কনকনে ঠান্ডায় উত্তরের জেলা জয়পুরহাটে জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে। এ অঞ্চলে এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে সূর্যের দেখা মিলছিল না। শুক্র ও শনিবার (১৯ ও ২০ জানুয়ারি) দুপুরে সূর্যের দেখা মিললেও ছিল না তেমন তাপ। তবু মানুষের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে। এদিকে প্রচণ্ড শীতে খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ এবং ছিন্নমূল মানুষ চরম কষ্টে পড়েছেন। কৃষি জমিতে কাজ করতে যেতে পারছেন না কৃষক ও দিনমজুররা।
ক্ষেতলালের মহব্বতপুর গ্রামের প্রান্তিক কৃষক আফজাল হোসেন বলেন, প্রচণ্ড ঠান্ডায় মাঠে কাজ করার মতো অবস্থা নেই। ঠান্ডা আর কনকনে বাসাতে গা কাঁপুনি ধরে আসে। বেশিক্ষণ জমিতে থাকায় যায় না। ঠান্ডায় ফসলেরও ক্ষতি হচ্ছে।
‘পেটের দায়ে সকালেই রিকশা নিয়ে শহরে আসতে হয়। ঠান্ডায় শহরে মানুষ কম। আয়-রোজগারও কমে গেছে। পেট তো আর চলে না। শীতের সময় শীত হয়। কিন্তু ১০-১২ দিন ধরে একইভাবে এত শীত আগে দেখিনি। শীতের আগে ৪০০-৪৫০ টাকা আয় হতো। এখন ২৫০-৩০০ টাকাও কামাই নেই। জিনিসপত্রের যে দাম, সংসার চলবে কীভাবে’- ৫৫ বছর বয়সী রিকশাচালক আমিনুর রহমান এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন। জয়পুরহাটের সদর উপজেলার টুটুপাড়া গ্রামের রিকসা চালক আমিনুর রহমান আরও বলেন, শীতের কারণে সকাল সকাল রিকশা নিয়ে শহরে আসা যায় না। আসতে আসতে বেলা ১০টা বাজে। আবার সাঁজ লাগতে লাগতে বাড়ি যাই। ঠান্ডায় থাকা যায় না।
এদিকে জয়পুরহাট জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুল করিম মুঠোফোনে জানান, জেলার পাঁচটি উপজেলা ও পৌর এলাকায় এ পর্যন্ত ২৬ হাজার ৭২০ টি কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। ৩ হাজার ৭০০ দুস্থ পরিবারকে ২০ কেজি করে চাল এবং ৫০০ পরিবারে প্যাকেটজাত খাবার বণ্টন করা হয়েছে।
এদিকে প্রচন্ড শীতের রেলওয়ের হকার্স মার্কেটের দোকানগুলোতে শীতবস্ত্র কিনতে সাধারণ মানুষের ভিড় লেগে আছে। দামও বেড়েছে পাল্লা দিয়ে। শনিবার (২০ জানুয়ারি) রেলওয়ে হকার্স মার্কেটে শীত নিবারণের জন্য সোয়েটার কিনেন জামালপুর গ্রামের মনোয়ারা বেগম। তিনি বলেন, এ সোয়েটার আগে ১০০-১৫০ টাকা দাম ছিল। শীতে তাকে ২০০ টাকায় কিনতে হলো। ছেলের জন্য আরেকটি কিনেছেন ১৮০ টাকা দিয়ে।
জয়পুরহাট জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গত বেশ কয়েক দিন ধরে ১০-১১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে তাপমাত্রা ওঠানামা করছে। বর্তমানে ঠান্ডার অনুভূতি কমলেও তা আবার বাড়তে পারে।
মন্তব্য করুন