দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার সিংড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাজ্জাদ হোসেন ও পাঁচ চিকিৎসকসহ ৯ জনকে মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িত থাকায় গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মো. সাজ্জাদ হোসেন, ডা. ফয়সাল আহমেদ রাসেল, ডা. রায়হানুল ইসলাম সোহান, বকুল রায় শ্রাবণ, মো. আবদুল হাফিজ ওরফে হাপ্পু, ডা. সোহানুর রহমান সোহান, ডা. তৌফিকুল হাসান রকি, ডা. ফয়সাল আলম বাদশা এবং ডা. ইবরার আলম। তাদের কাছ থেকে ৯টি মোবাইল ফোন, ২টি ল্যাপটপ, বিভিন্ন ব্যাংকের চেক ও চেকবই, ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড উদ্ধার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান সিআইডির অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) আজাদ রহমান।
তিনি বলেন, মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের মামলায় অব্যাহত অভিযানের অংশ হিসেবে গত সোমবার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত দিনাজপুর, নীলফামারী ও ঢাকায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় চক্রের গুরুত্বপূর্ণ হোতা দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার ৩নং সিংড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাজ্জাদ হোসেন, নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার বিটস কোচিংয়ের পরিচালক আবদুল হাফিজ ওরফে হাপ্পু এবং ৫ চিকিৎসকসহ ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা মেডিকেল প্রশ্নফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়ে বিজ্ঞ আদালতে ১৬৪ ধারায় দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে। গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে চক্রের অন্যান্য সদস্য ও অসাধু উপায়ে বিভিন্ন মেডিকেল কলেজে ভর্তি হওয়া অসংখ্য শিক্ষার্থীর নাম পাওয়া গেছে।
তিনি আরও বলেন, এর আগে এ চক্রের মাস্টারমাইন্ড জসিম উদ্দিন ভূঁইয়া মুন্নুর কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া গোপন ডায়েরি থেকে সারা দেশে ছড়িয়ে থাকা চক্রের সদস্যদের সন্ধান পায় সিআইডি। এ সংক্রান্তে সিআইডির প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আলী মিয়া একটি সংবাদ সম্মেলন করেন এবং প্রশ্নফাঁসের সঙ্গে জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনার বিষয়ে দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। এরই ধারাবাহিকতায় ঢাকা, দিনাজপুর এবং নীলফামারীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে মেডিকেল প্রশ্নফাঁস চক্রের অন্যতম মূল হোতা সাজ্জাদ হোসেনসহ আরও ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডির এ কর্মকর্তা বলেন, গ্রেপ্তারকৃত সাজ্জাদ হোসেন দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার ৩নং সিংড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান। ২০১০ সাল থেকে তিনি প্রশ্নফাঁস চক্রের সঙ্গে জড়িত। চক্রটির মাস্টার মাইন্ড জসিমের গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী সাজ্জাদ ২০১৭ সালের মেডিকেল প্রশ্নফাঁসের অন্য আরেকটি মামলারও এজাহারভুক্ত আসামি। সাজ্জাদ উত্তরবঙ্গের অনেক শিক্ষার্থীকে অনৈতিক উপায়ে মেডিকেলে ভর্তি করিয়ে কোটি টাকার উপরে আয় করেছেন।
মন্তব্য করুন