কুমিল্লার লালমাই উপজেলার পেরুল উত্তর ও বাকই উত্তর ইউনিয়নের অন্তত সাত গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষ দীর্ঘ ১৯ বছর ধরে ঝুঁকি নিয়ে একটি নড়বড়ে বাঁশের সাঁকো দিয়ে পারাপার হচ্ছেন। বর্ষা এলে এ সাঁকোই হয়ে ওঠে ডাকাতিয়া নদী পারাপারের একমাত্র ভরসা।
জানা গেছে, আলীশ্বর ও ভাবকপাড়া নামক স্থানে নদীর ওপর কোনো সেতু না থাকায় আলীশ্বর, নুরপুর, কসরাইশ, ভাবকপাড়া, শিকারিপাড়া, গছকড়া ও পাড়া ভাবকপাড়া গ্রামের মানুষ বাধ্য হয়ে নিজেরাই প্রতিবছর বাঁশ সংগ্রহ করে সাঁকোটি সংস্কার করে আসছেন।
স্থানীয়রা জানান, নদীর পূর্ব পাশে রয়েছে আলীশ্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আলীশ্বর উচ্চ বিদ্যালয়, দ্বীনিয়া মাদ্রাসা ও আলীশ্বর বাজার। প্রতিদিন শত শত শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ এই সাঁকো দিয়ে যাতায়াত করেন। বিশেষ করে বয়স্ক, নারী ও গর্ভবতী মহিলাদের জন্য এই পথচলা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। প্রায়ই ঘটে দুর্ঘটনা।
স্থানীয় কৃষক মকবুল মিয়া বলেন, গত বছর মাঠ থেকে খড় নিয়ে ফেরার পথে বাঁশের ফাঁকে পা আটকে পড়ে যাই, পরে লোকজন এসে আমাকে উদ্ধার করে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেকজন জানান, বছরের পর বছর ধরে ব্রিজ হবে শুনছি, কিন্তু বাস্তবে কিছুই হয়নি।
বাকই উত্তর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বলেন, এই গ্রামের হাজারো মানুষ প্রতিদিন ভোগান্তিতে পড়ে। আমরা সরকারের কাছে অনুরোধ জানাই— একটি স্থায়ী সেতু নির্মাণের মাধ্যমে এই জনদুর্ভোগ দূর করা হোক।
লালমাই প্রেস ক্লাবের সভাপতি ড. শাহজাহান মজুমদার বলেন, একটি ব্রিজ নির্মাণ হলে শুধু মানুষের দুর্ভোগই কমবে না, এলাকার শিক্ষা, ব্যবসা-বাণিজ্য ও সার্বিক উন্নয়নও ত্বরান্বিত হবে।
লালমাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হিমাদ্রী খীসা বলেন, জনসাধারণের যাতায়াত সহজ করতে সংশ্লিষ্ট স্থানে সেতু নির্মাণের বিষয়টি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরে পাঠানো হবে।
মন্তব্য করুন