কয়রা (খুলনা) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৫:৫৯ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

লবণাক্ত পতিত জমিতে রসুন চাষে কৃষকের মুখে হাসি

খুলনার কয়রায় রসুন চাষে উৎপাদন ভালো। ছবি : কালবেলা
খুলনার কয়রায় রসুন চাষে উৎপাদন ভালো। ছবি : কালবেলা

খুলনার কয়রা উপজেলার উত্তর বেদকাশী ইউনিয়ন বতুল বাজার গ্রামের রাস্তা দিয়ে গেলে যে কোনো মানুষের নজর পড়ত একটি বিরাণ চারণভূমি। সেই বিরাণভূমির ভেতরে এ বছর জেগে আছে বিনা চাষে আলু, রসুন, সূর্যমুখী ও ভুট্টার গাছ। এ জমিতে আগে কখনো কোনো চাষাবাদ হতো না। কারণ জমিতে জো আসে মধ্য জানুয়ারিতে তখন কোনো ফসল লাগানো যায় না।

জানা গেছে, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট সরেজমিন গবেষণা বিভাগ দৌলতপুর খুলনার উদ্যোগে এসিআইএআর প্রকল্পের মাধ্যমে বীজ, সার, কীটনাশক দিয়ে ডিসেম্বর মাসের ১ম সপ্তাহে বিনাচাষে ফসলগুলো লাগানোর উদ্যোগ নেয়। এখন মাঠটি পুরাপুরি সবুজ।

ওই গ্রামের কৃষক মো. আলাউদ্দীনের সঙ্গে কথা হলে তিনি কালবেলাকে বলেন, তার এই জমি খালি পড়ে থাকত। সেই জমিতে তিনি বিনাচাষে আলু, রসুন, সূর্যমুখী চাষ করেছে। সে এক বিঘা জমিতে প্রায় ২৫-৩০ মণ রসুন পাবে বলে আশা করছে। যার আনুমানিক মূল্য ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা। তার মতে অন্যকোনো ফসল চাষ করে পাওয়া সম্ভব নয়। তার দাবি আগামী বছর সে যেন আরও বেশি সহযোগিতা পেতে পারে। তার খেত দেখতে আসে প্রতিদিন অনেক কৃষক। তারাও আগামীতে এ ধরনের চাষাবাদ করবে বলে জানিয়েছে।

বতুল বাজার গ্রামের কৃষক আল মামুন সানা কালবেলাকে বলেন, তার গ্রামের অধিকাংশ বিল পতিত অবস্থায় পড়ে থাকত। যেখানে গরু ছাগলের অবাধ বিচরণ ছিল এক সময়। এখন সেই বিলে ১২ বিঘা জমিতে স্থানীয় কৃষকরা ফসল চাষ করে সফল হয়েছি। সেই সঙ্গে কৃষি গবেষণার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। তাদের সহযোগিতায় এটা করা সম্ভব হয়েছে। আগামী বছর আরও বেশি আলু, রসুনের বীজ বেশি পাই সেই দাবি জানাই।

কৃষকরা আরও জানান, কয়রায় এই প্রথম বিনা চাষে রসুন আবাদ করেছি। ধান চাষের পরে জমিগুলো ফেলানো থাকত তাই বিনা চাষে রসুন চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন চাষিরা। বিনা চাষে বোনা হলেও সার-কীটনাশক ও শ্রমিক মজুরিসহ আনুষঙ্গিক খরচ এবার বেড়েছে। এবার যদি বাজারমূল্য কম হয় তাহলে লোকসান গুণতে হবে তাদের। তবে ফলন ভালো হওয়ায় আশাবাদী তারা।

সরেজমিন কৃষি বিভাগের বৈজ্ঞানকি সহকারী মো. জাহিদ হাসান কালবেলাকে বলেন, এ বছর আমরা বিনাচাষে আলু, রসুন ও ডিবলিং পদ্ধতিতে সূর্যমুখী ও ভুট্টা চাষ করতে কৃষকদের উৎসাহিত করেছি। এর ভেতর আলু, রসুন ও সূর্যমুখী বেশি ভালো হয়েছে। কৃষকদের রোপণ করা থেকে শুরু করে সার্বক্ষণিক সেবা দিয়ে যাচ্ছি। আশা করি, তারা ভালোই লাভবান হবে।

সরেজমিন গবেষণা বিভাগের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. হারুনর রশিদ কালবেলাকে বলেন, আমরা বিনা চাষে আলু, রসুন, সূর্যমুখী, ভুট্টা চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করেছি। দক্ষিণাঞ্চলের অনেক জমি পতিত হয়ে পড়ে থাকে। সেই পতিত জমিকে চাষের আওতায় আনতে সরেজমিনে গবেষণা বিভাগ গবেষণা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে ও অব্যাহত রেখেছে। এ বছর কয়রার একজন কৃষক রসুন চাষ করে দেড় লাখ টাকা ইনকাম করেছে। এটাই আমার বড় পাওয়া। এ ধরনের ফসল উৎপাদন করতে আগামীতে এই অঞ্চলের কৃষকদেরকে আরও সহযোগিতা করা হবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আইপিএলে দল পেলেন না বাংলাদেশের কেউই

‘১০ লাখ মোবাইল ফোনের আইএমইআই নম্বর একই’

প্রতিবন্ধী নারীর ভাতার টাকা যায় আ.লীগ নেতার পকেটে

নির্বাচন করবেন কি না জানালেন প্রেস সচিব

আবারও পেছাল বিপিএল

যে গ্রামে শত বছর ধরে টিকে আছে শাঁখারি শিল্প

শয়তানের নিশ্বাস ছড়িয়ে ধর্ষণ

স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে ইয়াবা পাচারকালে ধরা

মগবাজারে বহুতল ভবনে আগুন

ফজলুর রহমানের বাসার সামনে ককটেল বিস্ফোরণ

১০

কয়েক কোটি টাকা নিয়ে ব্যাংক কর্মকর্তা উধাও

১১

হংকংয়ে অগ্নিকাণ্ডে মৃত্যু বেড়ে ৭৫

১২

হৃদয়ের একার লড়াইয়ের পরও বাংলাদেশের বড় পরাজয়

১৩

সিমিউই-৬ সাবমেরিন কেবল প্রকল্পে নতুন পিডি জাকিরুল আলম 

১৪

প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার সম্ভাব্য সময় জানা গেল

১৫

ভোটকেন্দ্র বাতিলের দাবিতে সড়কে মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা

১৬

ভূমিকম্পে জনমনের আতঙ্ক নিরসন ও মঙ্গল কামনায় প্রার্থনা সভা

১৭

সরাসরি চুক্তিতে সিলেট যোগ দিলেন তারকা পেসার

১৮

কড়াইল বস্তিতে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য বিএনপির দুই দিনব্যাপী হেলথ ক্যাম্প

১৯

৩১ দফা বাস্তবায়নে যুবসমাজকে এগিয়ে আসার আহ্বান আমিনুল হকের

২০
X