দেশের উপকূলের আঘাত হেনেছে ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’। এমন পরিস্থিতিতে দুর্যোগ মোকাবেলায় বিভাগের সকল সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর ছুটি বাতিল করে তাদের স্ব স্ব কর্মস্থলে থাকার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার মো. শওকত আলী। এ ছাড়া এ দুর্যোগে র্যাব-পুলিশর পাশাপাশি শেখ হাসিনা সেনানিবাসের সদস্যরা, নৌবাহিনী ও কোষ্টগার্ডের সদস্যরাও বরিশাল বিভাগে তাদের দায়িত্ব পালন করবেন।
মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) বিকেলে ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’ মোকাবেলায় জরুরি সভা করেছে বরিশাল বিভাগীয় ও ছয় জেলার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি। বিভাগীয় কমিশনার মো. শওকত আলীর সভাপতিত্বে এ সকল সিদ্ধান্ত হয়। এ সময় বরিশাল জেলা প্রশাসক উপস্থিত ছিলেন। তাছাড়া ভার্চুয়ালী যুক্ত ছিলেন বিভাগের পাঁচ জেলার জেলা প্রশাসক।
এরইমধ্যে ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় পূর্বপ্রস্তুতির অংশ হিসেবে উপকূলের মানুষদের সতর্ক করতে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি) ও বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির (বিডিআরসিএস) স্বেচ্ছাসেবকরা।
বিভাগীয় কমিশনার বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’ মোকাবেলায় বরিশালের সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করাসহ বিভাগে ৩ হাজার ৩৭৫টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সেইসঙ্গে ৬ হাজার ২৪৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ১ হাজার ৬৬টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় আশ্রয়ের জন্য খোলা রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বিভাগের ৫২ টি মুজিবকেল্লাও প্রস্তুত রয়েছে।’
এর পাশাপাশি দুর্যোগকালীন খাদ্যের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রয়েছে। ১ হাজার ৩৮০ মেট্রিক টন চাল, নগদ ২৪ লাখ ৩ হাজার টাকা, ৯৬ বান্ডেল টিন ও ২ হাজার পিচ কম্বল প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যা দিয়ে তাৎক্ষনিক ত্রাণ সহায়তা কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব হবে।
এ ছাড়া পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ও শুকনো খাবারের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। প্রয়োজন অনুযায়ী সেগুলা সাধারণ মানুষের মাঝে বিতরণ করা যাবে। এছাড়াও পর্যাপ্ত জনবল দিয়ে গোটা বিভাগে ৪১২টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। যারা এখন থেকে দুর্যোগ পরবর্তী সময় পর্যন্ত তাদের দায়িত্ব পালন করবেন।
আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী বরিশাল রেঞ্জের পরিচালক আশরাফুল আলম জানান, ‘আমাদের সাড়ে ১১ হাজার আনসার-ভিডিপির সদস্য পূজার দায়িত্বে রয়েছেন। সন্ধ্যায় প্রতিমা বিসর্জনের পর তারা আশ্রয়কেন্দ্রে দায়িত্ব পালনে নিয়োজিত হবেন।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স বরিশাল বিভাগের উপপরিচালক মিজানুর রহমান বলেন, ‘বিভাগের দুটি নৌ স্টেশনসহ ৪২টি স্টেশনসহ সাড়ে ৮ শত কর্মকর্তা-কর্মচারী ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’ মোকাবিলায় কাজ করতে প্রস্তুত রয়েছেন।’
এদিকে, ‘ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি) বরিশাল আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপপরিচালক শাহাবুদ্দিন মিয়া বলেছেন, ‘ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় বরিশাল বিভাগে মোট এক হাজার ৮৪৫টি সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তুত রয়েছে। সেখানে প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করছে সিপিপি’র স্বেচ্ছাসেবকরা। বিভাগের ছয় জেলায় মোট ৩২ হাজার ৫০০ জন স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রয়েছে।’
মন্তব্য করুন