আব্দুর রশিদ, হরিপুর (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১১ জানুয়ারি ২০২৪, ০৯:৪২ এএম
অনলাইন সংস্করণ

বিলুপ্তির পথে হরিপুরে রাজা গণেশের নিদর্শন

ভাতুরিয়া ইউনিয়নে গড়ভবানীপুরে অবস্থিত রাজা গণেশের ত্বন্নীদিঘী পুকুর। ছবি : কালবেলা
ভাতুরিয়া ইউনিয়নে গড়ভবানীপুরে অবস্থিত রাজা গণেশের ত্বন্নীদিঘী পুকুর। ছবি : কালবেলা

ঠাকুরগাঁয়ের হরিপুর উপজেলায় ভাতুরিয়া ইউনিয়নে গড়ভবানীপুরে অবস্থিত চব্বিশ পরগনা জেলার ভাতুরিয়া রাজা গনেশের বসতভিটা, গড়, পুকুর ও দুটি নদ এসকল নিদর্শনসমূহ সংরক্ষণের অভাবে দিনদিন প্রায় বিলুপ্তির পথে। তার শাসনকাল ছিল ১৪১৪ খ্রি. থেকে ১৪১৫ খ্রি. পর্যন্ত। পরে রাজা গণেশের পুত্র দুদু মিয়া ওরফে জালাল উদ্দিনের হস্তক্ষেপে চব্বিশ পরগনায় ইসলাম ধর্ম প্রচার ও সম্প্রসারণ ঘটে। ঠাকুরগাঁও জেলা থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরত্বে হরিপুর উপজেলার অবস্থান।

এই উপজেলা থেকে প্রায় ৭ কিলোমিটার দূরত্বে ভাতুরিয়া রাজা গণেশের ঐতিহ্য ও নিদর্শনসমূহ। এখান থেকে মাত্র ২-৩ কিলোমিটার দূরত্বে ভারত সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়া। তার শাসন আমল থেকে এখন পর্যন্ত ৬০৮ বছর অতিবাহিত হতে চলছে। অথচ এ সময়ের মধ্যে সরকারিভাবে রাজা গনেশের বসতভিটা, গড়, পুকুর ও নদের সংস্কার বা রক্ষণাবেক্ষণের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। শুধু ইতিহাসের পাতার মধ্যেই এর সীমাবদ্ধতা রয়েছে। সীমান্তবর্তী এলাকায় এর অবস্থান হওয়ার কারণে এখানে সরকারের দৃষ্টি তেমন পড়ছে না।

প্রায় ৫০ একর জমিতে রয়েছে রাজা গণেশের বাড়ি, নদ ও পুকুর। কালের বিবর্তনের ফলে তার বাড়ির ভিটারও অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া দুষ্কর হয়ে পড়েছে। এখানে একটি বিশাল গড় রয়েছে। এতে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির বনজ, ফলজ ও ঔষধি গাছ ও নিদর্শন। গড়ের গাছগুলো এলাকার প্রভাবশালীরা প্রশাসনকে তোয়াক্কা না করেই প্রতিনিয়ত কেটে কেটে বিক্রয় করে উজার করে দিচ্ছে। রাজা গণেশের বাড়ির দুপাশে দুটি নদ ছিল। এ নদের উৎপত্তি ছিল কুলিক নদী থেকে, সেগুলো ভরাট হয়ে গেছে। এ নদ দুটি সংস্কার করে পূণজ্জীবিত করলে কৃষি খাতে ব্যাপক সাফল্য ঘটবে।

