২২ দিনের সরকারি নিষেধাজ্ঞা অগ্রাহ্য করে পটুয়াখালীর দুমকির বিভিন্ন নদ-নদীতে মা ইলিশ শিকারের ব্যাপক প্রস্তুতি চলছে। স্থানীয় সূত্র জানায়, অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহ থেকে জেলেরা জাল-নৌকা মেরামত ও সরঞ্জাম সংগ্রহে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন।
সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী, আগামী ৪ অক্টোবর থেকে ২৬ অক্টোবর পর্যন্ত দেশের সব অভ্যন্তরীণ নদ-নদীতে ইলিশ ধরা, পরিবহন, সংরক্ষণ, বাজারজাত ও মজুত সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। তবে দুমকির পায়রা, পান্ডব, পাতাবুনিয়া ও লোহালিয়া নদীর তীরবর্তী এলাকাসহ বিভিন্ন ইউনিয়নে জেলেরা গোপনে নদীতে নামার পরিকল্পনা করছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, লোহালিয়া নদীর বাহেরচর, আংগারিয়া, পাতাবুনিয়া, জেলেপাড়া, পাংসিঘাট, পায়রা নদীর পশ্চিম আঙ্গারিয়া, লেবুখালী, আলগি, হাজিরহাট ও রাজগঞ্জ এলাকার জেলেপল্লিগুলোতে ইতোমধ্যে শতাধিক নৌকা প্রস্তুত রাখা হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জেলে অভিযোগ করেন, বিকল্প কর্মসংস্থান বা পর্যাপ্ত সহায়তা না থাকায় তারা বাধ্য হচ্ছেন ইলিশ শিকারে নামতে। সরকারের পক্ষ থেকে ভিজিএফ চাল বরাদ্দ থাকলেও তা চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল বলেও দাবি তাদের।
অন্যদিকে প্রশাসন জানিয়েছে, মা ইলিশ রক্ষায় কঠোর অভিযান পরিচালনা করা হবে। ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযান চালিয়ে জাল-নৌকা জব্দসহ আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।
এ বিষয়ে দুমকি উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান কালবেলাকে বলেন, আমরা ইতোমধ্যেই দুটো টিম করেছি নিয়মিত তদারকির জন্য। যেসব এলাকায় এসব জেলেদের তৎপরতা বেশি সেই জেলে এলাকাগুলোতে আমরা ইলিশ নিধন সম্পর্কিত লিফলেট বিতরণ করেছি।
তিনি আরও বলেন, শরিয়তের দৃষ্টিকোণ থেকেও তাদের কাউন্সেলিং করেছি। তারপরেও যদি কেউ এই নির্দেশনা অমান্য করে মাছ ধরতে যায় তাহলে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব। যদি আমাদের কোনো লোকজনও যুক্ত থাকে তবে তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।
স্থানীয় সচেতন মহলের মতে, জেলেদের জন্য পর্যাপ্ত সহায়তা নিশ্চিত না করা গেলে এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা কঠিন হয়ে পড়বে। এতে একদিকে ইলিশের প্রজনন ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, অন্যদিকে নদী তীরবর্তী মানুষের জীবিকা হুমকির মুখে পড়তে পারে।
মন্তব্য করুন