শিশু প্রথমার হাতে উপহার তুলে দিয়ে সোমবার (১১ ডিসেম্বর) শেষ কর্মদিবস পার করেছেন নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার সদ্য বিদায়ী ইউএনও মুহাম্মদ ইমরানুল হক ভূঁইয়া। মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে ইউএনও হিসেবে যোগাদানের কথা রয়েছে।
প্রথমা চাটখিল উপজেলায় রামনারায়ণপুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে প্রথম জন্ম নেওয়া শিশু। প্রতিষ্ঠার দীর্ঘ ৩০ বছর পরেও কেন্দ্রটিতে কোনো প্রসব হয়নি। ২০২২ সালের আগস্ট মাসে উপজেলা প্রশাসন, পরিবার পরিকল্পনা বিভাগ ও রামনারায়ণপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. হারুন অর রশিদ বাহারের উদ্যোগে কেন্দ্রটি সংস্কার ও মেরামত করার পর প্রথম নরমাল ডেলিভারির জন্য প্রস্তুত করা হয়।
পরে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান তার নিজস্ব তহবিল থেকে মিডওয়াইফ এবং আয়া নিয়োগ দিয়ে নরমাল ডেলিভারি চালু করেন। মো. রাজু ও রুনু আক্তার দম্পতি এই সেবা কেন্দ্রে প্রথম নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমে একটি কন্যা সন্তান জন্ম দেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তখন শিশুটির নাম রেখেছিলেন প্রথমা। ইউএনও তাদের সন্তানের নাম প্রথমা রাখায় শিশুটির বাবা-মাও অনেক খুশি হয়েছেন।
ইউএনও ইমরানুল হক ভূঁইয়া চাটখিলে শেষ কর্মদিবসে শিশু প্রথমাকে নগদ টাকা ও উপহারসামগ্রী প্রদান করার সময় সেখানে আরও উপস্থিত ছিলেন চাটখিল উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) আকিব ওসমান, উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান, উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার জাকির হোসেন।
ইউএনও মুহাম্মদ ইমরানুল হক ভূঁইয়া বলেন, ভালো কাজ করার আনন্দ অন্যরকম। টাকা দিয়ে এই আনন্দ কেনা যায় না। কাজের মাধ্যমে আমি আজীবন এমন আনন্দ পেতে চাই। প্রথমা আমাদেরই সন্তান।
ইউএনও মুহাম্মদ ইমরানুল হক ভুঁইয়া ২০১০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করে ২০১৬ সালের ১ জুন বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের ৩৪তম ব্যাচের প্রশাসন ক্যাডারের একজন অফিসার হিসেবে চাকরিতে যোগদান করেন। তিনি ২০২২ সালের ০৪ আগস্ট চাটখিল উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এর আগে তিনি রাজশাহী সিটি করপোরেশনের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট এবং রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ী উপজেলায় সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিসেবে সাফল্যের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন। ব্যক্তিগত জীবনে দুই সন্তানের জনক মুহাম্মদ ইমরানুল হক ভুঁইয়ার গ্রামের বাড়ি ফেনী জেলার দাগনভূঁইয়া উপজেলায়।
মন্তব্য করুন