কুমিল্লা ব্যুরো
প্রকাশ : ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৪:৪৭ পিএম
আপডেট : ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:২২ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

আবারও সংরক্ষিত আসনে দলীয় মনোনয়ন পেলেন আরমা দত্ত

আরমা দত্ত। ছবি : সংগৃহীত
আরমা দত্ত। ছবি : সংগৃহীত

দ্বাদশ জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনে কুমিল্লা থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন আরমা দত্ত। ১৪ ফেব্রুয়ারি বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের চূড়ান্ত ৪৮ জন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

আরমা দত্ত ভাষাসৈনিক, বাংলা ভাষার অন্যতম রূপকার ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের নাতনি। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন।

কুমিল্লায় পৈতৃক বাড়িতে ১৯৫০ সালের ২০ জুলাই জন্মগ্রহণ করেন আরমা দত্ত। বাবা সঞ্জীব দত্ত ছিলেন পাকিস্তান অবজারভার পত্রিকার সাংবাদিক। মা প্রতীতি দেবী বিখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক ঋত্বিক ঘটকের জমজ বোন। ১৯৭১ সালে দাদা ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত আর একমাত্র চাচা দিলীপ দত্ত দুজনেই পাকবাহিনীর হাতে শহীদ হন।

পারিবারিক জীবনে অনেক ঘাত- প্রতিঘাত সামলিয়েছেন তিনি। আরমা দত্তকে তার অনেক স্বজনরা ‘বুয়া দি’ বলে ডাকেন।

আরমা দত্ত কুমিল্লা শহরের একটি আমেরিকান কনভেন্ট স্কুলে লেখাপড়ার হাতেখড়ি নিয়েছেন। মাত্র সাড়ে তিন বছর বয়সে তিনি ওই স্কুলে ভর্তি হন। দাদা যুক্তফ্রন্টের মন্ত্রী হওয়ার পর তিনি বাংলা মাধ্যমে কিছুদিন ঢাকার ভিকারুন্নেসা স্কুলে লেখাপড়া করেন। ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত চেয়েছিলেন বাংলা মাধ্যমে পড়াশোনা করে আরমা প্রকৃত বাঙালি হবেন। কিন্তু পরে ইংরেজি পড়ায় তার আগ্রহ দেখে আবার পাঠান কুমিল্লার কনভেন্টে। ১৯৬৬ সালে কুমিল্লা নওয়াব ফয়জুন্নেসা স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাস করেছেন তিনি। যা বর্তমানে মেয়েদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে কুমিল্লা জেলার সেরা সরকারি বিদ্যালয় হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছে।

১৯৬৮ সালে কুমিল্লা মহিলা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন আরমা দত্ত। আরমা দত্ত সে বছরই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজ বিজ্ঞান বিভাগে অনার্সে ভর্তি হন। ১৯৭৪ সালে স্নাতকোত্তর পাস করেন তিনি।

আরমা দত্তের কর্মজীবন শুরু হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা দিয়ে। দেড় বছরের মতো শিক্ষকতা করেন তিনি। কিন্তু ১৯৭৫ সালে সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর দেশের রাজনৈতিক পট-পরিবর্তন তাকে চরমভাবে ব্যথিত করে। তিনি চলে যান কানাডায় স্বামীর কাছে। কিন্তু কানাডার আইনে পোষ্য হিসেবে কোনো কাজ পাওয়া তার জন্য জটিল হয়ে পড়েছিল। ১৯৮০ এর গোড়ার দিকে তিনি আবার বাংলাদেশে চলে আসেন। কিন্তু দেশের রাজনৈতিক পরিবেশ তার কাছে তখনো অস্থিতিশীল মনে হয়েছিল। ফিরে শিক্ষক হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও আর যোগ দেননি তিনি।

এ অবস্থায় তিনি ‘ইউএসএআইডি’-তে প্রোগ্রাম স্পেশালিস্ট হিসেবে যোগ দেন। দুই বছরের মতো সেখানে ছিলেন। তারপর ১৯৮৩ সালে যোগ দেন নরওয়েজিয়ান এইড নোরাডে। সেখানে তার পেশাগত উন্নয়ন ঘটে। ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত তিনি নোরাডে ছিলেন। এরপর ১৯৮৯ সালেই প্রিপ ট্রাস্টে যোগ দেন আরমা দত্ত। প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তুলেছিলেন ডেভিড পি করটেন। পরে আরমা দত্তই প্রিপ ট্রাস্টের হাল ধরেন। বর্তমানে তিনি প্রিপ ট্রাস্টের নির্বাহী পরিচালক।

অবদান ও স্বীকৃতি

১৯৭০ সালের নির্বাচনের পর স্বাধীনতা সংগ্রাম যখন প্রবল আকার ধারণ করল তখন আরমা দত্ত দিনরাত সাংগঠনিক কাজ করতেন। ২০০১ সালে রাজনীতিতে শক্তিশালী ভূমিকা রাখে তার প্রতিষ্ঠান ‘প্রিপ ট্রাস্ট’। এনজিওদের প্রাতিষ্ঠানিক শক্তি বাড়ানোর জন্যও কাজ করেছেন তিনি। নারী জাগরণে অবদানের কারণে ২০১৬ সালে তিনি বেগম রোকেয়া পদক লাভ করেন।

আরমা দত্ত একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি কন্দ্রীয় কার্যকরী কমিটির একজন প্রভাবশালী সদস্য। তার মা প্রতীতি দেবী নির্মূল কমিটির অন্যতম একজন প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

কনটেন্ট ক্রিয়েটর আল-আমিনের সর্বশেষ অবস্থা

বিজয়ের মাস উদযাপনে ঢাবি প্রশাসনের উদাসীনতার অভিযোগ জাতীয় ছাত্রশক্তির

গুজবে কান না দিয়ে খালেদা জিয়ার সুস্থতায় দোয়া করুন : ইশরাক

শেরপুর জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি মনি গ্রেপ্তার

খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় ফরিদপুরে কর্মসূচি

এখনো ‘ট্রাভেল পাস’ চাননি তারেক রহমান : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

রাবির তিন শিক্ষক বরখাস্ত, ছাত্রত্ব বাতিল দুই শিক্ষার্থীর

‘চশমা’ প্রতীকে নির্বাচন করবে আট দলের শরিক জাগপা

মানুষের অধিকারের প্রশ্নে খালেদা জিয়া সব সময় আপসহীন : মাসুদুজ্জামান

খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় সৌদি আরব পশ্চিমাঞ্চল বিএনপির ওমরাহ পালন

১০

সেঞ্চুরিও বাঁচাতে পারল না ভারতকে, সমতায় সিরিজ

১১

মাদকাসক্ত ছেলের আগুনে পুড়ল বসতঘর

১২

খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় হাসপাতালে চীনের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দল

১৩

মাদ্রাসাছাত্রের রহস্যজনক মৃত্যু

১৪

শরীয়তপুরে খালেদা জিয়ার আরোগ্য কামনায় মিলাদ ও দোয়া

১৫

পে-স্কেল নিয়ে সরকারি কর্মচারীদের যে দাবি

১৬

সন্তানহারা মা কুকুরটিকে দেওয়া হলো দুটি নতুন ছানা

১৭

সালাউদ্দিনের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেনি বিসিবি, থাকছেন জাতীয় দলের সাথেই

১৮

সনাতনী ধর্মাবলম্বীদের অধিকার রক্ষার অঙ্গীকার কাজী আলাউদ্দিনের

১৯

স্কুলে ভর্তিতে বয়সসীমা নিয়ে নতুন নির্দেশনা

২০
X