রাজশাহীতে ‘হেল্প হেল্প’ বলে চিৎকার করে রাজশাহী ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষককে ছুরি মারা সেই ছাত্রীকে যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে (সিডিসি) পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
বুধবার (২০ আগস্ট) বিকালে মামলার পর রাতেই রাজশাহীর বোয়ালিয়া মডেল থানা পুলিশ তাকে হেফাজতে নেয়। পরে বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) দুপুরে আদালতের নির্দেশে ওই ছাত্রীকে যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে (সিডিসি) পাঠানো হয়।
নগরের বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ তাকে সিডিসিতে পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে, বুধবার বিকেলে ভুক্তভোগী শিক্ষক মারুফ কারখী বাদী হয়ে দণ্ডবিধি আইনে ওই ছাত্রীর বিরুদ্ধে নগরীর বোয়ালিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন। ভুক্তভোগী মারুফ রাজশাহী ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজে বাংলা বিষয়ের সহকারী শিক্ষক।
ভুক্তভোগী শিক্ষক বলেন, ‘বুধবার থানায় হাজির হয়ে আমি মামলার এজাহারে সই করেছি। সেখানে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনেছি। মেয়েটি প্রথমে হেল্প হেল্প বলে চিৎকার করছিল। ভেবেছিলাম বিপদে পড়েছে, হয়ত ছিনতাই হচ্ছে। তাই থেমেছিলাম। আমি থামতেই সে দৌড়ে এসে ছুরি দিয়ে আঘাত করে। এরপর বারবার আঘাত করে। একপর্যায়ে আমি তার ছুরি ধরে ফেলি। মুখে মাস্ক থাকায় শুরুতে চিনতে পারিনি।’
এর আগে, গত মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) দুপুরে রাজশাহী ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রধান ফটকের সামনের সড়কে এই ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর স্থানীয়রা ওই ছাত্রীকে আটক করে পরিবারের কাছে দেয়।
অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর বয়স প্রায় ১৬ বছর। সে রাজশাহী ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজে সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছে। তবে ‘উচ্ছৃঙ্খল আচরণের কারণে’ ২০২৩ সালে তাকে টিসি দেওয়া হয়। বর্তমানে রাজশাহীর শহীদ কর্নেল কাজী এমদাদুল হক পাবলিক স্কুলে ১০ম শ্রেণিতে পড়ছে।
জানতে চাইলে ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভাইস-প্রিন্সিপাল মোছা. তাসনুভা রুবাইয়াত আমিন বলেন, ‘টিসি দেওয়ার কারণে ওই শিক্ষার্থীর ক্ষোভ ছিল। নির্দিষ্ট কোনো শিক্ষকের বিরুদ্ধে নয়, বরং পুরো স্কুলের শিক্ষক-কর্মকর্তাদের প্রতিই তার ক্ষোভ ছিল। সুযোগ পেলেই যে কারও ওপর হামলা করতে চেয়েছিল। দুর্ভাগ্যজনকভাবে মারুফ কারখী তার শিকার হয়েছেন। ঘটনার পর আহত শিক্ষককে রাজশাহীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ভর্তি করা হয়েছিল। সেখানে তিনি চিকিৎসা নেন।’
এ বিষয়ে বোয়ালিয়া থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘মামলার পর বুধবার রাতেই ছাত্রীকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে শিশু আদালতে হাজির করলে আদালত তাকে যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানোর নির্দেশ দেন। পরে তাকে সেখানে পাঠানো হয়।’
মন্তব্য করুন