রামগড় (খাগড়াছড়ি) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৯ অক্টোবর ২০২৩, ১২:১৬ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

জৌলুস হারাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী রামগড় ডাকঘর

ঐতিহ্যবাহী রামগড় ডাকঘর। ছবি : কালবেলা
ঐতিহ্যবাহী রামগড় ডাকঘর। ছবি : কালবেলা

পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রথম ও প্রচীন মহকুমা শহরের যোগাযোগের একমাত্র ভরসা ছিল খাগড়াছড়ি জেলার রামগড় ডাকঘর। পাকিস্তান সরকারের আমলে গঠিত এই ডাকঘরটির উপকেন্দ্রে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে প্রথম বিজয়ের পতাকা উত্তোলন করে রামগড়কে শত্রুমুক্ত ঘোষণা করা হয়। সে সময় এই ডাকঘরেই অবস্থান নিয়েছিল ১ নম্বর সেক্টরের মুক্তিবাহিনীর বীর মুক্তিযোদ্ধারা।

এদিকে আজ ৯ অক্টোবর বিশ্ব ডাক দিবস। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে ডাক বিভাগ দিবসটি পালন করা হয়।

স্বাধীনতার পরে ১৯৮৪ সালের ৩০মে রামগড় ডাকঘরটিকে বি গ্রেডে উন্নীত করে প্রধান ডাকঘরের স্বীকৃতি দেয় ডাক বিভাগ। মহান মুক্তিযোদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত এই ডাকঘরটিতে এখন আর আগের মতো প্রাণচাঞ্চল্য নেই। নেই গণমানুষের পদচারণা। আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থায় অভ্যস্ত হয়ে পড়ায় মানুষ ডাক বিভাগকে ভুলতে বসেছে। অধিকাংশ মানুষের ধারণা চিঠিপত্র বিলি করা ছাড়া ডাক বিভাগের আর কোনো কাজ নেই। অনলাইন নির্ভর উন্নত যোগাযোগ ও ডিজিটাল ব্যবস্থাপনায় মোবাইলে এসএমএস ও ই-মেইল, ইন্টারনেটে, ই-কমার্স, কোরিয়ার সার্ভিসসহ তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহারে বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলছে বাংলাদেশ। তারই প্রভাবে সরকারি চিঠিপত্র ছাড়া ডাকঘর কেন্দ্রিক জনসাধারণের কর্মতৎপরতা না থাকায় ঐতিহ্যবাহী রামগড় প্রধান ডাকঘরটি হারাতে বসছে তার পুরোনো জৌলুস।

জানা গেছে, রামগড় ডাক বিভাগে ট্রেজারি ও ইএমইএস সেবা কার্যক্রমটি চালু করা গেলে পার্বত্য চট্টগ্রামের পুরোনো এ পোস্ট অফিস থেকে প্রতিদিন ২০০ থেকে ৩০০ গ্রাহককে সেবা দেওয়া সম্ভব। সেবাটি চালু করা হলে ডাক বিভাগকেন্দ্রিক মানুষের কর্মতৎপরতা বাড়ার পাশাপাশি এ বিভাগ থেকে সরকার পাবে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব।

রামগড় ডাক অফিস সূত্রে জানা গেছে, রামগড় ডাকঘরের অধীনে রামগড় ছাড়াও খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা, মানিকছড়ি ও লক্ষিছড়ি উপজেলা ডাক বিভাগ রামগড় প্রধান ডাকঘরের অধীনে পরিচালিত হচ্ছে। তা ছাড়া রামগড় প্রধান ডাকঘরের আওতাধীন চার উপজেলায় আরও ১২টি উপশাখা চালু রয়েছে। রামগড় প্রধান ডাকঘরে ২১ জন কর্মকর্তা কর্মচারীর বিপরীতে বর্তমানে কর্মরত রয়েছেন ১২ জন ও শূন্যপদের সংখ্যা ৯টি।

উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি শাহ আলম জানান, সাধারণ মানুষভাবে চিঠিপত্র আদান-প্রদান ছাড়া ডাকঘরের কোনো কাজ নেই। বর্তমানে ডাকঘরের সেবার পরিধি বেড়েছে। কিন্তু রামগড় প্রধান ডাকঘর তার সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। যুগের সঙ্গে তাল মেলাতে পারছে না। আগে সঞ্চয়পত্রের সুবিধা থাকলেও অনলাইননির্ভর হওয়ার গ্রাহক সে সুবিধা পাচ্ছে না।

স্থানীয় প্রবীণ নুর ইসলাম জানান, নব্বইয়ের দশকে প্রবাস থাকাকালে তিনি এই ডাকঘর ব্যবহার করে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন। মাস শেষে বেতন মানি অর্ডার করে পাঠাতেন। এখন এই ডাকঘর স্মৃতিতে ঠাঁই নিচ্ছে।

রামগড় প্রধান ডাকঘরের পোস্ট মাস্টার শহীদ কামাল আজাদ হতাশা প্রকাশ করে বলেন, ডাকঘরটি নানা সমস্যায় জর্জরিত। ইন্টারনেট সেবা এবং দক্ষ জনবলের অভাবে সঞ্চয়পত্র এবং নতুন হিসাব খোলার মতো সুবিধা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। ভবনের অনেক জায়গায় ফাটল দেখা দেওয়ায় ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে হয়। ভবনে অন্তত রং করে দিলেও গ্রাহক আকৃষ্ট হতো।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আজকের দিন কেমন কাটতে পারে, জেনে নিন রাশিফলে

স্বামীকে বিদায় দেওয়া হলো না সানজিদার

বৃহস্পতিবার রাজধানীর যেসব মার্কেট বন্ধ

০১ মে : কী ঘটেছিল ইতিহাসের এই দিনে

টিভিতে আজকের খেলা

আড়িয়াল খাঁ নদে ফেলে সন্তানকে হত্যার অভিযোগ

০১ মে : আজকের নামাজের সময়সূচি

‘চাকরি খেয়ে ফেলব’, কারারক্ষীকে আ.লীগ নেতার হুমকি

মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীর মৃত্যু, পরিবারের দাবি হত্যা

মুরাদনগরে উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবির মিছিলে পুলিশের বাধা 

১০

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ

১১

উপবৃত্তির ৬৭ অ্যাকাউন্টের নাম্বার পরিবর্তন, শিক্ষা অফিসার বরখাস্ত 

১২

খেলার সময় পাগলা কুকুরের আক্রমণ, শিশুসহ আহত ১৬

১৩

৭৫ বছর বয়সে ডিগ্রি পাস, প্রশংসায় ভাসছেন সাদেক আলী

১৪

গোপালগঞ্জে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ৫৬ সেকেন্ডের মিছিল 

১৫

শখের বড়শিতে ২০ কেজির কোরাল

১৬

এসএসসি পরীক্ষার্থীর ছুরিকাঘাতে রিকশাচালক নিহত

১৭

কয়লা তৈরির কারখানায় অভিযান, ৩ লাখ টাকা জরিমানা

১৮

চ্যাম্পিয়ন্স লিগে থ্রিলারের ছোঁয়া, বার্সা-ইন্টার ম্যাচে ৬ গোলের উৎসব!

১৯

শতাধিক ভুয়া পেজে ‘অশ্লীল বিজ্ঞাপন’, বিব্রত ডা. জাহাঙ্গীর

২০
X