রমজানে বেগুন চাষ করে মাথায় হাত নরসিংদীর কৃষকদের। এবার বেগুনের ফলন ভালো হলেও আশানুরূপ দাম পাচ্ছেন না কৃষকরা। বিক্রির পর উৎপাদন খরচ উঠা তো দূরের কথা বেগুন নিয়ে বাজারে যাওয়া গাড়ি-ভাড়াও উঠছে না। এমতাবস্থায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন বেগুন চাষিরা। বেগুন বিক্রি করতে হচ্ছে ৮ থেকে ১০ টাকা কেজি দরে। কোথাও আবার ৫ টাকা কেজি দরেও বেগুন বিক্রি হচ্ছে।
শুক্রবার (২২ মার্চ) ও শনিবার (২৩ মার্চ) জেলার বিভিন্ন হাটবাজার ঘুরে দেখা গেছে, কৃষক মাঠ থেকে বেগুন নিয়ে বাজারে আসছে ঠিকই, কেউ বেগুনের দামও জিজ্ঞাসা করছেনা। তাছাড়া বাজারে এত বেগুন উঠেছে চাহিদার চেয়েও অনেক বেশি। বেগুন পাইকারী বিক্রি হচ্ছে ৫ টাকা কেজি এবং খুচরা ১০-১২ টাকা কেজি দরে।
কয়েক বছরের মধ্যে এ বছর সবচেয়ে খারাপ সময় পার করছেন বেগুন চাষিরা। মানে ভালো, দেখতে সুন্দর বেগুন উৎপাদন করেও ন্যায্য দামের অর্ধেকও না পেয়ে দুশ্চিন্তার ভাঁজ এখানকার বেগুন চাষিদের কপালে। উৎপাদন ব্যয়, নিজের পরিশ্রম আর উত্তোলনের পারিশ্রমিক কোনো দিকেই পুষিয়ে উঠতে পারছেন না তারা। আর এ ক্ষোভে দুঃখে বেগুন চাষিরা জমিতে বেগুনসহ বেগুন গাছ কেটে ফেলে রেখেছেন।
চরসুবুদ্ধি বাজারের এক হোটেল মালিক আল আমিন খান জানান, সকালে বাজারে গিয়ে দেখি বেগুনের দাম অস্বাভাবিক কম। মাঝারি মানের এক বস্তা (৪০ কেজি) বেগুন কিনেছি ২৫০ টাকায়।
রায়পুরা উপজেলার মেজেরকান্দী গ্রামের বেগুন চাষি সোহেল মাহমুদ জানান, এবছর বেগুনের চারা থেকে শুরু করে কিটনাশকসহ প্রতিটি জিনিসই ডাবল দামে কিনতে হয়েছে। এ বছর বেগুন বিক্রি করে কোনো লাভ হবে না। এখন জমিতে যে বেগুন আছে সস্তার কারণে সেগুলোতে কোনো কিটনাশক প্রয়োগ করছি না, যার কারণে গাছে বেগুনগুলো পোকা ধরেছে এবং গাছেই নষ্ট হচ্ছে। জমির যত্ন একেবারেই ছেড়ে দিয়েছি।
রায়পুরা উপজেলার বাঙ্গালীনগর গ্রামের আমেনা বেগম জানান, বেগুনের এমন দামে আমার ছেলে এখন কান্না করে, যে টাকা ধার নিয়ে বেগুন করেছে, লাভ হবে তো দূরের কথা, পুজিই উঠবে না। কেউ পাঁচ টাকাও বলে না। মনের দুঃখে আমাদের জমির সকল বেগুন গাছ কেটে ফেলেছি।
মন্তব্য করুন