স্বাস্থ্যঝুঁকিকে উপেক্ষা করে অতিরিক্ত মুনাফার আশায় অন্যান্য ফসল বর্জন করে তামাক চাষ করছেন কৃষকরা। মানিকগঞ্জের হরিরামপুর এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। উপজেলার গালা ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি এলাকায় এই তামাক চাষের সন্ধান মিলেছে।
জানা যায়, বিডিসি, আকিজ টোব্যাকোসহ বিভিন্ন তামাকজাত কোম্পানির উৎসাহে এ অঞ্চলে গত কয়েক বছর ধরেই তামাক চাষ করা হচ্ছে। তামাক চাষ পূর্ববতী ও পরবর্তী সময়ে চাষিদের বিশেষ সহায়তা দিয়ে থাকে এসব বহুজাতিক কোম্পানি। তামাক চাষে বীজ ও সার ক্রয়ের জন্য নগদ টাকাসহ নানা উপকরণ সরবরাহ ও নিয়মিত তদারকিও করে থাকেন কোম্পানির প্রতিনিধিরা। এসব সুযোগ-সুবিধাসহ অধিক দাম পাওয়ায় দিনে দিনে তামাক চাষের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে তামাক চাষে জমির মাটি, পরিবেশ ও স্বাস্থ্যের জন্য কতটুকু ক্ষতিকর, সে বিষয়ে তাদের জানা নেই বলে একাধিক তামাক চাষি জানান।
সরেজমিনে উপজেলার গালা ইউনিয়নের গোয়ালবাগ গ্রামের তামাক চাষি বাদশা মিয়ার ছেলে জানান, আমরা চারা কিনে রোপণ করি। অন্যান্য ফসলের মতোই নিয়মিত তামাকের ক্ষেতগুলো পরিচর্যা করতে হয়। পাতা তোলার উপযোগী হলে পাতা সংগ্রহ করে বাঁশের কাঠি বা সুতার সঙ্গে বেঁধে ঝুলিয়ে রাখি। পাতা শুকিয়ে গেলে আঁটি বেঁধে বিক্রির জন্য প্রস্তুত করা হয়। প্রতি কেজি তামাক রং ও মান ভেদে ১১০-১৭০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়।
তবে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, তামাক ও তামাকজাত পণ্য শরীরের জন্য ক্ষতিকর এটা নতুন করে বলার কিছু নেই। তামাক থেকে জর্দা, গুল, বিড়ি, সিগারেটসহ বিভিন্ন ক্ষতিকর পণ্য তৈরি হয়। তামাক প্রক্রিয়াজাতকরণ ও ব্যবহারের ফলে মুখে ক্যান্সার, উচ্চ রক্তচাপ বৃদ্ধি হয়ে ব্রেন স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাক হওয়ার মতো ঝুঁকিও থাকে। এছাড়াও যে এলাকায় তামাক চাষ হয়, তার আশপাশের মানুষেরও শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
হরিরামপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. তৌহিদুজ্জামান খান কালবেলাকে বলেন, তামাক চাষ কৃষিজমির জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এ উপজেলায় প্রায় এক হেক্টর জমিতে তামাক চাষিরা সিগারেট কোম্পানির সহযোগিতায় সাথী ফসলের সঙ্গে অধিক মুনাফার জন্য তামাক চাষ করে। ক্ষতিকর তামাক চাষে নিরুৎসাহিত করার জন্য আমরা মাঠপর্যায়ে নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছি এবং কৃষকদের এর ক্ষতিকর দিকগুলো সম্পর্কে সচেতন করছি।
মন্তব্য করুন