বগুড়ার নন্দীগ্রামে কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বসতবাড়িতে হাঁটুপানি থাকায় কয়েকটি ঘর ভেঙে পড়েছে। এ ছাড়া বৃষ্টির পানিতে ডুবে গেছে প্রায় শতবিঘা মরিচের ক্ষেত এবং পুকুর ডুবে ভেসে গেছে মাছ।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ড্রেনেজ ব্যবস্থা অকেজো থাকায় বৃষ্টির পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না, ফলে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা।
এদিকে টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে পানি নেমে আসায় গুলিয়া হাইস্কুল সংলগ্ন নদীর বাঁধ ধসের আশঙ্কা করছেন গ্রামবাসী।
শুক্রবার (৬ অক্টোবর) সরেজমিনে গিয়ে উপজেলার কৈগাড়ী, রিধইল, সিংড়া খালাস, কামুল্যা, পারশুন, পারঘাটা, গুলিয়া কৃষ্ণপুর, জামালপুর, জোঁকা বনগ্রাম, গোপালপুর, তৈয়বপুর, কমলাগাড়ি, নাগরকান্দি, দমদমা, রুস্তমপুর, পৌরসভার পূর্বপাড়া, দক্ষিণপাড়া, কলেজপাড়া, নামুইট, বৈলগ্রাম, দামগাড়া, ওমরপুর, কালিকাপুরসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের বসতবাড়িতে হাঁটুপানি দেখা গেছে।
পানিবন্দি থাকায় অনেকেই ঘর থেকে বের হতে পারছেন না। বাড়ির আঙিনা, ঘরে মেঝেসহ ডুবে গেছে চুলা। ফসলি জমিগুলোও হাবুডুবু অবস্থা। শিমলা কচুগাড়ী হিন্দুপাড়ায় বৃষ্টির পানিতে জলাবদ্ধতায় থাকা মাটির ঘর-বাড়ি ও দেয়াল ধসে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ওই গ্রামের দুলাল চন্দ্র, নলি বালা, পরেশ চন্দ্র এবং নিরেন চন্দ্র। কল্যাণনগর গ্রামে পৌরসভার সাবেক মেয়র কামরুল হাসান সিদ্দিকী জুয়েলের খামারের ৭০০ মুরগি মারা গেছে। উপজেলা ও পৌর এলাকার বিভিন্ন গ্রামের অর্ধশতাধিক পুকুর ডুবে মাছ ভেসে যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন চাষিরা।
এ ছাড়া বৃহস্পতিবার ভোরে ওমরপুর মাঠে মাছ ধরতে গিয়ে হঠাতই অসুস্থ হয়ে বৃদ্ধ একাব্বর আলী বেপত্তা (৭০) নামের বৃদ্ধ মারা গেছেন বলেও জানা গেছে। স্থানীয়রা মাঠ থেকে ওই বৃদ্ধের মরদেহ উদ্ধার করে। তিনি বিষ্ণপুরের মৃত ময়েজ উদ্দিনের ছেলে।
থালতা-মাঝগ্রাম ইউপি সদস্য মুকুল হোসেন জানান, টানা বৃষ্টিতে বেশকয়েকটি গ্রামের বসতবাড়িতে পানি ঢুকেছে। ইউনিয়নের প্রায় ৫০ বিঘা মরিচ ক্ষেত ডুবে গেছে। জলাবদ্ধতার কারণে মাটির ঘরবাড়িগুলো ভেঙে পরতে পারে। নাগর নদীর পানি ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। গুলিয়া হাইস্কুল সংলগ্ন নদীর বাঁধ যে কোনো সময় ধসে যেতে পারে। স্কুল ও ইউনিয়ন ভূমি অফিস ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।
এ ব্যাপারে বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের (বাপাউবো) নন্দীগ্রাম শাখা কর্মকর্তা উপসহকারী প্রকৌশলী মো. আরিফ সরকার বলেন, পানির ঢেউয়ের কারণে বাঁধের মাটি কিছুটা সরে গেছে। বিষয়টি নজরদারিতে রয়েছে। জরুরি প্রয়োজন হলে তাৎক্ষণিক সংস্কারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন