জাজিরা প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৬:৪৮ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

শরীয়তপুরে ১৫ বছর ধরে আবু পিঠার নতুন ধানের ভাপার সুনাম

বিক্রির জন্য ভাপা পিঠা প্রস্তুত করছেন আবুল হোসেন। ছবি : কালবেলা
বিক্রির জন্য ভাপা পিঠা প্রস্তুত করছেন আবুল হোসেন। ছবি : কালবেলা

শরীয়তপুরের জাজিরায় ভাপা পিঠা তৈরি করে স্বাবলম্বী হয়েছেন আবুল হোসেন (৫০)। নতুন ধানের গুঁড়া, খেজুরের গুড় ও নারিকেল দিয়ে তৈরি সুস্বাদু ভাপা পিঠা বিক্রি করে তার সংসারে স্বচ্ছলতা ফিরেছে। নিজের আত্মকর্মসংস্থানের পাশাপাশি সংসারের খরচ জোগান ও ছেলেমেয়ে পড়াশোনা করাচ্ছেন তিনি। আবুল হোসেনের বানানো ভাপা পিঠার সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে এলাকাজুড়ে। স্থানীয় তার দোকান চেনেন ‘আবু পিঠা’ নামে। এখন তার মাসে আয় প্রায় ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, জাজিরার কাজিরহাট বাস স্ট্যান্ড মহাসড়কের পাশেই আবুল হোসেন ভাপা পিঠার দোকান নিয়ে বসেছেন। আগাম ধানের ভাপা পিঠা খেতে দোকানের চারদিকে ঘিরে আছে ক্রেতারা। নতুন ধানের পিঠার সুগন্ধ ছড়িয়ে পড়ায় বাড়ছে ক্রেতার সংখ্যাও। নতুন ধান থেকে তৈরি করা চালের গুঁড়া, খেজুরের গুড় ও নারিকেল দিয়ে তৈরি হচ্ছে ভাপা পিঠা। প্রতিটি স্পেশাল ভাপা ২০ টাকা, নরমাল ভাপা পিঠা ১০ টাকা। এসব দাঁড়িয়ে খাওয়ার পাশাপাশি অনেকেই নিয়ে যাচ্ছেন নিজেদের পরিবারের জন্য।

ভাপা পিঠা বিক্রেতা আবুল হোসেন বলেন, আমি ১৫ বছর ধরে এখানে ভাপা পিঠা বিক্রি করি। মানুষ আমার পিঠা পছন্দ করে। সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। প্রতিদিন ৪ থেকে ৫ হাজার টাকার পিঠা বিক্রি করছি। শীতের তীব্রতা বাড়লে প্রতিদিন ৬ থেকে ৭ হাজার টাকার পিঠা বিক্রি হবে। সেই অপেক্ষায় রয়েছি। শীত এলে আমি এই ৪ মাস বাজারে ভাপা পিঠা বিক্রি করি। অন্য সময় আমি ভ্যানচালক।

তিনি আরও বলেন, শীত এলে কষ্ট করে আর ভ্যান চালাই না। শীতের মধ্যে ভাপা পিঠার প্রচুর চাহিদা এখানে। তাই শীতের ৪ মাস প্রতিদিন পিঠা বিক্রি করি। এই চার মাস আমার বেচাকেনা অনেক ভালো থাকে। ছেলে মেয়েদের পড়াশোনা করিয়েছি, বাড়িতে নতুন ঘর দিয়েছি। এখন ছেলেকে ইতালি পাঠাব।

কাজিরহাট ব্রাক অফিস এলাকার বাসিন্দা ওয়াসিম বলেন, আমি প্রতিদিন এখানে পিঠা খেতে আসি। অন্য সব জায়গার তুলনায় এখানের পিঠার মান ভালো। না খেলে আসলে বুঝবেন না। তাই বন্ধুদের নিয়ে এখানেই চলে আসি পিঠা খেতে।

