কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্তে বিভিন্ন পয়েন্টে সকাল থেকে দমদমিয়ার নাফ নদ সীমান্তে বিজিবির তিনটি স্পিড বোটের টহল অব্যাহত রয়েছে। সীমান্ত দিয়ে দুষ্কৃতকারী ও রোহিঙ্গা যাতে অনুপ্রবেশ করতে না পারে সেজন্য সর্বোচ্চ পাহারায় রয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। ইতিমধ্যে ১৩৭ জনকে প্রতিহত করা হয়েছে বলে বিজিবি সূত্রে জানা গেছে।
সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সকালে টেকনাফের দমদমিয়ায় নাফ নদী সীমান্তে স্পিডবোট দিয়ে জালিয়ার দ্বীপসহ নাফনদে টহল বাড়িয়েছে বিজিবি।
গত কয়েকদিন ধরে মিয়ানমারের রাখাইনে গোলাগুলি ও সংঘর্ষ বেড়ে যাওয়ার কারণে বাংলাদেশ সীমান্তের নাফ নদ ও স্থলে এ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। বাড়ানো হয়েছে অতিরিক্ত বিজিবি সদস্য। সকাল থেকে অন্তত তিনটি স্পিডবোট নাফ নদে টহলে রয়েছে। এছাড়াও রয়েছে অতিরিক্ত টহল।
রোহিঙ্গার অনুপ্রবেশ ঠেকানো হচ্ছে জানিয়ে টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (বিজিবি-২) অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. মহিউদ্দীন আহমেদ বলেন, নাফ নদ অতিক্রম করে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিকদের পাশাপাশি কোনো দুষ্কৃতকারী যাতে টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশ করতে না পারে, সে জন্য অতিরিক্ত বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। সকাল থেকে দমদমিয়ার নাফ নদ সীমান্তে বিজিবির তিনটি স্পিড বোটের টহল অব্যাহত রয়েছে।
বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে লোকজন অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালাচ্ছে, কিন্তু নতুন করে কাউকে ঢুকতে দিচ্ছি না। সোমবার পর্যন্ত ১৩৭ জনকে প্রতিহত করা হয়েছে। অন্য দিনের তুলনায় এ দিন সীমান্ত শান্ত ছিল।
অন্যদিকে রোহিঙ্গা অধ্যুষিত মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে আরাকান আর্মির চলমান তুমুল লড়াই ও গোলাগুলির শব্দে গত ৪ থেকে ৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সেনাসহ ৩৩০ জন বিজিপি সদস্য বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। তাদের ফেরত যাওয়ার বিষয়ে এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।
এদিকে, সীমান্তে সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতিতে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র অন্যত্র সরানো হয়েছে। পার্শ্ববতী উত্তর ঘুমধুমের দুটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কেন্দ্র স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন।
এছাড়া কক্সবাজারে উখিয়ার বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে অস্ত্রসহ অনুপ্রবেশকারী ২৩ রোহিঙ্গার মধ্যে ২২ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
অপরদিকে, অন্যান্য দিনের মতো সীমান্তে গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়নি। ফলে অনেকটা স্বস্তির মধ্যে সীমান্তবাসী।
টেকনাফে হোয়াইক্যং উলুবুনিয়া সীমান্তের মো. ইদ্রিস বলেন, গত দুই তিন ধরে মিয়ানমারের সীমান্তে ব্যাপক গোলাগুলি। সীমান্তে আমরা আতঙ্কে ছিলাম, আজকে কিন্তু ভোর থেকে কোনো গোলাগুলি হয়নি ও গুলির শব্দ পায়নি আমরা। তবে যে কোনো মুহূর্তে পরিস্থিতি ঘোলাটে হওয়ার আশঙ্কায় রয়েছেন। তাই স্বস্তি ফিরলেও আতঙ্ক কাটছে না ওদের। তবে বরাবরের মতো টেকনাফের হ্নীলা, নয়াপাড়া শাহপরীর দ্বীপ সীমান্তেও পরিস্থিতি ভালো ও স্বাভাবিক রয়েছে। তবে বিজিবি সদস্যরা সর্বোচ্চ পাহারা জোরদার করায় অনেকটা স্বস্তির মধ্যে সীমান্তের জনগণ।
মন্তব্য করুন