জুড়ী (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১১ অক্টোবর ২০২৩, ০৬:৫৬ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

কবরস্থান থেকে উঠে কীভাবে মিছিলে অংশ নিল- ভাইয়ের প্রশ্ন

মৌলভীবাজারের জুড়ী থানা। ছবি : সংগৃহীত
মৌলভীবাজারের জুড়ী থানা। ছবি : সংগৃহীত

মৌলভীবাজার জেলার জুড়ীতে সরকারের পদত্যাগ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে গত বৃহস্পতিবার রাতে মিছিল করে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ। মিছিলের পর বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর ২৮ জন নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা করা হয়েছে। এ ছাড়া এ মামলায় অজ্ঞাত আরও ২০-২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। নাশকতার এ মামলায় মৃত ব্যক্তি ও প্রবাসীকে আসামি করায় ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়েছে।

মামলার বিষয়টি রোববার (৮ অক্টোবর) সকালে জুড়ী থানার ওসি মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন নিশ্চিত করেছেন।

জানা যায়, বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে জুড়ীতে মিছিল করে জামায়াতে ইসলামী। এ ঘটনায় পরদিন শুক্রবার পুলিশ বাদী হয়ে জুড়ী থানায় মামলা করে।

মামলায় উল্লেখ করা হয়, জামায়াত-শিবির ও বিএনপির কর্মীরা জনসাধারণের যান চলাচল বন্ধ ও নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড করার জন্য উত্তেজিত হয়ে রাস্তায় মিছিল বের করলে পুলিশ তাতে বাধা দেয়। পুলিশের বাধা অমান্য করে তারা মিছিল শুরু করেন। পরে নেতাকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুঁড়ে সরকারি কাজে বাধা দেন।

মামলার পর অনুসন্ধানে জানা যায়, মামলার এজাহারের ১১ নম্বর আসামি উপজেলার জায়ফরনগর ইউনিয়নের হাসনাবাদ গ্রামের রুমুজ আলীর ছেলে লোকমান হোসেন মারা যান ২০১৭ সালের ৪ আগস্ট। মারা যাওয়ার ৬ বছর পর মামলার আসামি করায় এলাকাবাসীর মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। এ মামলায় ৬ নম্বর আসামি করা হয় জায়েদ আহমদকে। তিনি সাত বছর আগে সৌদি আরবে পাড়ি জমান। জায়েদ আহমদ উপজেলার হামিদপুর গ্রামের মৃত ফয়জুল্লাহর ছেলে। উপজেলার ফুলতলা ইউনিয়নের রজব উদ্দিনের ছেলে বুরহান উদ্দিন দুই বছর থেকে আরব আমিরাতে অবস্থান করছেন। মামলায় বুরহানকে ২৩ নম্বর আসামি করা হয়েছে। ফুলতলা বাজারের ইব্রাহিম আলীর ছেলে নাঈম উদ্দিন আট বছর আগে প্রথমে কাতার যান। সেখান থেকে তিনি এখন পর্যন্ত পর্তুগালে অবস্থান করছেন। তাকেও পুলিশের করা ওই মামলায় ২৪ নম্বর আসামি করা হয়েছে। মৃত ও প্রবাসীদের নামে নাশকতার মামলা করায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছি। মৃত ও প্রবাসী ব্যক্তিদের আত্মীয়স্বজনসহ সচেতন মহল মনে করছেন এ ধরনের মামলার ক্ষেত্রে পুলিশের আরও ভূমিকা পালন করা উচিত।

মামলার ১১ নম্বর আসামি মৃত লোকমান হোসেনের বড় ভাই মাহতাব আহমদ বলেন, আমার ভাই লোকমান ৬ বছর দুই মাস আগে ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে মারা যান। প্রশাসনের কাছে আমার প্রশ্ন আমার ভাই কবরস্থান থেকে উঠে কীভাবে মিছিলে অংশ নিল? মৃত ব্যক্তির নামে যদি মামলা হয় তাহলে আমরা যারা জীবিত আছি তাদের ওপর কী ধরনের অত্যাচার চলে একবার আপনারা ভেবে দেখুন।

প্রবাসী জায়েদ আহমদের বড় ভাই আব্দুস শুকুর বলেন, ‘আমার ভাই ২০১৮ সাল থেকে প্রবাসে আছে। সে প্রবাসে থেকেও পুলিশি মামলার আসামি। প্রবাসে থেকে কীভাবে মিছিলে অংশ নিল এটা আমাদের কাছে অবাক লাগলেও পুলিশের কাছে লাগেনি। এমনকি যারা রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নয়, তাদেরও আসামি করা হয়েছে।’

মামলার ১১ নম্বর আসামি মৃত লোকমান হোসেনের বিষয়ে জায়ফরনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাসুম রেজা বলেন, লোকমান হোসেন দীর্ঘ ছয় বছর আগে মারা যান।

এ বিষয়ে জুড়ী থানার ওসি মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন বলেন, গ্রেপ্তারদের তথ্য মতে মামলার আসামি করায় এমনটা হয়েছে। তদন্ত করে সংশোধন করা হবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বিএনপি আইনের শাসনে বিশ্বাসী : ব্যারিস্টার অসীম

প্রত্যেক উপদেষ্টা বিদেশি নাগরিক : রুমিন ফারহানা

বিশ্বকাপ দলে ডাক পেলেন ঢাবি ছাত্রদল নেতা

ইতিহাসের সেরা নির্বাচন হতে যাচ্ছে : প্রেস সচিব

ছুটির দিনেও জমজমাট চাকসুর নির্বাচনী প্রচার

কুমিল্লা নামেই বিভাগ বাস্তবায়নের দাবিতে উত্তাল রাজপথ

হৃতিক রোশনের প্রথম ওয়েব সিরিজ ‘স্টর্ম’

ধর্ম যার যার নিরাপত্তা সবার : আমীর খসরু

স্বাস্থ্যকর ঘুমের ১২ অভ্যাস

বাংলাদেশকে দুঃসংবাদ দিল ইতালি সরকার

১০

পিআরসহ ৫ দফা মেনে নেওয়ার আহ্বান ইসলামী আন্দোলনের

১১

অবতরণের সময় মিগ-৩১ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত

১২

জানা গেল কবে দেশে ফিরবেন শহিদুল আলম

১৩

পচা চাল কিনে বাধ্যতামূলক অবসরে খাদ্য কর্মকর্তা

১৪

ভুল সময়ে ওজন মাপলে জানবেন ভুল তথ্য

১৫

তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করার দাবি সাইকেলিস্টদের

১৬

কোটি টাকার বিষ্ণু মূর্তি উদ্ধার, গ্রেপ্তার ১

১৭

ভোট নিয়ে জামায়াত আমিরের হুঁশিয়ারি

১৮

ফুটবল খেলা নিয়ে দুপক্ষের সংঘর্ষ, আহত ৩০

১৯

প্রাথমিকে নাচ-গানের শিক্ষক নিয়োগ বাতিলের দাবিতে খতমে নবুওয়তের বিক্ষোভ

২০
X