টাকার হিসাব চাওয়ায় প্রবাস ফেরত স্বামীকে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে স্ত্রীর বিরুদ্ধে। সোমবার (১৩ নভেম্বর) সকালে জেলার মদন উপজেলার কাইটাইল ইউনিয়নের বাররী (সুতিয়ারপাড়) গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দগ্ধ প্রবাসীর নাম এখলাছ মিয়া (৩৩)। তিনি কেন্দুয়া উপজেলার নওয়াপাড়া ইউনিয়নের পাচহার গ্রামের মৃত আমজাদ আলীর ছেলে। তিনি ৬ বছর আগে মদন উপজেলার খায়রুল ইসলামের মেয়ে মুক্তা আক্তারকে (২৮) বিয়ে করেন।
বিয়ের কিছু দিন পর এখলাছ মিয়া মালয়েশিয়া যান। সেখান থেকে যান সৌদি আরবে। বিদেশে থাকা অবস্থায় তার রোজগারের টাকা স্ত্রীর কাছেই পাঠাতেন। স্বামী বিদেশ এ অজুহাতে এখলাছ মিয়ার স্ত্রী তার শ্বশুরবাড়িতে থাকতেন। প্রবাস জীবন শেষে প্রায় ৫ বছর পর দেশে ফিরে স্ত্রীর কাছে টাকা-পয়সার হিসাব চাইলে দুজনের মধ্যে কলহের সৃষ্টি হয়।
এক পর্যায়ে টাকা-পয়সার বিষয়ে কথা বলতে এখলাছ মিয়ার স্ত্রী তাকে গত রোববার শ্বশুরবাড়িতে ডেকে আনে। পরদিন সোমবার সকালে এ নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে স্ত্রী মুক্তা আক্তার ও শাশুড়ি লুৎফুন নেছা (৫০) তার লোকজন নিয়ে এখলাছ মিয়ার শরীরে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়।
পরে শ্বশুরবাড়ির লোকজন প্রথমে তাকে কেন্দুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যায়। তারপর তারা তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে এখলাছ মিয়ার পরিবারের লোকজন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ গেলে মুক্তা আক্তারের পরিবারের লোকজন পালিয়ে যায়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে রেফার্ড করা হয়।
এ বিষয়ে এখলাছ মিয়ার চাচাতো ভাই কছিম বাদী হয়ে মুক্তা আক্তারসহ ৩ জনকে আসামি করে সোমবার রাতে মদন থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।
এখলাছ মিয়া বলেন, আমার স্ত্রীর কাছে ৬-৭ লাখ টাকা জমা রেখেছিলাম। এ ছাড়া তার কাছে কিছু স্বর্ণালঙ্কার ছিল। এগুলো আনতেই মূলত শ্বশুরবাড়ি গিয়েছিলাম। সোমবার সকালে এ বিষয়ে কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে আমার বউ ও শাশুড়ি আমার ওপর পেট্রল ঢেলে দেয়।
কাইটাইল ইউপি চেয়ারম্যান মো. সাফায়ত উল্লাহ্ রয়েল জানান, সোমবার বিকালে ঘটনাস্থলে আমি গিয়েছিলাম। মুক্তার আক্তারের বাড়িতে কাউকে পাইনি। এ ঘটনায় এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। সঠিক তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন করে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি।
মন্তব্য করুন