মান্দা (নওগাঁ) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:৩৮ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

দুর্গাপূজা এলেও পালপাড়ায় নেই মাটির পুতুল-ঘোড়া

নওগাঁর মান্দায় শুধু হাঁড়ি-পাতিল, থালা-বাসন বা টব বানিয়েই দিন কাটে মৃৎশিল্পীদের। ছবি : কালবেলা
নওগাঁর মান্দায় শুধু হাঁড়ি-পাতিল, থালা-বাসন বা টব বানিয়েই দিন কাটে মৃৎশিল্পীদের। ছবি : কালবেলা

আর কদিন পরই সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। একসময় এই উৎসব কেন্দ্র করে নওগাঁর মান্দায় পালপাড়া গ্রামের মৃৎশিল্পীরা ব্যস্ত হয়ে উঠতেন দুর্গা, লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক, গণেশসহ নানা ধরনের মাটির খেলনা, পুতুল, ঘোড়া এবং ঘর সাজানোর জিনিস তৈরিতে। কিন্তু এখন আর সেই চিরচেনা দৃশ্য চোখে পড়ে না। প্লাস্টিক ও সিরামিকের দাপটে ঐতিহ্যবাহী এই শিল্প আজ বিলুপ্তির পথে।

সরেজমিনে পালপাড়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় ৩০-৩৫টি পরিবার এখনও তাদের পূর্বপুরুষের পেশা আঁকড়ে ধরে আছেন, কিন্তু কাজের ধরন বদলে গেছে। দুর্গাপূজার জন্য খেলনা বা পুতুল তৈরি না করে এখন তারা মূলত হাঁড়ি, পাতিল, কলস, ফুলের টব এবং দইয়ের পাতিল তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন।

স্থানীয় মৃৎশিল্পী প্রশান্ত পাল আক্ষেপ করে বলেন, আগের মতো মাটির খেলনা বা ঘরের জিনিসপত্রের চাহিদা আর নেই। এখন শুধু ফুলের টব, দইয়ের পাতিল আর গাছের চারা লাগানোর খুঁটির জন্য কিছু কাজ হয়। নতুন প্রজন্মও এই শিল্পে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে।

একই গ্রামের আরেক শিল্পী দিপালী পাল বলেন, ধর্মীয় উৎসব এলেও এখন আর মাটির পুতুল, ঘোড়া বা ফল তৈরির কাজ পাই না। শুধু হাঁড়ি-পাতিল, থালা-বাসন বা টব বানিয়েই দিন কাটে।

এলাকার প্রবীণ শিক্ষক নবী মণ্ডল বলেন, একসময় মেলায় মাটির হাঁড়ি-পাতিল কেনার জন্য মানুষের ভিড় জমে যেত। মাটির পাতিলে রান্না করা খাবারের স্বাদই ছিল আলাদা। কিন্তু এখন আর শিশুদের জন্য মেলায় মাটির খেলনাও দেখতে পাওয়া যায় না। সত্যিই সেই দিন আর নেই।

নওগাঁ জেলা বিসিকের উপব্যবস্থাপক শামীম আক্তার মামুন জানান, মৃৎশিল্প আজ সংকটের মুখে। প্লাস্টিক ও সিরামিক পণ্যের ক্রমবর্ধমান ব্যবহারকে দায়ী করেছেন। এই শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য বিসিক কিছু উদ্যোগ নিয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো ক্ষুদ্রঋণ সুবিধা। নারী উদ্যোক্তারা ৫ শতাংশ সুদে এবং পুরুষ উদ্যোক্তারা ৬ শতাংশ সুদে এই ঋণ নিতে পারছেন।

তিনি আরও বলেন, একটি বড় সমস্যা হলো, নওগাঁ জেলার মাটি মৃৎশিল্পের জন্য খুব একটা উপযুক্ত নয়। তাই প্রশ্ন থেকে যায়, শুধু ঋণ সুবিধা দিয়ে এই অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্পকে কতটা টিকিয়ে রাখা সম্ভব হবে?

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

সুপার ফোরে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ কবে, কখন

শনিবার যেসব এলাকায় বিদ্যুৎ থাকবে না 

ইউপিইউ কাউন্সিলে বাংলাদেশ পুনর্নির্বাচিত হওয়ায় প্রধান উপদেষ্টার অভিনন্দন 

ঐকমত্যের মাধ্যমেই সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব : বদিউল আলম 

৯২ শিক্ষার্থীর জন্য একজন শিক্ষক 

জেনে নিন আজকের স্বর্ণের বাজারদর

নতুন বিতর্কে পাকিস্তান, পেতে পারে কড়া শাস্তি

শনিবার সকাল ৯টার মধ্যে বজ্রবৃষ্টি ঝরতে পারে যেসব অঞ্চলে

রোগীদের কষ্ট হবে ভেবে মন্ত্রিত্ব পদ প্রত্যাখ্যান করেন নেপালের এক চিকিৎসক 

সপ্তাহের সেরা চাকরির বিজ্ঞপ্তি, পদ সংখ্যা ৩৮৭৯

১০

ঝটিকা মিছিলের নামে এআই দিয়ে ব্যানার বদলের অভিযোগ বিএনপির

১১

মুক্তি পেয়ে অবৈধ অস্ত্র কারবার শুরু করেছিলেন বুয়েটের সনি হত্যার আসামি 

১২

আবারও মুখোমুখি ভারত-পাকিস্তান, ‘হ্যান্ডশেক’ নিয়ে কড়া নির্দেশ আইসিসির

১৩

রাকসু নির্বাচন : সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে লড়ছেন ভিপিসহ ২২ প্রার্থী

১৪

দুর্গাপূজা এলেও পালপাড়ায় নেই মাটির পুতুল-ঘোড়া

১৫

সরকারি আবাসন পরিদপ্তরের ৩ কর্মকর্তা বরখাস্ত

১৬

প্রেমিক মেনে না নেওয়ায় ৩ বছরের মেয়েকে পানিতে ফেলে হত্যা

১৭

বারবার চোখ চুলকানোর অভ্যাস কীসের লক্ষণ

১৮

বাবা হারালেন তারকা পেসার এবাদত হোসেন

১৯

হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ায় যে ৯ খাবার, বাদ দিন এখনই

২০
X