চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে বন্দি অবস্থায় পুলিশকে ছুরি মেরে পালিয়েছিল ইমাম হোসেন আকাশ (২৯) নামের এক ছিনতাইকারী। অবশেষে পুলিশের জালে ধরা পড়েছে সে।
বুধবার (২২ অক্টোবর) সীতাকুণ্ড উপজেলার একটি এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে পাঁচলাইশ থানা পুলিশ। একই অভিযানে চীনা নাগরিককে ছুরিকাঘাত করার ঘটনায় জড়িত পিচ্চি আকাশকে নগরের পতেঙ্গা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। মোট সাতজন ছিনতাইকারীকে আটক করার দাবি করেছে তারা।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার (২১ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে চমেক হাসপাতালের ২৮ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পাহারার ফাঁকে পালিয়ে যায় ইমাম হোসেন আকাশ। সে সময় এক পুরুষ ও দুই নারী হাসপাতালে ঢুকে পূর্বপরিকল্পিতভাবে পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা চালায়। হামলায় এক কনস্টেবল ছুরিকাঘাতে আহত হন। পরে দুই নারীর একজনকে ঘটনাস্থল থেকেই আটক করে পুলিশ।
ইমাম হোসাইন আকাশের বাড়ি আনোয়ারা উপজেলার দিঘিরপাড় বরুমছড়া এলাকায়, তবে সে দীর্ঘদিন ধরে বন্দর এলাকার আজাদ কলোনিতে ভাড়া থাকত। তার বিরুদ্ধে একাধিক ছিনতাই ও অস্ত্র মামলা আছে বলে জানিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তারা।
এদিকে ঘটনার কয়েক ঘণ্টা আগে, সোমবার দুপুরে বন্দর অফিসার্স কলোনি গেট এলাকায় এক চীনা নাগরিকের ওপর ছিনতাইয়ের চেষ্টা চালায় তিন দুর্বৃত্ত। তারা বিদেশির কাছ থেকে একটি আইফোন ও নগদ টাকা ছিনিয়ে নেয় এবং তাকে ছুরিকাঘাত করে পালানোর চেষ্টা করে। স্থানীয়রা একজনকে ধরে গণপিটুনি দেয়। পরে আহত ছিনতাইকারী ইমাম হোসাইন আকাশ ও আহত বিদেশিকে পুলিশ চমেক হাসপাতালে ভর্তি করে। সেই হাসপাতাল থেকেই ঘটে নাটকীয় পালানোর ঘটনা।
এ বিষয়ে পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সোলাইমান বলেন, মেডিকেল থেকে পালানো ছিনতাইকারী আকাশকে সীতাকুণ্ড থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। চীনা নাগরিককে ছুরিকাঘাতের ঘটনায় জড়িত পিচ্চি আকাশকে পতেঙ্গা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনায় মোট সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, পিচ্চি আকাশ একটি ছিনতাই চক্রের সক্রিয় সদস্য, যারা চট্টগ্রাম বন্দরের আশপাশে বিদেশি নাগরিক ও ব্যবসায়ীদের টার্গেট করত। চক্রটির পেছনে স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির আশ্রয়-প্রশ্রয় রয়েছে বলেও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের একাধিক টিম এখন সেই নেটওয়ার্কের অন্য সদস্যদের ধরতে অভিযানে নেমেছে।
মন্তব্য করুন