মনাই সৈয়াল কান্দির খবির বেপারি বলেন, এখানের পিঠা খুবই মজা। আমার স্ত্রী বলেছে পিঠা নিয়ে যেতে। তাই চলে আসছি আবুল ভাইয়ের ভাপা পিঠার দোকানে। স্থানীয়রা সবাই ‘আবু পিঠা’ নামেই তাকে চিনে।

মোহাম্মদ আলী মিয়া নামের আরেকজন বলেন, গ্রামে শীত নেমেছে। শীত আসার পর থেকে পিঠা বিক্রি শুরু হয়েছে। আমার পছন্দের ভাপা পিঠা। এক সময় মায়ের হাতে বানানো পিঠা খেয়েছি। এখন এখানে খাই।

আকবর আলী খান বলেন, প্রতিদিন কাজ শেষে বাসায় ফেরার সময় চোখে পড়ে এ শীতের পিঠা। শীতে পিঠার লোভ কে সামলাতে পারে? তাই প্রতিদিন পিঠা খেতে এখানে আসি।

পিঠা খেতে আসা শাহ আলম নামের এক পথচারী বলেন, নতুন ধানের ভাপা পিঠা খেয়ে অনেক ভালো লাগছে। ধানের পিঠার আগাম স্বাদ পেলাম।

কাজিরহাট বাজারের ব্যবসায়ী সুজন কাজী বলেন, আমি প্রতিদিনই সন্ধ্যার পর এ দোকান থেকে পিঠা খাই। আগে যদিও বাড়িতে পিঠা বানানোর হিড়িক পড়তো কিন্তু এখন সে উৎসবের আমেজ আর দেখা যায় না।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

জবি শিক্ষার্থীদের বিশেষ বৃত্তি, যেভাবে করতে হবে আবেদন

ডিএনসিসি এলাকায় টাইফয়েডের টিকা পাবে ১৩ লাখ শিশু

শহিদুল আলমের আটকের প্রচারিত ছবির বিস্তারিত জানা গেল

ডেঙ্গু জ্বরে জবির সাবেক শিক্ষার্থী সানজিদার মৃত্যু

সার ডিলার নিয়োগ নীতিমালা পেছানোর দাবি

প্রতি বছর ১ ফুট হারে তলিয়ে যাচ্ছে যে শহর

ঘুমন্ত স্বামীর গায়ে ফুটন্ত তেল ঢেলে মরিচ গুঁড়া মাখিয়ে দিলেন স্ত্রী

ধর্ষণের অভিযোগ করার পর অভিযোগকারীকেই মাদক মামলায় গ্রেপ্তার

আ.লীগে যোগ দেওয়া রফিকুল এবার ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি পদপ্রার্থী

শহিদুলের ভিডিওবার্তা নিয়ে যে তথ্য দিল বাংলাফ্যাক্ট

১০

মাঝ সমুদ্রে ভাসতে থাকা ২৬ জেলেকে উদ্ধার

১১

কেন শুধু জাতীয় দলের হয়েই খেলতে চাইলেন রোনালদো?

১২

যে শহরে দিনে ২ ঘণ্টার বেশি স্মার্টফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ!

১৩

খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে নিয়ে লালুর বক্তব্য ব্যক্তিগত : বিএনপি

১৪

নির্বাচন কমিশনকে দেওয়া শাপলার ৭ নমুনা প্রকাশ এনসিপির

১৫

লন্ডনে টাওয়ার হ্যামলেটসের মেয়রের সঙ্গে বাসস চেয়ারম্যানের মতবিনিময় 

১৬

ডিআরইউ বর্ষসেরা রিপোর্টের জন্য পুরস্কার দেবে নগদ

১৭

হৃদয়-মিরাজে ভর করে বাংলাদেশের লড়াই

১৮

শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়ি ভাড়া নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত

১৯

ওমানে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় ৭ বাংলাদেশি নিহত

২০
X