শহীদ অ্যাডভোকেট আব্দুর রব সেরনিয়াবাত আইন মহাবিদ্যালয়ে (বরিশাল ’ল কলেজ) হামলা-ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে কলেজটির কথিত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। এ সময় তারা ’ল কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি, অধ্যক্ষ এবং অধ্যাপকসহ তিন ছাত্রকে মারধরসহ লাঞ্ছিত করে।
মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় নগরীর হাসপাতাল রোডে ‘ল’ কলেজ ক্যাম্পাসে এ ঘটনা ঘটে। হামলার শিকার কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি আনোয়ার হোসাইন মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও সাবেক মেয়র সাদিক আবদুল্লাহর অনুসারী।
এ ঘটনায় ক্যাম্পাসজুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনার পর পরই মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি একেএম জাহাঙ্গীর, সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ, সহসভাপতি গাজী নঈমুল হোসেন লিটুসহ অন্যান্য নেতারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। তাছাড়া পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ঘটনাস্থলে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ঘটনায় আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের কথা জানিয়েছেন, ‘ল’ কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি আনোয়ার হোসাইন।
হামলা এবং মারধরের শিকার ‘ল’ কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ও বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আনোয়ার হোসাইন বলেন, ‘আমি কলেজের অভ্যন্তরে বসা ছিলাম। এ সময় ছাত্রলীগ নামধারী আরিফ হোসেন অপুর নেতৃত্বে ছাত্রদল নেতা আজিমসহ ৩০-৪০ জন যুবক কলেজে প্রবেশ করে। তখন অপুসহ ৪-৫ জন টেনেহিঁচড়ে আমার জামার কলার ধরে এক পাশে নিয়ে মারধর করে।
তারা আমাকে বলে, ‘কলেজ কমিটির সবাই সাদিক অনুসারী, তাই এখন থেকে আপনাদের কোনো সিদ্ধান্তে কলেজ চলবে না। আমাদের কথামতো কলেজ পরিচালিত হবে। আপনারা আজ থেকে বিদায় হবেন। সাদিক অনুসারীরা এলাকায় থাকতে পারবে না।’
এ সময় অধ্যক্ষের কক্ষে সাদিক আবদুল্লার ছবি টাঙানো থাকায় কলেজে ভাঙচুর এবং অধ্যক্ষ মোস্তফা জামাল খোকন, অধ্যাপক আ.স.ম জসিম উদ্দিনকেও তারা মারধর এবং লাঞ্ছিত করে। পরে ক্লাস রুমে ঢুকে তিন শিক্ষার্থীকে মারধর করে রক্তাক্ত করেছে।
বরিশাল ‘ল’ কলেজ অধ্যক্ষ মোস্তফা জামান খোকন বলেন, ‘অধ্যাপক জসিম স্যারকে ক্লাস থেকে বের করে মারধর করেছে। আহত তিন শিক্ষার্থীর মধ্যে ইব্রাহিম সুমনসহ দুজনকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ সময় বেশ কয়েকটি মোবাইল খোয়া গেছে। এ ঘটনায় যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন তিনি।
বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি আরিচুল হক বলেন, খবর পেয়ে পুলিশের একাধিক টিম ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। এ বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়েছেন। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বরিশাল সিটির সাবেক মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ বলেন, ‘বিষয়গুলো জানলাম। পুলিশকেও জানিয়েছি। আমরা মহানগর আওয়ামী লীগ বসে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।
হামলার কারণ প্রসঙ্গে সাদিক আবদুল্লাহ বলেন, ‘মাত্র ঘটনা ঘটল। পরে বিস্তারিত বলা যাবে।’
তবে এ বিষয়ে অভিযুক্তদের বক্তব্য জানতে তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কাউকে পাওয়া যায়নি।
মন্তব্য করুন