আগামী উপজেলা নির্বাচনে আ.লীগের একক প্রার্থী নির্বাচন করতে বিশেষ ভোটের আয়োজন করে জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলা আ.লীগ। সেই ভোটেও প্রকাশ্যে সিল দিচ্ছেন বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান এবং উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুর রহমান বেলালের লোকজন।
এমনই এক ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ছড়িয়ে পড়া এক মিনিট তিন সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, ভোটারের কাছ থেকে ব্যালট নিয়ে নিজেরাই ভোট দিচ্ছে বেলালের লোকজন। এমনই দাবি করেছেন অন্য উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীরা।
ভোটের (উপজেলা নির্বাচন) আগেই এমন ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় তৃণমূল নেতাকর্মীদের মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে।
জানা গেছে, শনিবার (৯ মার্চ) সকালে উপজেলার এফএম সিনিয়র মাদ্রাসা মাঠে বিশেষ বর্ধিত সভার আয়োজন করে উপজেলা আ.লীগ। সভা শেষে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আ.লীগের একক প্রার্থী নির্বাচন করতে ভোটের আয়োজন করা হয়।
হঠাৎ এমন আয়োজনের ঘোষণা শুনে উপজেলা চেয়ারম্যান পদের একাধিক প্রার্থী ভোট আয়োজনে অংশ নিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে সেখান থেকে চলে যান। উপজেলা আ.লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন বাদল ভোটে অংশ নেন।
কিন্তু যখন দেখা যায়, বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ওবায়দুর রহমান বেলালের লোকজন ভোটারদের কাছ থেকে ব্যালট নিয়ে যাচ্ছে তখন তিনিও ভোট বয়কট করেন।
ভোটারের কাছ থেকে ব্যালট নিয়ে ভোট দেওয়ার সেই ভিডিও মোশাররফ হোসেন বাদল নিজেও ফেসবুকে পোস্ট করেন।
জানা গেছে, উপজেলা পরিষদে চেয়ারম্যান পদে লড়তে চান জামালপুর জেলা আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল্লাহ আল-আমীন চান, জেলা আ.লীগের সদস্য দৌলতুজ্জামান দুলাল হাজী, মাদারগঞ্জ উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক বর্তমান চেয়ারম্যান ওবায়দুর রহমান বেলাল, দুই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রায়হান রহমতুল্লাহ রিমু ও মোশাররফ হোসেন বাদল, উপজেলা আ.লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক জয়নাল আবেদীন আয়না এবং শ্রমবিষয়ক সম্পাদক ফরিদুল ইসলাম।
সাতজন প্রার্থীর ছয়জনই ভোট বয়কট করেন। ভোট শেষে ওবায়দুর রহমান বেলালকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জয়নাল আবেদীন আয়না বলেন, কেন্দ্রীয় আ.লীগের সিদ্ধান্তের পরিপন্থি এবং অবৈধ ভোট আয়োজন করায় আমরা তা বর্জন করেছি।
উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী রায়হান রহমতুল্লাহ রিমু বলেন, আগে থেকেই কাউকে না জানিয়ে অবৈধ ভোট আয়োজন বয়কট করেছি। মাদারগঞ্জ উপজেলার তৃণমূল নেতাকর্মীরা এই অবৈধ ভোট আয়োজন বয়কট করেছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা ভোট থেকে সরে দাঁড়ালেও মোশাররফ হোসেন বাদল ভোটে থাকেন। যখন দেখা যায়, সব ভোট মেরে নিচ্ছে বর্তমান চেয়ারম্যানের লোকজন তখন তিনিও সরে দাঁড়ান।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে মাদারগঞ্জ উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান ওবায়দুর রহমান বেলাল বলেন, একজন প্রার্থী বাদে সবাই ভোট থেকে সরে দাঁড়ান। তারা তৃণমূলের নির্বাচন চায়নি। তারা তাদের পক্ষে ঘোষণা চেয়েছিলেন। নিয়ম মেনে ভোট হয়েছে এবং কোনো অনিয়ম হয়নি।
মন্তব্য করুন