গড়ের পাশে রয়েছে ত্বন্নীদিঘী নামে ১০ একরের একটি বিশাল পুকুর। পুকুরটির চতুর পাশে ৭৫ ফিট প্রস্ত বিশিষ্ট মাটির প্রাচীর দ্বারা ঘেরা ছিল। সংস্কারের অভাবে শুষ্ক মৌসুমে পুকুরে পানি থাকে না। এই পুকুরের চতুর পাশ দিয়ে রাজা ঘোড়া দৌড়ের প্রশিক্ষণ দিত বলে জানা গেছে। পুকুরের মধ্যে এক অংশে অলৌকিক একটি বিশাল শাল কাঠের খুঁটি এখনও বিদ্যামান রয়েছে এর পিছনে অনেক অলৌকিক ঘটনা। পুকুরের পূর্ব পাড়ে রয়েছে একটি পীরের মাজার আছে। ১৯৯০ সালে ওই পুকুর পাড়ে ৩৮টি পরিবার নিয়ে একটি গুচ্ছগ্রাম তৈরি করে সরকার। এ সময় থেকে উক্ত পুকুরটি তাদের দখলেই রয়েছে।

৬নং ভাতুরিয়া ইউপি চেয়ারম্যান শাজাহান আলী বলেন, রাজা গনেশের ইতিহাস আমরা পাঠ্যবইতে পড়েছি। পড়ে জানতে পারি আমাদের এই গ্রামে তার বাড়ি, এটা আমাদের সবারই গর্ব। রাজা গণেশের প্রাচীনতম ইতিহাস তার বাড়ি ও গড়সহ সব কিছুই রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব সরকারের। এখানে অনেক মহামূল্যবান সম্পদ থাকার কথা। কিন্তু এ সকল বিষয়ের দেখভালের কেউ না থাকায় দিন দিন বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। আগামী নতুন প্রজন্ম শুধু মুখেই শুনবে কিন্তু বাস্তবে তার চিহ্ন খুঁজে পাবে না।

তিনি আরও বলেন, রাজা গণেশের কারণে আমরা ইতিহাসে পরিচিত হয়েছি। তার নিদর্শনগুলো সংরক্ষণ করা দরকার। এটি একটি পর্যটন কেন্দ্র হতে পারে, এতে সরকারের রাজস্ব আয় বাড়বে। এলাকার সর্বস্তরের মানুষ এগুলো রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সরকারের সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বায়ুদূষণের শীর্ষে জাকার্তা, ঢাকার খবর কী?

টিভিতে আজকের খেলা

চক্ষু বিশেষজ্ঞ বিভাগে নিয়োগ দিচ্ছে রেড ক্রিসেন্ট

দিনাজপুরে প্রজন্ম লীগ নেতা তৈবুর গ্রেপ্তার

ইতালি যাওয়ার এক দিন পরই বাংলাদেশির মৃত্যু

আখেরি চাহার সোম্বা আজ, সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি

সেলস ম্যানেজার পদে স্কয়ার গ্রুপে চাকরির সুযোগ

ফজর নামাজের সময় মসজিদে নারকীয় তাণ্ডব, নিহত ২৭

দুপুরের মধ্যে ৭ জেলায় হতে পারে বজ্রবৃষ্টি

২০ আগস্ট : কী ঘটেছিল ইতিহাসের এই দিনে

১০

ঢাকার যেসব এলাকায় আজ মার্কেট বন্ধ 

১১

হাসপাতালে ভর্তি মির্জা ফখরুল

১২

২০ আগস্ট : আজকের নামাজের সময়সূচি

১৩

সৌদিগামী যাত্রীদের জন্য সুখবর

১৪

এমবাপ্পের একমাত্র গোলে রিয়ালের কষ্টার্জিত জয়

১৫

ম্যানসিটি ছাড়ছেন আর্জেন্টিনার ‘নতুন মেসি’

১৬

‘৫১ লাখ টাকার স্টেডিয়াম ১৪ কোটিতে করার অনুমোদন’, কী ব্যাখ্যা দিলেন সচিব

১৭

জনপ্রিয় ব্রিটিশ পত্রিকায় বাংলাদেশ নারী দলের প্রশংসা

১৮

ইউআরপি ও ডিএলআর মডিউল প্রস্তুত / মালয়েশিয়ায় শ্রমিক যাবে শূন্য অভিবাসন ব্যয়ে

১৯

রাশিয়া শক্তিশালী, এটা মেনে নিতেই হবে : ট্রাম্প

২০
X