বিএনপি-জামায়াতের দেশব্যাপী চলমান অবরোধ কর্মসূচির কারণে রাজনৈতিক অস্থিরতার বিরূপ প্রভাব পড়তে শুরু করেছে মৌলভীবাজারের বড়লেখার পর্যটন কেন্দ্র মাধবকুণ্ড জলপ্রপাতসহ পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে। ভরা মৌসুম থাকলেও পর্যটক নেই দেশের অন্যতম প্রাকৃতিক জলপ্রপাত মাধবকুণ্ড ইকোপার্ক। প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে পর্যটন খাতের এমন ধসে মারাত্মক লোকসানে পড়েছেন ব্যবসায়ীসহ পর্যটন সংশ্লিষ্টরা।
জানা গেছে, অক্টোবর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত দেশে সাধারণত পর্যটন মৌসুম বিরাজ করে। তবে বড়লেখার মাধবকুন্ড জলপ্রপাত ও ইকোপার্ক বছরের অন্যান্য সময়েও পর্যটকের ব্যাপক আনাগোনা থাকে। কিন্তু এবার পর্যটন মৌসুমের শুরুতেই দেশের বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিরতা, হরতাল-অবরোধের প্রভাব পড়েছে এই শিল্পে। ২৮ অক্টোবরের পর ধস নামে পর্যটন স্পটগুলোতে। যার কারণে পর্যটন সংশ্লিষ্টদের আয় রোজগার শূন্যের কোটায় নেমে পড়েছে।
অবরোধের কারণে প্রায় দিনই মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত ও ইকোপার্ক এলাকা পর্যটকশূন্য থাকতে দেখা গেছে। শতাধিক ব্যবসায়ী, পর্যটন রেস্তোরার কর্মকর্তা-কর্মচারী, পর্যটক পুলিশ, ফটক ইজারাদার ও পর্যটক সহায়ক ভলান্টিয়াররা অলস সময় পার করছেন।
মাধবকুণ্ড বাজার বণিক সমিতির সভাপতি নাজিম উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক বেলাল আহমদ, ব্যবসায়ী কামরুল ইসলাম, বিলাল আহমদ প্রমুখ জানান, প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে মাধবকুণ্ডে পর্যটক আগমন কমে গেছে। অনেক ব্যবসায়ী এখন আর দোকানই খুলছেন না।
এদিকে মাধবকুণ্ড জলপ্রপাতে ইউনিয়ন তথ্য কেন্দ্র নিয়োজিত ক্যামেরাম্যান রাসেল আহমদ, রুজেল আহমদ, পারভেজ আহমদসহ কয়েকজন জানান, আমরা ১০ থেকে ১২ জন ক্যামেরাম্যান আগত পর্যটকের ওপর নির্ভরশীল। পর্যটকের ছবি তুলে ও নানা সহায়তার বিনিময়ে তারা যা দেন তাতেই তাদের পরিবার চালান। কিন্তু গত তিন সপ্তাহ ধরে মাধবকুণ্ডে পর্যটক না আসায় তাদের কোনো আয় রোজগার হচ্ছে না।
বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন পরিচালিত মাধবকুণ্ড পর্যটন রেস্তোরাঁর ব্যবস্থাপক জাকির হোসেন জানান, ২৮ অক্টোবরের পর থেকে দূর-দূরান্তের কোনো পর্যটক আসছেন না। স্থানীয় ২ থেকে ৪ জন আসলেও ব্যবসা-বাণিজ্যে তাদের কোনো ভূমিকা নেই। যেখানে প্রতিদিন কয়েক হাজার পর্যটক আসতেন, এখন সেখানে যেন এক ভুতুড়ে পরিবেশ বিরাজ করছে।
মন্তব্য করুন