

চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় শুরু হয়েছে আগাম জাতের আলু চাষ। গত বছরের লোকসানের ক্ষত ভুলতে মৌসুমের শুরুতেই আগাম আলু বীজ বপনে মাঠে নেমেছেন কৃষকরা। ভোরের হিমেল হাওয়া উপেক্ষা করে কেউ জমিতে সার দিচ্ছেন, কেউ লাঙল দিচ্ছেন, কেউ আগাছা দমন বা নিড়ানি দিয়ে মাঠে মনোনিবেশ করছেন। সারা দিনই যেন কর্মচাঞ্চল্যে ভরা কৃষকের জীবন।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ৫৯৫ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এরই মধ্যে উপজেলার উঁচু জমি, নদীর তীরবর্তী এলাকা ও চরাঞ্চলে শুরু হয়েছে আগাম জাতের আলুর বীজ বপন। ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে আলু রোপণ কার্যক্রম।
উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, কৃষকদের উচ্চফলন নিশ্চিত করতে প্রশিক্ষণ, বীজ সংগ্রহে পরামর্শ, সুষম মাত্রায় সার প্রয়োগ, কীটনাশক ব্যবস্থাপনা ও আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার বিষয়ে মাঠপর্যায়ে নিয়মিত দিকনির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, মতলব উত্তরের অধিকাংশ জমি উঁচু হওয়ায় এখানে আগাম জাতের আলু চাষ সম্ভাবনাময়। শীতের শুরুতে বীজ বপন করলে দুই মাসের মধ্যে আলু বাজারজাত করা সম্ভব, ফলে দাম পাওয়া যায় তুলনামূলক ভালো।
মাঠজুড়ে এখন কৃষকদের শ্রম, স্বপ্ন আর অপেক্ষা শীত শেষে ঘরে উঠবে লাভের ফসল, এমনটাই আশা মতলব উত্তরের কৃষকদের।
বোরচর এলাকার কৃষক আমান উল্ল্যা বলেন, এ বছর আমি ১২ একর ২৫ শতাংশ জমিতে আলু লাগিয়েছি। এ এলাকার মাটি আলু চাষের জন্য উপযোগী হওয়ায় কৃষকরা আলু চাষে বেশি ঝুঁকছেন। গত বছর অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে ক্ষতি হয়েছিল, তবে এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ভালো লাভের আশা করছি।
চরাঞ্চলের কৃষক আলী আজ্জম মাস্টার, আলমগীর বেপারি ও ওয়াসিম বেপারি জানান, আগাম জাতের আলু চাষে শ্রম বেশি হলেও বাজারে প্রথম বিক্রি করলে লাভ বেশি। তাই তারা সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে মাঠে কাজ করছেন।
এ বিষয়ে মতলব উত্তর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফয়সাল মোহাম্মদ আলী কালবেলাকে বলেন, অর্থকরী ফসল হিসেবে আলু চাষ এ এলাকায় অত্যন্ত লাভজনক। অধিকাংশ কৃষক এখন আলু চাষে স্বাবলম্বী। আমরা উৎপাদন বৃদ্ধি ও রোগবালাই নিয়ন্ত্রণে মাঠপর্যায়ে কৃষকদের পাশে আছি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ বছর বাম্পার উৎপাদনের আশা করছি।
মন্তব্য করুন