

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলায় দ্বিতীয়দিনের মতো সারের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন বিক্ষুব্ধ কৃষকরা। রোববার (০৭ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার মেডিকেল মোড় গোল চত্বর এলাকায় সার বিক্রয় কেন্দ্র ‘মেসার্স ওয়াছেক খান’ সার ঘরের সামনে লালমনিরহাট বুড়িমারী মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন কৃষকরা।
কৃষকরা জানান, লালমনিরহাটের ব্র্যান্ডিং পণ্য ভুট্টা চাষ এবং চাষাবাদের মৌসুমও শুরু হয়েছে। জেলার সবচেয়ে বেশি ভুট্টার চাষাবাদ হয় হাতীবান্ধা উপজেলায়। তবে চাষের আগে শুরুতেই সার সংকটের খবরে দিশাহারা হয়ে পড়েছেন চাষিরা। সারের ইস্যুতে গত সপ্তাহেও উপজেলার সিংগিমারী ইউনিয়নের কৃষকরা মহাসড়ক অবরোধ করে ডিলার ও উপসহকারী কৃষিকর্মকর্তার অপসরণ দাবি করেন।
কিন্তু প্রতিশ্রুতি দিলেও কৃষকরা কাঙ্ক্ষিত সার না পেয়ে দ্বিতীয়বারের মতো মহাসড়ক অবরোধ করেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামীম মিঞা ও সিন্দুর্না ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আরিফুর ইসলাম আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গিয়ে ৩ ঘণ্টা পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। পর্যাপ্ত সার সরবরাহ করার প্রতিশ্রুতি দিলে মহাসড়ক ছেড়ে দেন কৃষকরা।
চর সিন্দুর্না গ্রামের কৃষক রবিউল ইসলাম বলেন, ১৪ দোন জমির জন্য ইউরিয়া সার দরকার। কয়েক দিন ধরে ঘুরছি তারপরও কিছু পাইনি। সকালে সারের খবর শুনে গিয়েছিলাম, কিন্তু না পেয়ে শূন্য হাতে ফিরতে হচ্ছে। কৃষি অফিসের লোকদের সহযোগিতায় ডিলাররা বাইরে বেশি দামে সার বিক্রি করছে। এ অবস্থায় সারের জোগান না পেলে ভুট্টার আবাদ নষ্ট হবে।
অপর কৃষক মনির হোসেন বলেন, সারের জন্য বারবার ডিলারের কাছে যাচ্ছি, তবু সার পাই না। খুচরা বাজারে বেশি দামে বিক্রি করছে ডিলাররা। এ দুর্নীতি আর চলতে পারে না। ডিলার আর কৃষি কর্মকর্তাদের অপসারণ চাই।
কৃষক শামসুল আলম বলেন, ভুট্টা ক্ষেতে এখনই সার দেওয়ার সময়। রোববার কিংবা সোমবারের (০৮ ডিসেম্বর) মধ্যে সার না পেলে রোপণ করাই সম্ভব হবে না। আমার মতো অনেক কৃষকই সার পাচ্ছে না। এবারের ভুট্টার আবাদ কী হবে আল্লায় জানে।
মেসার্স ওয়াছেক সার ঘরের স্বত্বাধিকারী মো. ওয়াছেক খান বলেন, কৃষি অফিসের লোকজনের উপস্থিতি ছাড়া সার বিক্রি করা হয় না। ছেলেরা আমার ব্যবসা দেখাশোনা করেন। আমি তেমন কিছু জানি না।
হাতীবান্ধা উপজেলা বীজ সার মনিটরিং কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামীম মিঞা বলেন, ভুট্টার মৌসুম চলায় সব কৃষক একই সঙ্গে সার কিনতে আসছেন। যার কারণে মজুত কম থাকায় কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। তবে কৃষকরা মজুত না করে চাহিদা মতো সার কিনলে সমস্যা হতো না। আশা করি আগামী সপ্তাহে চাহিদা কমে যাবে।
মন্তব্য করুন