গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে দেশীয় অস্ত্র জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে থানা পুলিশের উদ্যোগে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে মাইকিং করে দেশীয় অস্ত্র ঢাল, সড়কি, বল্লম, দা, রামদা ও লাঠি সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদে জমা দিতে বলা হয়েছে। যারা স্বেচ্ছায় অস্ত্র জমা দেবে, তাদের বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। তবে নির্দেশ অমান্য করলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানায় পুলিশ।
বুধবার (২২ অক্টোবর) মাইকিং করে এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
টুঙ্গিপাড়া থানার ওসি জাহিদুল ইসলাম বলেন, যোগদানের পর দেখেছি, তুচ্ছ ঘটনা কেন্দ্র করে গ্রামে গ্রামে মারামারি হয়। শ্রীড়ামকান্দি, গিমাডাঙ্গা, পাটগাতি ও গওহরডাঙ্গা এলাকায় ৯ বছরের শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধ পর্যন্ত ঢাল-সড়কি, লাঠিসোটা নিয়ে ঝগড়ায় নেমে পড়ে। একটি ছোট ভুল বা তর্কের কারণে মানুষ আহত হয়, কখনো মৃত্যুও ঘটে। অথচ দেশে আইন আছে, আদালত আছে, সমাজ আছে— তারপরও নিজের হাতে আইন তুলে নেওয়া একপ্রকার অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। আমরা চাই দীর্ঘদিনের গ্রাম্য মারামারি কালচার থেকে বেরিয়ে আসুক। জমাকৃত অস্ত্র পরে বিধি মোতাবেক ধ্বংস করা হবে।
পাটগাতি ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য রুঙ্গু খান বলেন, থানার সঙ্গে সমন্বয় করে প্রতিটি ওয়ার্ডে প্রচার চালাচ্ছি। যারা অস্ত্র জমা দেবে, তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে না; বরং শান্তিপূর্ণ সমাজ গড়তে সবাইকে উৎসাহিত করা হচ্ছে। এদিকে দেশীয় অস্ত্র জমা নেওয়ার খবরে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন উপজেলার বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা।
পাটগাতি গ্রামের হান্নান শেখ বলেন, আগে সামান্য বিষয়ে প্রতিবেশীদের মধ্যে ঢাল-সড়কি নিয়ে মারামারি হতো। এখন পুলিশ এসব অস্ত্র জমা নিচ্ছে— এটা খুবই ভালো উদ্যোগ। এক নারী বলেন, আগে ছোটখাটো তর্কেও ঢাল-সড়কি বেরিয়ে যেত। এখন পুলিশ বলেছে এগুলো জমা দিতে— এতে নিশ্চয়ই সহিংসতা কমবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারজানা আক্তার কালবেলাকে বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সময়োপযোগী পদক্ষেপ। প্রশাসনের পক্ষ থেকে পুলিশকে সব ধরনের সহযোগিতা করব। এতে দীর্ঘদিনের গ্রাম্য মারামারি সংস্কৃতি বন্ধ হবে বলে আশা করছি।
মন্তব্য করুন