

রাজবাড়ীর পাংশায় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংরক্ষিত কবরস্থানে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। রোববার (০৭ ডিসেম্বর) ভোররাতে উপজেলার বাহাদুরপুর ইউনিয়নে তারাপুর এলাকায় অবস্থিত কবরস্থানটিতে এ আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে। এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় কবরস্থানের বাঁশের তৈরি বেড়া পুড়ে যায়। এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় ও মুক্তিযোদ্ধারা।
তারাপুর দাখিল মাদ্রাসা ও হেফজোখানা জামে মসজিদের ইমাম ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংরক্ষিত কবরস্থানের কেয়ারটেকার মো. শহিদুল ইলাম মণ্ডল বলেন, আমি ফজরের আজান দেওয়ার জন্য মসজিদে যাচ্ছিলাম এমন সময় কবরস্থানে আগুন দেখতে পাই। পরে মসজিদের মাইকে বিষয়টি প্রচার করলে স্থানীয়রা ও মাদ্রাসার ছাত্ররা এসে আগুন নেভায়।
কবরস্থানের সভাপতি ও বাহাদুরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সজীব হোসেন বলেন, ভোররাতে মসজিদের মাইকের মাধ্যমে আগুন লাগার বিষয়টি জানতে পারি। এখানে প্রাকৃতিকভাবে আগুন লাগার কোনো সুযোগ নেই। ঘটনাস্থলে বিদ্যুতের সংযোগও নেই। কারা আগুন দিয়েছে সেটি তদন্ত সাপেক্ষে হয়তো জানা যাবে। আমরা কমিটির লোকজন বসে একটি সিদ্ধান্ত নেব এ বিষয়ে কী করা যায়।
উপজেলা বীর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সদস্য সচিব (অব.) অধ্যক্ষ বীর মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলাম জাহাঙ্গীর বলেন, আমি সরেজমিনে গিয়েছি। সেখানে কেরোসিন তেলের গন্ধ পাওয়া গেছে। কবরস্থানের চারপাশে তেল ঢেলে আগুন দেওয়া হয়েছে। এটা স্বাধীনতাবিরোধী উগ্র মৌলবাদীদের কাজ। তাছাড়া কেউ বা কোনো দলের লোক মুক্তিযোদ্ধাদের করস্থানে আগুন দিতে পারে না। এ ঘটনায় আমরা মর্মাহত। এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রিফাতুল হক সাংবাদিকদের বলেন, সংবাদ পেয়ে আমি সরেজমিনে পরিদর্শন করেছি। কবরস্থানের বেড়া পুড়ে গিয়েছে। আমরা দ্রুত সংস্কারের ব্যবস্থা করব। পাশাপাশি দুর্বৃত্তদের চিহ্নিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।
উল্লেখ্য, ১৯৪৬ সালে তিন একর জায়গা নিয়ে তারাপুর কবরস্থানটি স্থাপিত হয়। ২০২২ সালে কবরস্থানের ৪৫ ফুট জায়গা নিয়ে বাহাদুরপুর ইউনিয়নের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সংরক্ষিত কবরস্থান স্থাপিত হয়। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সংরক্ষিত কবরস্থানে বাঁশ ও প্লাস্টিকের নেট দিয়ে ঘেরাও করা হয়েছিল।
মন্তব্য করুন