজনৈতিক পরিচয় জানা যায়নি।
তবে স্থানীয় একাধিক সূত্র জানিয়েছে, আগেও নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল শ্রমিক দল নেতা রাসেল মোল্লা। আটক অপর দুজনসহ তাদের একটি বাহিনী রয়েছে। যার মধ্যে ইউনিয়নটির ওয়ার্ড শ্রমিক দলের কয়েকজনের সম্পৃক্ততার অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। তাদের বিরুদ্ধে ছিনতাই ছাড়াও ডাকাতির অভিযোগও রয়েছে। অবশেষে র্যাব পরিচয়ে ছিনতাই করতে গিয়ে রাসেল মোল্লার আটকের খবরে মুখ খুলতে শুরু করে এলাকাবাসী।
এ প্রসঙ্গে বরিশাল জেলা শ্রমিক দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুল হক বলেন, ঘটনাটি জানার পর উপজেলা শ্রমিক দল রাসেল মোল্লাকে দল থেকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করেছে। এর বাইরে তো আমাদের কিছু করণীয় নেই। সে যে অপরাধ করেছে তার শাস্তি আইনের মাধ্যমে হবে।
কমিটিতে বিতর্কিত নেতাদের জায়গা দেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ইউনিয়ন পর্যায়ে কমিটি গঠন, অনুমোদন করে থাকে উপজেলা শ্রমিক দল। এখানে জেলা কমিটির কোনো হাত নেই। এখন রাসেল মোল্লা কিভাবে কমিটিতে পদ পেল বা আগে তার বিরুদ্ধে এমন কোনো অভিযোগ ছিল কিনা তা উপজেলার নেতারা বলতে পারবেন।
রাসেল মোল্লার সঙ্গে শ্রমিক দলের অন্য কেউ এমন রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকলে সে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে উপজেলা নেতাদের বলা হবে বলেন জেলা শ্রমিক দলের এ নেতা।
মন্তব্য করুন