নীলফামারীর ডিমলা সদর ইউনিয়নের শৈল্লারঘাট নামক জায়গায় বুড়িতিস্তা নদীর ওপর অপরিকল্পিতভাবে সড়ক-সেতুর গাইডওয়াল নির্মাণের এক বছরের মধ্যে তিনবার ধসে পড়েছে। ফলে উপজেলার শৈল্লারঘাট সেতুটি হুমকির মুখে পড়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ত্রুটিপূর্ণ নকশায় গাইডওয়াল নির্মাণকালে নানা অনিয়ম থাকায় বারবার ধসের ঘটনা ঘটছে। নির্মাণের মাত্র এক বছর যেতে না যেতেই তিনবার ধসে পড়ল গাইডওয়ালটি।
জানা যায়, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) অর্থায়নে গত ২০১৯-২০ অর্থবছরে সড়কটির পুনঃনির্মাণ কাজটি করে নীলফামারীর শাহ আনোয়ার ট্রেডার্স নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কটির পুনঃনির্মাণ ও তিনশত মিটার গাইডওয়াল নির্মাণকাজের ব্যয় ধরা হয় পাঁচ কোটি পঞ্চাশ লাখ টাকা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বুড়িতিস্তা নদীর বামতীরে ডোমার-ডিমলা সড়কের ভাঙনরোধে শৈল্লারঘাট সেতুর উজানে নদীর অংশে আরসিসি গাইডওয়াল নির্মাণ করা হয়। সম্প্রতি বন্যায় গাইডওয়ালের প্রায় দুইশ মিটার ধসে নদীতে পড়েছে।
স্থানীয়রা জানান, গত বছর নির্মাণকাজ শেষ না হতেই গাইডওয়ালটিতে ফাটলের সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে গাইডওয়াল ভেঙে নদীতে ধসে পড়ে। পরে ধসে পড়া অংশ নামমাত্র মেরামত করা হলেও গত কয়েক দিনের বর্ষণে গাইডওয়ালটি আবারও ধসে নদীতে পড়ে যায়।
সুন্দরখাতা গ্রামের রহিজ উদ্দিন বলেন, গাইডওয়ালের ভিত্তি স্থাপনে ত্রুটি, ত্রুটিপূর্ণ নকশা ও নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী দিয়ে নির্মাণের ফলে বারবার ধসে পড়ছে। চলতি বর্ষা মৌসুমে আরও বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে। গাইডওয়াল ভেঙে যাওয়ায় ভারী বর্ষণ ও বন্যার পানির চাপে যে কোনো সময় ভেঙে যেতে পারে পাকা সড়কসহ গাইডওয়াল সংলগ্ন সেতু, ফসলি জমি ও বসতবাড়িসহ অন্যান্য স্থাপনা।
মনজুর আলম নামের স্থানীয় আরও একজন বলেন, বরাদ্দের অর্থ হরিলুট করতে গাইডওয়ালের নিচ থেকেই খননযন্ত্র দিয়ে ভূগর্ভস্থ বালু উত্তোলন করা হয়েছে। যার ফলে ভূগর্ভস্থ বালু ও মাটির স্তর সরে গিয়ে সেখানে বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।
ডিমলা উপজেলা প্রকৌশলী শফিউল ইসলাম বলেন, নদীর গতিপথ পরিবর্তন হওয়ায় বারবার গাইডওয়াল ধসে পড়ছে। অনেক চেষ্টা করেও ধস ঠেকানো যায়নি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
মন্তব্য করুন