দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে তিন দিনের ব্যবধানে খুচরা বাজারে চালের দাম প্রকারভেদে কেজিতে দুই থেকে তিন টাকা কমেছে। গত সপ্তাহে আকস্মিকভাবে সব প্রকার চালের দাম কেজিতে ৫ থেকে ৭ টাকা বেড়ে যায়।
এদিকে হঠাৎ চালের দাম বাড়ায় বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) থেকে দেশব্যাপী মজুতবিরোধী অভিযানের পাশাপাশি দিনাজপুরেও অভিযানে নেমেছিল খাদ্য বিভাগ। অভিযানের সুফল হিসেবে শনিবার (২০ জানুয়ারি) থেকে চালের বাজারে দাম কমতে শুরু করেছে। তবে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।
তাদের ভাষ্য, যে পরিমাণ চালের দাম বেড়েছিল কমেছে তার অর্ধেকেরও কম। একইসঙ্গে বস্তাপ্রতি ধানের দামও কমেছে ২৫০-৪৫০ টাকা।
শহরের সবচেয়ে বড় চালের বাজার নিমতলা এলাকার বাজার ঘুরে দেখা যায়, রোববার (২১ জানুয়ারি) মিনিকেট চাল ৫৫ টাকায়, ব্রি-২৯ চাল প্রতিকেজি ৫৩ টাকা থেকে কমে ৫১ টাকায়, গুটি স্বর্ণ প্রতিকেজি ৫০ টাকা থেকে কমে ৪৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে চাল কিনতে আসা পৌর এলাকার কাঁটাবাড়ী গ্রামের আব্দুস সালাম বলেন, মানুষ বলছে চালের দাম কমেছে, কিন্তু কোথায় কমেছে! ৫০ টাকার চাল ৪৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এটাকে কি দাম কম বলে?
ফুলবাড়ী পৌর বাজারের চালের খুচরা ব্যবসায়ী জয় প্রকাশ গুপ্ত বলেন, চালের খুচরা ব্যবসায়ীরা স্থানীয় মিলার অথবা পাইকারদের কাছ থেকে চাল নিয়ে খুচরা বাজারে বিক্রি করে থাকেন। কেনা দাম থেকে সামান্য লাভ ধরে খুচরা বাজারে বিক্রি করতে হয়। মিলার ও পাইকাররা দাম বাড়িয়ে দেওয়ায় খুচরা বাজারেও এর প্রভাব পড়ে। দাম কিছুটা বেড়েছিল। তবে এখন খুচরা বাজারে দাম কিছুটা কমে এসেছে।
চালের পাইকার ব্যবসায়ী ওয়াহেদ মন্ডল বলেন, কর্পোরেটদের কাছে চালের বাজার জিম্মি হয়ে পড়েছে। তারা ইচ্ছা মাফিক চালের দাম বাড়িয়ে দেওয়ায় খুচরা ও পাইকারি বাজারেও দাম বেড়ে যায়। কর্পোরেটরা ইচ্ছানুযায়ী ধান মজুদ করতে পারেন, কিন্তু অন্যরা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ধান গুদামে রাখতে পারেন। এমন নিয়মনীতির জন্য ইচ্ছানুযায়ী তারা ধান মজুদ করে রাখছেন। ফলে বাজারে ধান ও চালেরও সংকট সৃষ্টি হচ্ছে। তবে বর্তমানে প্রতিবস্তা সবধরনের চাল ২৫ কেজির বস্তায় ১০০ টাকা কমে এসেছে।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মঈন উদ্দিন বলেন, হঠাৎ চালের দাম বেড়ে যাওয়ায় খাদ্য বিভাগ থেকে বিষয়টি খতিয়ে হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মীর মো. আল কামাহ তমাল বলেন, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মজুতবিরোধী অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে, যাতে কেউ ধান ও চালের মজুত করে বাজারে চালের সংকট সৃষ্টির মধ্যেমে মুনাফা লুটতে না পারে।
মন্তব্য করুন