বগুড়ায় বিএনপির মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। শহরের নবাববাড়ি সড়কে দলীয় কার্যালয়ের সামনে রোববার (১০ ডিসেম্বর) বেলা ১১টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত এই মানববন্ধনের আয়োজন করে। এ সময় গ্রেপ্তার এড়াতে বগুড়ায় মানববন্ধনে বিএনপির শীর্ষ নেতাদের কেউই অংশগ্রহণ করেনি।
বিএনপির মানববন্ধনে বগুড়ার শেরপুরে হত্যার শিকার বিএনপি সদস্য আব্দুল মতিনের স্ত্রী লায়লী বেগম বক্তব্য রাখেন। এছাড়াও সম্প্রতি সময়ে গ্রেপ্তার বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের মুক্তি দাবি করে পরিবারের অন্তত ২০ জন সদস্য এই মানবন্ধনে বক্তব্য রাখেন। এ সময় অংশগ্রহণকারীদের হাতে বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড এবং গ্রেপ্তার, গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার আত্মীয়দের ছবি বহন করতে দেখা যায়।
মানবন্ধনে বগুড়া জেলা বিএনপির সহসভাপতি আইনজীবী আব্দুল বাছেদ সভাপতিত্ব করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন দলটির জেলা শাখার সাবেক আহ্বায়ক ও আইনজীবী একেএম সাইফুল ইসলাম, মহিলা দলের সভাপতি লাভলি রহমানসহ প্রমুখ নেতারা।
তবে বগুড়া জেলা বিএনপির সভাপতি ও পৌর মেয়র রেজাউল করিম বাদশা, সাধারণ সম্পাদক আলী আজগর তালুকদার হেনা, যুবদলের আহবায়ক খাদেমুল ইসলাম, স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক রাকিবুল ইসলাম শুভ ও ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সাইদুর ইসলামসহ শীর্ষ নেতাদের কেউই মানবন্ধনে অংশগ্রহণ করেননি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিএনপি নেতা জানান, মামলা অভিযুক্ত নেতাদের উপস্থিত না থাকার বিষয়ে কেন্দ্র থেকেই নির্দেশনা ছিল।
গ্রেপ্তার বিএনপি সমর্থক শরিফুর ইসলামের স্ত্রী শামিমা লিমা বলেন, ‘বাড়িতে ছোট তিনটা সন্তান। আয় করার কেউ নেই। উনি এখন ক্রাউন সিমেন্ট কোম্পানিতে চাকরি করেন, কোনো নাশকতার সঙ্গে জড়ানোর প্রশ্নই আসেনা। গত ৪ নভেম্বর শহরের মালগ্রাম অফিস থেকেই এসে উনি ৩ বছর বয়সীয় ছোট ছেলের ওষুধ নিতে সবুজবাগে বাড়ির সামনে বের হন। পুলিশ সেখান থেকে ধরে নিয়ে ৩ নভেম্বর দায়ের হওয়া এক মামলায় তাকে জেলে পাঠায়। বাচ্চাদের নিয়ে এখন কী করবো? উনার চাকরিও আর থকাবে না।’
বগুড়া জেলা বিএনপির সাবেক আহবায়ক ও আইনজীবী একেএম সাইফুল ইসলাম মানববন্ধনে বলেন, ‘যাকে ইচ্ছা পুলিশ গ্রেপ্তার করছে। বিএনপির সমর্থন করলেই তাকে গ্রেপ্তার করতে হবে? সরকারের রক্ষী বাহিনীর অত্যাচারে বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মী ঘর ছাড়া। তাদের পরিবারের সদস্যদের মানবেতর জীবনযাপন কেউ দেখে না।’
বগুড়া জেলা বিএনপির সহসভাপতি আইনজীবী আব্দুল বাছেদ বলেন, ‘গত ২৮ অক্টোবরের পর থেকে এখন পর্যন্ত বগুড়ায় বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে ৩৭টি মামলা দায়ের হয়েছে। এইসব মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি আড়াই হাজার। গ্রেপ্তার হয়েছেন ৫০০ এর বেশি নেতাকর্মী যাদের বেশিরভাগই এজাহারভুক্ত নন।’
শীর্ষ নেতাদের উপস্থিত না থাকার বিষয়ে এই নেতা বলেন, ‘সবার নামেই ১০ থেকে ১৫টি মামলা আছে। এখানে আসলে নির্ঘাত গ্রেপ্তার হবেন। সামনে কঠোর আন্দোলনের স্বার্থে তাদের গ্রেপ্তার এড়ানো জরুরি। দলীয় কৌশলের অংশ হিসেবেই কাউকে মানবন্ধনে আনা হয়নি।’
মন্তব্য করুন