রাজশাহীর তিন উপজেলায় চারটি ভোটকেন্দ্রে অগ্নিসংযোগ করেছে দুর্বৃত্তরা। আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচারণার শেষ দিন বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) দিবাগত রাতে বাঘা, বাগমারা ও মোহনপুর উপজেলায় এ ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে বাগমারার ভোটকেন্দ্রটি থেকে দুটি তাজা ককটেল উদ্ধার করেছে পুলিশ।
আগুন দেওয়া ভোটকেন্দ্রগুলো হলো- বাঘা উপজেলার জুতনশি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আড়ানী ঝিনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মোহনপুরের মতিহার উচ্চ বিদ্যালয় ও বাগমারার আক্কেলপুর উচ্চ বিদ্যালয়। বাঘার ভোটকেন্দ্রের অফিস কক্ষে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে হতে আগুন লাগতে পারে বলে ধারণা করছে পুলিশ। তবে অন্য তিনটি ভোটকেন্দ্রে দুর্বৃত্তরা আগুন দিয়েছে বলে পুলিশ নিশ্চিত করেছে।
মোহনপুরের মতিহার উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মজিবর রহমান জানান, তাদের স্কুলটি ভোটকেন্দ্র। বৃহস্পতিবার রাতে দুর্বৃত্তরা স্কুলের একটি শ্রেণিকক্ষে আগুন দেয়। এতে কয়েকটি বেঞ্চ ও চেয়ার-টেবিল পুড়ে গেছে। শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) সকালে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অরবিন্দ সরকার জানান, বাগমারার আক্কেলপুর উচ্চ বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। পরে স্থানীয়রা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে তেমন কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। এই ভোটকেন্দ্রের সামনে দুটি তাজা ককটেল পাওয়া গেছে।
এদিকে বাঘা থানার ওসি আমিনুল ইসলাম জানান, উপজেলার জুতনশি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনের পরিত্যক্ত ভবনে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এটি মূল ভোটকেন্দ্রের বাইরের অংশ। এই আগুনের ফলে ভোটকেন্দ্রের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। এ ছাড়া আড়ানী ঝিনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রের প্রধান শিক্ষকের অফিসে আগুন লেগেছে। এতে কিছু বই ও আসবাবপত্র পুড়ে গেছে। ধারণা করা হচ্ছে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিটের কারণে এই স্কুলে আগুন ধরেছে।
রাজশাহী জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘কোন স্কুলে কীভাবে আগুন লেগেছে তার তদন্ত শুরু হয়েছে। তদন্তের পর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে’।
এর আগে, বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজশাহীর তানোর উপজেলার সদর পৌরসভা এলাকার গোল্লাপাড়া মাঠে রাজশাহী-৩ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম রব্বানীর (কাঁচি প্রতীক) জনসভা ছিল। নির্বাচনী জনসভা চলাকালীন একটি দোকানের পাশে একটি বোতলে আইইডি (উন্নত বিস্ফোরক ডিভাইস) সদৃশ সার্কিট পাওয়া যায়। পরে র্যাব-৫ এর একটি অপারেশনাল দল সার্কিট লাগানো ওই বস্তুটিকে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে গোল্লাপাড়া বাজারের কাছে থাকা ফাঁকা মাঠে নিয়ে যায়। পরে রাত সাড়ে ৮টার দিকে সেখানে সেটি নিষ্ক্রিয় করে বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট।
এ বিষয়ে গোদাগাড়ী সার্কেল সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) সোহেল রানা বলেন, ককটেল সাদৃশ্য বস্তু পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকার খবর পেয়ে তানোর থানা পুলিশ ঘিরে রাখে। পরে র্যাবের বোম্ব ডিস্পোজাল ইউনিট এসে নিষ্ক্রিয় করে। বিষয়টি নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
মন্তব্য করুন