নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে বোনের নামে মিথ্যা বদনাম রটানো ও বন্ধুর বিয়ে ভেঙে দেওয়ার আক্রোশে গাজা সেবন করার কথা বলে ডেকে এনে মোর্শেদুল ইসলাম (৩৩) নামে এক যুবকের হত্যার ঘটনার রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ। এ ছাড়া এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সোমবার (২ অক্টোবর) নীলফামারী পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে জেলা পুলিশ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পুলিশ সুপার মো. গোলাম সবুর।
জানা গেছে, মশিউর রহমান ওরফে মোর্শেদুল কিশোরগঞ্জ উপজেলার বাহাগিলী ইউনিয়নের উত্তর দুরাকুটি বাসোপাড়া গ্রামের একরামুল হকের ছেলে।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আমিরুল ইসলাম, মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, মোহাম্মদ সারোআর আলম, কিশোরগঞ্জ থানার ওসি রাজীব কুমার রায়, নীলফামারী সদর থানার ওসি তানভীরুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
পুলিশ সুপার জানান, গত ২৭ আগস্ট দুপুর আড়াইটার দিকে ধাইজান নদীর কারাবালা নামক স্থান থেকে অজ্ঞাত ব্যক্তির অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে পুলিশ এবং পরিবারের পর্যবেক্ষণে ২৪ আগস্ট নিখোঁজ হওয়ায় মোর্শেদুলের মরদেহ বলে শনাক্ত হওয়ায় হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন এবং আসামি গ্রেপ্তারে নামে পুলিশ। একপর্যায়ের জেলার কিশোরগঞ্জ ও ঢাকার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে কিশোরগঞ্জ উপজেলার উত্তর দুরাকুটি মাস্টারপাড়া গ্রামের মামুনুর রশিদের ছেলে বাদশা আলমগীর (৩১), বাসোপাড়া গ্রামের সাইফুল ইসলামের ছেলে ইব্রাহিম ইসলাম (১৯), নুরুজ্জামান পেলকু মেম্বারের ছেলে সেলিম মিয়া (২৭) ও ময়নুকুড়ি গ্রামের মামুদ আলীর ছেলে আনারুল ইসলাম (৩০)। নিহত মোর্শেদসহ তারা সবাই একে অপরের বন্ধু এবং গাঁজা সেবনের সঙ্গী।
পুলিশ সুপার জানান, মোর্শেদুল ও আসামিরা একসঙ্গে গাঁজা সেবন করতেন। একাধিক জনের সঙ্গে টাকা লেনদেনের বিরোধ ও ইব্রাহিমের বোনের পালিয়ে বিয়ে করার অপবাদ ছড়ানো এবং মিথ্যা তথ্য দিয়ে সেলিমের বিয়ে ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ ছিল মোর্শেদুলের বিরুদ্ধে। এমন বিরোধ থেকে তারা সবাই মোর্শেদুলকে শায়েস্তা করার পরিকল্পনা করে। উক্ত পরিকল্পনায় গত ২৪ আগস্ট রাতে গাঁজা সেবনের জন্য মোর্শেদুলকে বাড়ি থেকে ডেকে নেয় ইব্রাহীম। সেই পরিকল্পনায় অন্যরা উপস্থিত হন সেখানে। এরপর সবাই মিলে মারপিট ও ধারালো অস্ত্রের আঘাতে মোর্শেদুলের মৃত্যু নিশ্চিত করে। এরপর মোর্শেদুলের লিঙ্গ কর্তন করে বালুর নিচে পুঁতে রাখেন ইব্রাহিম।
পুলিশ সুপার আরও জানান, ২৩ সেপ্টেম্বর বাদশা আলমগীর, ২৪ সেপ্টেম্বর ইব্রাহিম, ২৭ সেপ্টেম্বর সেলিম ও আনারুল গ্রেপ্তার হয়। তাদের মধ্যে ইব্রাহিম, সেলিম ও আনারুল আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়ে হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দিয়েছেন।
মন্তব্য করুন