বুকভরা আশা নিয়ে কৃষকরা ফলান নানা শস্য। শুধু নিজের চাহিদা পূরণ নয়, অন্যের খাদ্যের জোগানদাতাও তারা। যদিও প্রকৃতির খামখেয়ালিপনায় অনিশ্চয়তা রয়েছে কৃষিতে। কিন্তু তবুও থেমে থাকেন না কিষাণ-কিষাণিরা। কিন্তু গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে অসময়ে ভাঙনে কৃষকদের সেই আশায় গুড়েবালি দিয়েছে সর্বনাশা তিস্তা। ভেঙে বিলীন করে দিয়েছে প্রায় ৩০ বিঘা ভুট্টাক্ষেত। ক্ষেতের শস্য ও চাষযোগ্য জমি ভাঙনের কবলে পড়ে এখন পাগলপ্রায় এসব কৃষক। গবাদিপশুকে কেটে খাওয়াচ্ছে মোচাধরা ভুট্টা।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র বলছে, উপজেলায় এবার গম, মসুর, সরিষা, আলু, ভুট্টা, তিল, তিশি, পেঁয়াজ, রসুনসহ নানা ধরনের রবিশস্য চাষ হয়েছে। অন্যান্য এলাকা ছাড়াও তারাপুর, বেলকা, হরিপুর, কাপাসিয়া ও চন্ডিপুর ইউনিয়নের চরগুলোতেও করা হয়েছে ভুট্টার আবাদ। আর ভুট্টায় প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে ১ হাজার একশ জন কৃষককে।
কাপাসিয়া ইউনিয়নের উজান বুড়াইল চরের দূরত্ব উপজেলা সদর থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার। মাঝখানে পাড়ি দিতে হয় দুটো নদী। জানা যায়, বছর পাঁচেক আগে তিস্তার বুকে জেগে ওঠা দুর্গম ওই চরে ফলছে এখন ভুট্টাসহ নানা শস্য। মোচা ধরেছে পুরো গাছে। দুমাস পরেই কৃষকদের ঘরে উঠত ফসল। কিন্তু সেই স্বপ্ন আর পূরণ হলো না তাদের। দুমাস ধরে ভেঙে তছনছ করছে সেই ফসলি মাঠ। তিস্তার ভাঙনে এরমধ্যেই নদীতে ভেসে গেছে জহুরুল, লিটন, নুরনবী ও রফিকুল ইসলামসহ বেশ কয়েকজন কৃষকের প্রায় ৩০ বিঘা জমির ভুট্টাক্ষেত। বিঘা প্রতি খরচ হয়েছে প্রায় ২০ হাজার টাকা। উপায়ান্তর না পেয়ে মোচাধরা ভুট্টাই কেটে গবাদিপশুকে খাওয়াচ্ছে তারা।
তাদের ভাষ্য, সবমিলিয়ে বিঘায় খরচ হয়েছে কুড়ি হাজার টাকা। ভালো হয়েছিল ভুট্টা। মোচাও এসেছিল। আশা ছিল, বিঘায় ফলন হতো ৫২-৫৫ মণ। তিস্তায় ভেঙে এখন সব শেষ। ঋণ শোধ কিংবা পুঁজি করব কী দিয়ে?
তিস্তার ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. রাশীদুল কবির কালবেলাকে বলেন, তাদের একটি তালিকা প্রস্তুত করা হবে এবং বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষিতে পুনর্বাসনের জন্য যতটুকু পারা যায় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন